ঢাকা ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে দেড় মিনিটের ব্যবধানে দুই দফা ভূকম্পন

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুন ২০২১ ২৭৬ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছবি সংগৃহিত

সিলেট অঞ্চলে ভুমিকম্পন বা ভুমিকম্পের ইতিহাস পুরানো। সোমবার মাত্র দেড় মিনিটের ব্যবধানে দু’দফা ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। যা কিনা নগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে পড়ে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মুমিনুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এদিন সন্ধ্যা ৬টা ২৯ মিনিটে ও ৬টা ৩০ মিনিটে দুই দফা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে সিলেট। এতে নগরের বিভিন্ন বিপণিবিতান ও আবাসিক ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাদের অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। ঢাকা থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ১৮৮ কিলোমিটার। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৮।

এটিই নতুন নয়। মাত্র আটদিনের ব্যবধান, তার মধ্যে আবারও দু’দফা ভূমিকম্প। এর আগে ৩০ মে ভোর ৪টা ৩৫ মিনিট ও শনিবার সকাল এবং দুপুরে পাঁচ দফা ভূকম্পন অনুভূত হয়। সব কটির উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট অঞ্চলে। সে সময় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ডাউকি ফল্ট।

এই অঞ্চলে অতীতে তিনবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার ইতিহাসে দেখা যায়, অভিভক্ত ভারতের তৎকালীন সিলেট অঞ্চলের কাছার এলাকায় ১৮৬৯ সালে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছিল। বড় ধরণের আরও একটি ভূমিকম্পের রেকর্ড রয়েছে ১৯২৩ সালে ময়মনসিংহের দুর্গাপুরে। এগুলোও বড় ধরনের ভূমিকম্প ছিল।

মূলত একারণে সেখানে বড় ধরনের ফাটলের সৃষ্টি হয়, যা এখনো রয়েছে। ফাটলগুলো সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। ছোট ছোট ভূমিকম্প হওয়ায় সেটি নাড়াচাড়া ওঠতে পারে না। ছোট ছোট ভূমিকম্পের কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে।
তবে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী ভাষায় ভূমিকম্পে ৯০ শতাংশ মানুষ মারা যায় ভবন ধসে পড়ে।

এর আগে দু’দিনের ৬ দফা ভূমিকম্পের পর সিলেট সিটি করপোরেশনের তরফে ঝুঁকিপূর্ণ ২৪টি ভবনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যদিকে ভূমিকম্পের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরের অভ্যন্তরে তিনটি বিপণিবিতান বন্ধ রাখা হয়েছে। ভবনগুলো শক্তিশালী করাই হবে প্রথম পদক্ষেপ।

উল্লেখ্য, জার্মানির কারিগরি ও অর্থায়নে ২০০৮ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা চিহ্নিতকরণের জরিপ চালায় ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর। সে সময় বাংলাদেশের তিনটি এলাকা ভূকম্পন প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তারমধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জোন হিসেবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু কিছু স্থানের মধ্যে সিলেট, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার উল্লেখযোগ্য। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সর্বাপেক্ষা কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত হয়।

এই জরিপের পর বাংলাদেশ সিভিল ডিফেন্স-এর তরফে ভূমিকম্প সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি চালানো হয়। ভলান্টিয়ার সৃষ্টি লক্ষ্যে সিলেট, কক্সবাজার, বান্দারবান, রাঙামাটিসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সিলেটে দেড় মিনিটের ব্যবধানে দুই দফা ভূকম্পন

আপডেট সময় : ১০:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুন ২০২১

ছবি সংগৃহিত

সিলেট অঞ্চলে ভুমিকম্পন বা ভুমিকম্পের ইতিহাস পুরানো। সোমবার মাত্র দেড় মিনিটের ব্যবধানে দু’দফা ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। যা কিনা নগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে পড়ে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মুমিনুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এদিন সন্ধ্যা ৬টা ২৯ মিনিটে ও ৬টা ৩০ মিনিটে দুই দফা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে সিলেট। এতে নগরের বিভিন্ন বিপণিবিতান ও আবাসিক ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাদের অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। ঢাকা থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ১৮৮ কিলোমিটার। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৮।

এটিই নতুন নয়। মাত্র আটদিনের ব্যবধান, তার মধ্যে আবারও দু’দফা ভূমিকম্প। এর আগে ৩০ মে ভোর ৪টা ৩৫ মিনিট ও শনিবার সকাল এবং দুপুরে পাঁচ দফা ভূকম্পন অনুভূত হয়। সব কটির উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট অঞ্চলে। সে সময় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ডাউকি ফল্ট।

এই অঞ্চলে অতীতে তিনবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার ইতিহাসে দেখা যায়, অভিভক্ত ভারতের তৎকালীন সিলেট অঞ্চলের কাছার এলাকায় ১৮৬৯ সালে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছিল। বড় ধরণের আরও একটি ভূমিকম্পের রেকর্ড রয়েছে ১৯২৩ সালে ময়মনসিংহের দুর্গাপুরে। এগুলোও বড় ধরনের ভূমিকম্প ছিল।

মূলত একারণে সেখানে বড় ধরনের ফাটলের সৃষ্টি হয়, যা এখনো রয়েছে। ফাটলগুলো সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। ছোট ছোট ভূমিকম্প হওয়ায় সেটি নাড়াচাড়া ওঠতে পারে না। ছোট ছোট ভূমিকম্পের কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে।
তবে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী ভাষায় ভূমিকম্পে ৯০ শতাংশ মানুষ মারা যায় ভবন ধসে পড়ে।

এর আগে দু’দিনের ৬ দফা ভূমিকম্পের পর সিলেট সিটি করপোরেশনের তরফে ঝুঁকিপূর্ণ ২৪টি ভবনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যদিকে ভূমিকম্পের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরের অভ্যন্তরে তিনটি বিপণিবিতান বন্ধ রাখা হয়েছে। ভবনগুলো শক্তিশালী করাই হবে প্রথম পদক্ষেপ।

উল্লেখ্য, জার্মানির কারিগরি ও অর্থায়নে ২০০৮ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা চিহ্নিতকরণের জরিপ চালায় ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর। সে সময় বাংলাদেশের তিনটি এলাকা ভূকম্পন প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তারমধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জোন হিসেবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু কিছু স্থানের মধ্যে সিলেট, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার উল্লেখযোগ্য। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সর্বাপেক্ষা কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত হয়।

এই জরিপের পর বাংলাদেশ সিভিল ডিফেন্স-এর তরফে ভূমিকম্প সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি চালানো হয়। ভলান্টিয়ার সৃষ্টি লক্ষ্যে সিলেট, কক্সবাজার, বান্দারবান, রাঙামাটিসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মশালার আয়োজন করা হয়।