মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ছবি সংগ্রহ
ব্যাঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী
‘কোভিডোত্তর ২০-২১ এপ্রিল, ২০২২ এ পশ্চিমবঙ্গে আয়োজিত এ গ্লোবাল বিজনেস সামিট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ এ বিজনেস সামিটে পার্টনার কান্ট্রি। এ সন্মেলনে টাটা , আদানি, উইপ্রো, হিন্দুস্তান ইউনিলিভারসহ ভারতের উল্লেখযোগ্য প্রায় সকল বৃহৎ বিজনেস প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করছে’
বিশেষ প্রতিনিধি
করোনা অতিমারির কারণে দুই বছর বন্ধ ছিলো আয়োজনের কপাট। এবারে দু’বছর পর পশ্চিমবঙ্গে শুরু হলো দু’দিনের বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট। কলকাতার নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে বুধবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই আয়োজনে বাংলাদেশে তরফে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি অংশ গ্রহণ করেন। বলেন, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সামাজিক-সাংস্কৃতিক অবিন্নতার পাশাপাশি বাণিজ্যেও মাথা উচু করা সম্ভাবনা রয়েছে। কোলকাতায় অনুষ্ঠিত ইবহমধষ এষড়নধষ ইঁংরহবংং ঝঁসসরঃ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি একতা বলেন। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অভিন্নতা যেমন রয়েছে, তেমনি বাংলা প্রাগ্রসর চিন্তা-চেতনার ধারক হিসেবে একসময় সমগ্র ভারত বর্ষের সমীহের স্থলে অভিষিক্ত ছিলো। বর্তমান বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ এই গৌরবের উত্তরাধিকার।
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রসর হচ্ছে এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সমাদৃত হচ্ছে।
বুধবার কোলকাতায় শুরু হওয়া ব্যাঙ্গল-গ্লোবাল বিজনেস সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা তুলে ধরেন টিপু মুনশি। পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর জগদ্বীপ ধংকর এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। করোনাকালে সাত দশমিক এক জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকে তিনি সাধুবাদ জানাচ্ছি।
টিপু মুনশি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের পরিমান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীগণ ভারতে বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগে আগ্রহী। সাম্প্রতিককালে সরকার বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীগণ কর্তৃক বিদেশে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করেছে।
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এর ফলে বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীগণ আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকাসহ এশিয়ার দেশগুলোতে বিনিয়োগ করতে পারছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আগ্রহ রয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাংলাদেশের দশ সদস্যের সরকারি প্রতিনিধিদল এবং বিশ সদস্যের বিজিনেস ডেলিগেশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিল্পপতিদের কাছে বাংলা আজ চাহিদার জায়গা হয়ে উঠছে। কারণ পূর্ব ভারতে বাংলার অবস্থান এমন জায়গায়, যে কারণে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলির শিল্পক্ষেত্রে সর্বাধিক সুবিধা হবে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসব দেশের সর্বোচ্চ দূরত্ব আধা ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা। সে কারণে আমরা বলছি—‘বেঙ্গল ইস দ্য গেটওয়ে অব বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, সাউথ-ইস্ট অ্যান্ড নর্থ-ইস্ট এশিয়া’। ফলে বাংলায় বিনিয়োগ মানেই এখান থেকেই এতগুলো দেশে সহজে ব্যবসা প্রসার করতে পারবে ইন্ড্রাস্ট্রিগুলো।
এর আগে মঙ্গলবার বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে সাক্ষাত করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্ভাবনা সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং এক নৈশভোজে অংশ নেন। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রকের এক সংবাদ বার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কোভিডোত্তর ২০-২১ এপ্রিল, ২০২২ এ পশ্চিমবঙ্গে আয়োজিত এ গ্লোবাল বিজনেস সামিট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ এ বিজনেস সামিটে পার্টনার কান্ট্রি। এ সন্মেলনে টাটা , আদানি, উইপ্রো, হিন্দুস্তান ইউনিলিভারসহ ভারতের উল্লেখযোগ্য প্রায় সকল বৃহৎ বিজনেস প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করছে। বিটুবি এবং বিটুজি অংশীদারিত্ব ও বিনিয়োগের পথে এটি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আয়োজক কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।
উল্লেখ্য, প্রায় চল্লিশটি দেশ হতে সরকারি ও বিজনেস ডেলিগেট দুইদিন ব্যাপী এ গ্লোবাল বিজিনেস সামিটে অংশ গ্রহন করছেন।