১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর বর্ণাঢ্য আয়োজন শিল্পকলা একাডেমীর
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা
রাত পোহালেই শুরু পর্দা ওঠবে বাংলাদেশের শিল্পকলার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আসরের। এটি ১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী। বাংলাদেশসহ দেশ-বিদেশের ৪৯৩জন শিল্প অংশ নিয়েছেন। যার মধ্যে বাংলাদেশের ১৪৯ এবং ৩৪৪ জন বিদেশি শিল্পী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাসব্যাপী প্রদর্শনীর বর্ণাঢ্য উদ্বোধান করবেন।

শিল্পকর্মের পাশে চারুকলা বিভাগের পরিচালক মিনি করিম
শিল্পকলা একাডেমীর চত্বরে পা রাখতেই দেখা গেল মহাকর্মযজ্ঞ চলছে। কারো কথা বলার ফুসরত নেই। সময় তাড়া করে ফিরছে। আন্তর্জাতিক শিল্পী-অতিথিদের সমন্বয়ে বিশ্ব-মর্যাদার এই মাসব্যাপী আয়োজনে কোথাও কমতির রাখার সুযোগ নেই। আয়োজন কতটা বর্ণাঢ্য হতে পারে তার স্বাক্ষর রেখে চলেছে শিল্পকলা একাডেমি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। বিগত ৪০ বছরের ইতিহাস ধারণ করে এশিয়ার সর্ববৃহৎ শিল্পযজ্ঞ এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল আয়োজন করে আসছে। এটি এখন আর এশিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্বের শিল্পীদের জন্য উন্মুক্ত। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ও অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সরব করে রেখেছে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
প্রদর্শনীতে ৯টি পুরষ্কার রয়েছে। তিনজন শিল্পীর প্রতিজনকে গোল্ড মেডেল, পাঁচলাখ করে টাকা এবং সার্টিফিকেট। বাকী ছ’জনকে তিন লাখ করে টাকা, ক্রেস্ট ও মেডেল দেওয়া হবে। সাক্ষাতকারে প্রদর্শনীর সবিস্তার তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর চারুকলা বিভাগের ডিরেক্টর মিনি করিম।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগ সূচনালগ্ন থেকে চারুকলা বিষয়ক বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী, দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী, জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী, নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী, জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী, জাতীয় আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে।
প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে ঢাকা আসা কোরিয়ার এক শিল্পী জানালেন, বাংলাদেশের এই সমৃদ্ধ আয়োজনের সঙ্গে তিনি পরিচিতি হতে পেরে গর্বিত। চারুকলার এতো বড় আসর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, বাংলাদেশে না আসলে বিশ্বাসই করতে পারতেন না।
প্রদর্শনী ঘিরে রয়েছে মাসব্যাপী প্রদর্শনী, আন্তর্জাতিক সেমিনার, নৌভ্রমণ, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানসমূহ পরিদর্শন, আর্টক্যাম্প, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যেখানে অংশগ্রহণ করে থাকেন বিদেশি অতিথিগণ।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত আয়োজনে বিশ্বের ৬৮টি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে বিশ্বের ১০০টি দেশকে নিয়ে এই আয়োজনটি করার স্বপ্নছিল আমাদের সকলের। আনন্দের সাথে জানাচ্ছি আমাদের স্বপ্নপূরণ হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে প্রদর্শনীর জাতীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।