রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকটে ১৫৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের

- আপডেট সময় : ০৯:৫১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মে ২০২১ ১৯২ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্র অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন সংগৃহীত
বাংলাদেশের আশ্রয় দেওয়া বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সংকট মোকাবিলায় নতুন করে ১৫৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সংকট মোকাবিলায় ২০২১ সালের যৌথ কার্যক্রম পরিকল্পনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা শরণার্থী, বাংলাদেশের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী, মায়ানমারে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য জরুরি সহায়তা অব্যাহত রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণা।
মি. জে ব্লিঙ্কেন বলেন, এই সহায়তা মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থেকে ভয়াবহ সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা নারী ও শিশুসহ ৯ লাখ শরণার্থীর অত্যাবশ্যকীয় চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় প্রধান দাতাদেশ হিসেবে নৃশংসতার শিকার ও সংকটাপন্ন অন্যান্য নাজুক মানুষদের জন্য সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন এ অর্থ সহায়তা নিয়ে ২০১৭ সালের মার্চে মায়ানমার সামরিক বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত সহিংসতার পর থেকে বাংলাদেশ, মায়ানমার ও এ অঞ্চলের অন্যান্য স্থানে সংকটাপন্ন মানুষদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সর্বমোট মানবিক সহায়তার পরিমাণ গিয়ে দাঁড়লো ১.৩ বিলিয়ন ডলার।
যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরিচালিত কার্যক্রমে দেওয়া ১.১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এ সংকটে ব্যাপক অর্থায়ন চাহিদা থাকার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কিছু সদস্যদেশ কর্তৃক মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে দেওয়া অর্থ সহায়তাকে আমরা স্বাগত জানান তিনি।
আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও প্রচেষ্টা নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছি এবং সেইসঙ্গে অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য অন্যান্য দেশ ও অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এ কার্যক্রমের কারণে আশ্রয়দানকারী দেশগুলোর ওপর, বিশেষত বাংলাদেশের ওপর যে ব্যয়ভার ও দায়-দায়িত্ব এসে পড়েছে সেগুলোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবগত আছে। এ অঞ্চলের যেসব দেশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে তাদের জন্য আমরা আমাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবো।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান ও বর্বরোচিত সামরিক অভিযান পরবর্তী পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আমরা আমাদের অঙ্গীকার বজায় রাখবো। আমরা জানি যে, এ অভ্যুত্থানের বহু হোতা আর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানোসহ পূর্বেকার অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনে দায়ীরা আসলে একই ব্যক্তি।
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অভ্যুত্থান ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার উদ্যোগে সহায়তা দিতে আমরা আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখবো।
আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনমত গঠন এবং তাদের ভবিষ্যৎ বিষয়ক আলোচনায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করার তাগিদ দেওয়া অব্যাহত রাখবো। তাছাড়া মায়ানমারের অভ্যন্তরে সংকটাপন্ন মানুষদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব অব্যাহত রাখবেন তারা।
শরণার্থীদের সুরক্ষায় বিশেষত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এ সময়ে তাদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেবার জন্য আমরা বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানান। জে ব্লিঙ্কেন বলেন, যেন এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হয়, যাতে তারা অন্য কোনো দেশে গিয়ে নির্যাতন বা সহিংসতার শিকার হয়।
শান্তি, নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা এবং রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের সব মানুষের মর্যাদা ত্বরান্বিত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।