হেফাজতে ইসলাম দেশে ফেৎনা সৃষ্টিকারী ফাসেকের দল
- আপডেট সময় : ০৯:৫১:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১ ১৮৫ বার পড়া হয়েছে
হেফাজতের বিবৃতির প্রতিবাদে ৫১জন আলেম-ওলামার বিবৃতি : এদের হাতে আমাদের শান্তির ধর্ম ইসলাম নিরাপদ নয়’
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
‘হেফাজত ইসলাম’ ফেতনা সৃষ্টিকারী ফাসেকের দল আখ্যায়িত করে বিবৃতির দিয়েছেন, ৫১জন আলেম-ওলামা। হেফাজতের বিবৃতির প্রতিবাদে ৫১জন আলেম-ওলামার বিবৃতি বলেন, এদের হাতে আমাদের শান্তির ধর্ম ইসলাম নিরাপদ নয়’।
বিবৃতিতে সবাইকে জানাই পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। মহান আল্লাহর দরবারে লাখো শুকরিয়া আমাদেরকে আরো একটি পবিত্র মাস ইবাদত বন্দেগিতে কাটানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। আসুন আমরা এ পবিত্র মাসে মহামারী করোনা থেকে বিশ্ববাসীকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে আরো বেশি করে ফরিয়াদ জানাই।
আপনারা জানেন, গতকাল (শুক্রবার) দেশের বেশকিছু পত্রিকায় আলেম সমাজের নামে স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে বিবৃতিটি হলো ‘হেফাজতে ইসলামের’ বর্তমানে নেতৃত্বের একটি বিবৃতি। বিবৃতিটি মিথ্যা ও বানোয়াট নানা ধরনের অভিযোগযুক্ত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
বিবৃতিটির মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং তাদের (হেফাজতে ইসলাম) বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বের বিভিন্ন অপকর্ম এবং দেশ ও ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যেভাবে দেশের জনগণ ও আলেম-ওলামারা ফুসে উঠেছে তা আড়াল করা।
দেশবাসী আপনারা জানেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গত মার্চ মাসে আমাদের বন্ধু ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে ইসলাম রক্ষার নামে হেফাজতে ইসলাম ২৫-২৮ মার্চ পর্যন্ত দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল।
হেফাজতের বর্তমান নেতৃত্ব মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ শিক্ষকদের ভুল প্ররোচনার মাধ্যমে তাদের ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর, সরকারি অফিস-আদালত, ভূমি অফিস, পুলিশ, স্টেশন, বিদ্যুৎ অফিস, শিশুদের বিদ্যালয়, সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত যানবাহনে আগুন দিয়েছিল।
তারা সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়েছিল যে আগুনের তাণ্ডব থেকে আমাদের পবিত্র কোরআন শরীফও রক্ষা পায়নি। এরা মূলত ইসলামের শত্রু। মুখে ইসলামের কথা বলে, ধর্মের দোহাই দিয়ে আসলে তারা (হেফাজতে ইসলাম) রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ব্যস্ত। আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলাম কখনোই এ ধরনের জঙ্গি কর্মকাণ্ড, ধর্মের নামে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ সমর্থন করে না ও অনুমোদন দেয়না। বরং এ ধরনের কর্মকাণ্ড প্রচন্ডভাবে ইসলাম বিরোধী।
আমাদের প্রিয় নবী রাসুল(সাঃ) তার জীবদ্দশায় ইসলাম ধর্ম, ইসলামের মর্মবাণী প্রচার করতে গিয়ে অন্য ধর্মের মানুষদের প্রতি অপমান-আঘাত, বাধার শিকার হয়েও কোনদিন তাদের বিরুদ্ধে কটুক্তি করেননি। বরং সবসময় তাদের প্রতি সহমর্মিতা, বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
কিন্তু আজকে দেশে হেফাজতে ইসলাম ধর্ম রক্ষার নামে যেভাবে অন্য ধর্মের মানুষের উপসনালয়ে, তাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে তা আমাদের রাসুলের দেখিয়ে যাওয়া পথের পরিপন্থী। সুতরাং এরা কখনোই প্রকৃত মুসলমান হতে পারে না। হেফাজতে ইসলাম হচ্ছে দেশে ফেৎনা সৃষ্টিকারী ফাসেকের দল। এদের হাতে আমাদের শান্তির ধর্ম ইসলাম নিরাপদ নয়।
প্রিয় দেশবাসী
আপনারা জানেন হেফাজতে ইসলামের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা যিনি বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার পর্দা সবসময় নীতি-নৈতিকতার বক্তব্য নিয়ে গরম করে রাখতেন তিনি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে তার স্ত্রী ব্যতীত অন্য একজন নারী রিসোর্টে সময় কাটাতে গেলে স্থানীয় জনরোষের মুখে পড়েন। পরবর্তীতে দেখা যায় তিনি তার প্রকৃত স্ত্রীর নাম দিয়ে বুকিং করে এ নারীর সাথে সেখানে যান।
তিনি উত্তেজিত জনগণের কাছে এ নারীকে নিজের স্ত্রী দাবি করলেও পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া তার প্রকৃত স্ত্রীর সাথে ফোনালাপে এ নারীকে অন্য ব্যক্তির স্ত্রী দাবি করেন। হেফাজতের বর্তমান নেতৃত্ব এ ধরনের ভণ্ড, নারীলোভী, দুশ্চরিত্র ব্যক্তির পক্ষ অবলম্বন করে বিবৃতি দেন যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়।
সুতরাং হেফাজতের এ নেতৃত্ব কিংবা যারা এ ভণ্ড নেতৃত্ব অনুসরণ করছে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তারা শুধুমাত্র ইসলামের শত্রু নয় তারা দেশ ও দশের শত্রু। এখন যখন তাদের এ সকল ভণ্ডামি দেশবাসীর কাছে উন্মোচিত হয়েছে তখন তারা এ পবিত্র রমজান মাসে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে দেশবাসীকে ইসলামের দোহাই দিয়ে, তাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য মিথ্যা বিবৃতির আশ্রয় নিয়েছে।
তাই আমরা আলেমসমাজ এ সকল ভণ্ড, ও ফেতনা সৃষ্টিকারী ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দেশের প্রতিটি মুসলমান ভাইবোনেদের সচেতন থাকার আহবান জানাচ্ছি। এবং কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাবো এসকল মতলববাজ, ভণ্ড, ও রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিদৃষ্ট আলেমদেরকে বর্জনের জন্য। যাতে তারা আপনাদের ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করতে না পারে।
দেশের আলেম-ওলামাদের পক্ষে নিম্ন স্বাক্ষরিত,
১.মাওলানা মোঃ ইসমাইল হোসাইন, ২. মাওঃ মোঃ আফলাতুল কাওছার, ৩. হাফেজ মাওঃ মোঃ জহিরুল ইসলাম খান, ৪. ডাঃ প্রফেসর আল এমরান, ৫.মাওঃ মোঃ মুফতি সাহাবুদ্দিন ভুইয়া,
৬.মাওঃ মোঃ মুহিবুল্লাহ, ৭.মাওঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা, ৮.মাওঃ মোঃ আব্দুল আজিজ, ৯.মাওঃ মোঃ মোস্তফা চৌধুরী,
১০.মাওঃ মোঃ ইলিয়াস হোসাইন, ১১.মাওঃ মোঃ এখলাছুর রহমান, ১২.মাওঃ মোঃ মাহফুজুর রহমান, ১৩.মাওঃ মোঃ নুরে আলম সরকার, ১৪.মাওঃ মোঃ শামসুল হক, ১৫.মাওঃ মোঃ আবুল খায়ের মজুমদার, ১৬.মাওঃ মোঃ নুরুল আমিন পীর সাহেব ভাঙা, ১৭.শাইখুল হাদিস মাওঃ মোঃ শাহাদাত হোসেন,
১৮.মাওঃ শাহ মোঃ ওমর ফারুক, ১৯.মাওঃ মোঃ জসিম উদ্দীন, ২০.মাওঃ মোঃ এনামুল হক সিদ্দিকী, ২১.মাওঃ মোঃ মনির হোসাইন চৌধুরী, ২২.ড. মোঃ আবু বকর ছিদ্দিক, ২৩.মাওঃ মোঃ হারুন, ২৪.মাওঃ মোঃ মোছাদ্দেক, ২৫.মাওঃ মোঃ ওসমান গনী, ২৬.মাওঃ মোঃ নুরুল ইসলাম, ২৭.মাওঃ মোঃ রেজাউল করিম, ২৮.কাজী মাওঃ মোঃ তাজুল ইসলাম,
২৯.মাওঃ হাফেজ মুহাম্মদ ফারুখ আব্দুল্লাহ, ৩০.মাওঃ মোঃ মুনজুরুল ইসলাম, ৩১.মাওঃ মোঃ জহিরুল ইসলাম, ৩২.মাওঃ মোঃ দৌলতখান, ৩৩.মাওঃ মোঃ মাহবুবুর রহমান, ৩৪.মাওঃ মোঃ আজমীর হোসাইন, ৩৫.আলহাজ্ব মোঃ হারুনুর রশিদ,
৩৬.মাওঃ মোঃ ফয়জুল্লাহ, ৩৭. এড. মনির হোসেন, ৩৮. মোসাঃ আফসানা পারভিন মনা, ৩৯. মোসাঃ জয়নব আরা ফেরদৌসী, ৪০. মোসাঃ রোকেয়া বেগম, ৪১.মোসাঃ ইসরাত জাহান লামিয়া, ৪২.মাওঃ মোঃ আব্দুল কাইউম, ৪৩.শাহ মাওঃ মোঃ আনোয়ারুল হক, ৪৪.মাওঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন ফরিদপুরী, ৪৫.মাওঃ মোঃ মিজানুর রহমান, ৪৬.মাওঃ মোঃ মিজানুর রহমান, ৪৭.মাওঃ মোঃ আলমগীর হোসেন, ৪৮.মাওঃ মোঃ ইকবাল, ৪৯.মাওঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা, ৫০.মাওঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং ৫১.মাওঃ মোঃ মিজানুর রহমান।