শ’ ফুট ওপর থেকে সন্তানকে নদীতে ছুঁড়ে দিলেন গর্ভধারিনী মা
- আপডেট সময় : ০৮:২৯:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ এপ্রিল ২০২১ ১৮৭ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
শিশুটির বয়স মাত্র সাড়ে তিন বছর। আদরের সেই শিশুকে শ’ ফুট নীচে নদীতে ছুঁড়ে দিলেন মা। অবশ্য শিশুটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। বুধবার কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার বেরুবাড়ী ইউনিয়ন বাজারের পাশে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। অলৌকিকভাবে বেচে যাওয়া শিশু সৌমি এখন বাবা খোরশেদ খোকনের কাছে। শিশুটির মা লায়লা বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন।
এলাকার সফিকুল জানায়, বেরুবাড়ী বাজার সংলগ্ন ছড়ার পাশে তার বাড়ি। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে সে সন্তানকে নিয়ে সেখানে ঘুড়ি উড়াচ্ছিল। এসময় এক মহিলাকে সন্তানকে কোলে বেরুবাড়ী ছড়ার উপর ব্রিজে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পান।
হঠাৎ তিনি পানিতে কিছু একটা পড়ার শব্দ পেয়ে তাকিয়ে দেখেন মহিলা তার সন্তানকে ব্রিজ থেকে পানিতে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। তিনি দৌড়ে গিয়ে দ্রুত পানিতে নেমে বাচ্চাটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
চিৎকার করে আশেপাশের লোকজন ডেকে মহিলাকে আটকাতে বলেন। এলাকাবাসী মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও তার নিকট কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। শিশুটি বার বার বলেছে তার বাড়ি বালাবাড়ি। সেখান থেকে সকলেই মা ও শিশুটিকে বেরুবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে গেলে চেয়ারম্যান আব্দুল মোত্তালেব বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হন।
মহিলার নাম লায়লা বেগম (৩৬)। তিনি পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়ী উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর বালাবাড়ী গ্রামের খোরশেদ খোকন মিয়ার স্ত্রী। তাদের তিন কন্যা সন্তান। বড়টির নাম খুশি পারভীন (১৯), তার ছোট হাসি খাতুন (৯) সবার ছোটটি সৌমি খাতুন। তার বয়স ৩ বছর ৬ মাস।
পরে বাড়ীতে খবর দেওয়া হলে বিকেলে ছুটে আসেন তাদের পরিবারের লোকজন। বাবা খোরশেদ খোকনকে দেখে তার কোলে উঠে বসেন শিশু সৌমি। তাকে কোলে নিয়ে ভাষা হারিয়ে ফেলেন তিনি। তার পাশেই নির্বিকার বসে ছিলেন মানসিক বীকারগ্রস্থ লায়লা বেগম। বাবার কোলে বসেই শিশুটি পরিবারের লোকজনকে একে একে চিনিয়ে দিচ্ছেন।
এসময় খোরশেদ খোকনের ভায়রাভাই একই এলাকার গোলাম রব্বানী জানান, দ্বিতীয় কন্যা সন্তান হাসি খাতুনের জন্ম দেয়ার পর থেকে লায়লার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসায় কিছুটা উন্নতি হলেও পুরোপুরি সেরে ওঠেনি। তখন থেকেই ইচ্ছে হলে কথা বলেন। না হলে চুপচাপ থাকেন।
নাগেশ্বরী থানার এএসআই বিনয় চন্দ্র জানান, অভিযোগ না থাকায় মা ও শিশুকে তার স্বামী ও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া নাগেশ্বরী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রওশন কবীর এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।