ঢাকা ১২:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে যাবে বিএজেপি: রফিকুল আমীন নিবন্ধন পেতে রোববার ইসিতে আবেদন করবে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি যোগব্যায়াম দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আত্মীয়তার স্থায়ী বন্ধন ইরানের সমর্থনে তেহরান-বাগদাদ-বৈরুতের রাজপথে মানবঢল ইরানে হামলা: ইসরায়েলকে দিয়ে নোংরা কাজ করাচ্ছেন ট্রাম্প ইরান ইস্যুতে হস্তক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি, যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি রাশিয়ার মব ভায়োলেন্স বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি সেনাবাহিনীর  শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস কবিতা: বর্ষা ঢুকেছে দেশে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চলানো নিয়ে ট্রাম্পের জরুরি বৈঠক ইউনূস-তারেক লন্ডন বৈঠক, রাজনীতে সুবাতাস

৭১-এ বধ্যভূমি থেকে কুড়িয়ে আনা সুন্দরীবালার গর্বিত পিতা এরশাদ

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৯:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫ ১২৬ বার পড়া হয়েছে

এক মানবিক পিতা এরশাদ আলী মোড়লের গল্প

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

১৯৭১ সালের ২০ মে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একসাথে ১০ হাজার নর-নারী এবং শিশুকে হত্যা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলসামস বাহিনী

জীবন্ত অসাম্প্রদায়িক ইতিকথা
চুকনগর জেনোসাইড
মানবিক পিতা, গল্প নহে সত্য!
ধর্ম মানুষ কে মানবতা শিখায়, হিংসা নহে!

এক মহান পিতা ১৯৭১ সালের ২১ মে চুকনগরের লাশের স্তূপ থেকে বুকে তুলে নেন পাকি বংশদের বর্বরতায় সদ্য অনাথ এক  মাস ছয়েকের  দুগ্ধপোষ্য কন্যাশিশুকে!

নিজ বাড়িতে আজান, নামাজ কোরান পড়ার পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুটিকে পূজা অর্চনার মাধ্যমে তার পারিবারিক রীতিতে মানবতার ঝান্ডা উড়িয়ে বড়ো করে বিয়ে দিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বী পাত্রের সাথে।

একাত্তরের ২০ মে বাড়িতে নিয়ে আদর, যত্ন, ভালোবাসায় পিতৃস্নেহে বড়ো করে বিয়ে দিলেন অচেনা সেই অনাথ শিশুকে।
সনাতন ধর্মের সাথে মিল রেখে নাম রেখেছিলেন রাজকুমারী সুন্দরীবালা।

বাড়ির কোণে ঠাকুরঘর তৈরি করে উঠোনে তুলসী গাছ রেখে পূজো আর্চনা গীতা পাঠ শিখিয়ে বড়ো করেছেন। একই ঘরে আযান এবং উলু ধ্বনি একাকার হয়ে যায়।

রাজকুমারী সুন্দরীবালা বেড়ে উঠবার পর সনাতন সম্প্রদায়ের পাত্রের কাছে তার বিয়ে দেন কৃষক এরশাদ আলী মোড়ল।

১৯৭১ সালের ২০ মে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একসাথে ১০ হাজার নর-নারী এবং শিশুকে হত্যা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলসামস বাহিনী।

একাত্তরের বর্বরতম এ গণহত্যা সংঘটিত হয় খুলনা জেলার চুকনগর গ্রামে ভদ্রা নদীর পাড়ে।

চুকনগরের প্রতিটি নারী-পুরুষকে একটি মন্দিরের সামনে এনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাযজ্ঞের একদিন পর লাশের পাহাড়ে পিতাকে খুঁজতে আসেন কৃষক এরশাদ আলী মোড়ল।

২১ মে ১০ হাজার নারী-পুরুষের রক্তাক্ত লাশের স্তুপ ঘেঁটে নিহত পিতার লাশ না পেয়ে শোকস্তব্ধ এরশাদ আলী চলে আসবার উদ্যোগ নিতেই শিশুর কান্নার শুনে থমকে যান।

তাকিয়ে দেখলেন, নিহত এক মহিলার বুকের উপর হামাগুড়ি দিয়ে একটি ক্ষুধার্ত শিশু আকুল হয়ে দুধ খুঁজছে!

পিতৃস্নেহে আর্দ্র হৃদয়ে শিশুটিকে কোলে তুলে নিহত মহিলার দিকে তাকিয়ে দেখলেন মহিলাটির হাতে সাদা শাঁখা মাথায় রক্তরাঙা সিঁদুর।

মহান এই বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।  ফেসবুক থেকে

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

৭১-এ বধ্যভূমি থেকে কুড়িয়ে আনা সুন্দরীবালার গর্বিত পিতা এরশাদ

আপডেট সময় : ০৯:৪৯:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

১৯৭১ সালের ২০ মে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একসাথে ১০ হাজার নর-নারী এবং শিশুকে হত্যা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলসামস বাহিনী

জীবন্ত অসাম্প্রদায়িক ইতিকথা
চুকনগর জেনোসাইড
মানবিক পিতা, গল্প নহে সত্য!
ধর্ম মানুষ কে মানবতা শিখায়, হিংসা নহে!

এক মহান পিতা ১৯৭১ সালের ২১ মে চুকনগরের লাশের স্তূপ থেকে বুকে তুলে নেন পাকি বংশদের বর্বরতায় সদ্য অনাথ এক  মাস ছয়েকের  দুগ্ধপোষ্য কন্যাশিশুকে!

নিজ বাড়িতে আজান, নামাজ কোরান পড়ার পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুটিকে পূজা অর্চনার মাধ্যমে তার পারিবারিক রীতিতে মানবতার ঝান্ডা উড়িয়ে বড়ো করে বিয়ে দিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বী পাত্রের সাথে।

একাত্তরের ২০ মে বাড়িতে নিয়ে আদর, যত্ন, ভালোবাসায় পিতৃস্নেহে বড়ো করে বিয়ে দিলেন অচেনা সেই অনাথ শিশুকে।
সনাতন ধর্মের সাথে মিল রেখে নাম রেখেছিলেন রাজকুমারী সুন্দরীবালা।

বাড়ির কোণে ঠাকুরঘর তৈরি করে উঠোনে তুলসী গাছ রেখে পূজো আর্চনা গীতা পাঠ শিখিয়ে বড়ো করেছেন। একই ঘরে আযান এবং উলু ধ্বনি একাকার হয়ে যায়।

রাজকুমারী সুন্দরীবালা বেড়ে উঠবার পর সনাতন সম্প্রদায়ের পাত্রের কাছে তার বিয়ে দেন কৃষক এরশাদ আলী মোড়ল।

১৯৭১ সালের ২০ মে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একসাথে ১০ হাজার নর-নারী এবং শিশুকে হত্যা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলসামস বাহিনী।

একাত্তরের বর্বরতম এ গণহত্যা সংঘটিত হয় খুলনা জেলার চুকনগর গ্রামে ভদ্রা নদীর পাড়ে।

চুকনগরের প্রতিটি নারী-পুরুষকে একটি মন্দিরের সামনে এনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাযজ্ঞের একদিন পর লাশের পাহাড়ে পিতাকে খুঁজতে আসেন কৃষক এরশাদ আলী মোড়ল।

২১ মে ১০ হাজার নারী-পুরুষের রক্তাক্ত লাশের স্তুপ ঘেঁটে নিহত পিতার লাশ না পেয়ে শোকস্তব্ধ এরশাদ আলী চলে আসবার উদ্যোগ নিতেই শিশুর কান্নার শুনে থমকে যান।

তাকিয়ে দেখলেন, নিহত এক মহিলার বুকের উপর হামাগুড়ি দিয়ে একটি ক্ষুধার্ত শিশু আকুল হয়ে দুধ খুঁজছে!

পিতৃস্নেহে আর্দ্র হৃদয়ে শিশুটিকে কোলে তুলে নিহত মহিলার দিকে তাকিয়ে দেখলেন মহিলাটির হাতে সাদা শাঁখা মাথায় রক্তরাঙা সিঁদুর।

মহান এই বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।  ফেসবুক থেকে