বিখ্যাত দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছিলেন ‘মানুষ একটি সামাজিক জীব’। আর এই কারণেই
সামাজিক সমস্ত ক্রিয়া-কর্মগুলির কেন্দ্রস্থল হলো মানুষ। বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন ও সহযোগিতা
মূলক কাজগুলির মধ্যে নিসন্দেহে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি। না
না জটিল রোগব্যাধি, বিভিন্ন দুর্ঘটনা, অস্ত্রোপচার ইত্যাদির ও চিকিৎসাগত কারণে আমাদের
শরীরে রক্তের প্রয়োজন হয়। যা তাৎক্ষণিক ভাবে আমাদের শরীর তৈরি করতে পারে না। স্বেচ্ছা
রক্তদান কর্মসূচী গুলি এই কারণেই সংগঠিত করা হয়, যাতে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজন মাফিক
মানুষের রক্তের প্রয়োজন মেটানো যায়। সঠিক সময়ে রক্ত সরবরাহ করা হলে একটি মানুষকে
সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। সেই কারণেই রক্ত দান প্রকৃত অর্থে জীবন দান এবং মহৎ
কাজ। বিভিন্ন সামাজিক ও অন্যান্য সাংস্থা গুলি রক্তদানের আয়োজন করে থাকেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ নভেম্বর হাওড়া সালকিয়ায় শিল্পোশ্রম বিদ্যালয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ
ও সালকিয়া বিজ্ঞান চক্রর যৌথ উদ্যোগে একটি রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। এই
রক্তদান কর্মসূচী আয়োজন করা হয়েছিল মাষ্টারমশাই স্বর্গীয় শ্রী নিতাই চন্দ্র বসুর স্মৃতির প্রতি
শ্রদ্ধা জানিয়ে। উনি একজন সৎ নির্ভীক মানুষ ছিলেন। সারা জীবন শিক্ষকতা করেছে গিয়েছেন।
১৯৬৫-২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি স্বামী বিবেকানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ছিলেন। এটি
ওনার নিজের হাতে প্রতিষ্ঠা করা। উনি পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের আজীবন সদস্য ছিলেন। ওনার
অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল সমাজের একদম নিম্ন স্তরের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত
করা। সেটি উনি সফলতার সঙ্গে করে গিয়েছেন। রক্তদান কর্মসূচীর অন্যতম আকর্ষণ ছিল রক্ত
দাতাদের চারাগাছ প্রদান। মোট ৫৪ জন রক্তদাতা রক্তদান করেছেন। এই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে
যুগ্মভাবে হাত বাড়িয়েছে গ্রীন সালকিয়া প্রকল্প। এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো মানুষের
মধ্যে প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতনতা প্রসার, প্রকৃতি সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ। ইতিমধ্যেই সারা মরশুম
জুড়ে সংস্থাটি এলাকার বহু জায়গায় বৃক্ষরোপণ করেছে। এর সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক-
সাংস্কৃতিক ও রক্তদানের কর্মসূচীতে কয়েক হাজার বৃক্ষ দান করেছে। সঙ্গে মানুষকে বৃক্ষরোপণ
ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এর কাজের প্রতি নিয়ত উৎসাহিত করে চলেছে।