দু’চোখ বন্ধ করে ধ্যানমগ্ন শিল্পী। সুরের মায়াজালে একের পর এক গান করে যাচ্ছেন। এক সময়ে নিজের অজান্তের মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে-এগানই আমার আরাধনা। একে সঙ্গী করেই পথ চলছেন জীবনের দীর্ঘ বছর।
এখনও ভোরের আলোর সঙ্গে সঙ্গে হারমুনিয়াটা ধরতে না পারলে শান্তি পান না। সুরে সুরেই সকালের ধ্যানটা করে নেন শিল্পী। এযে তার পাহাড়সম শক্তির দেওয়াল। আত্মার শান্তির চেয়ে
বিশ্বভ্রহ্মান্ডে বড় আর কি হতে পারে?
তাকে কেন্দ্র করেই তিনদিক ঘিরে বসে তালিম নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিল্পী মোলায়েম কন্ঠে তাদের প্রথমে তাদেরকে বুঝিয়ে দিয়ে তারপর সুরের বলয়ে প্রবেশ করেন। শিক্ষার্থীরা গুরুর দীক্ষায় প্রশান্তির ছোঁয়া নিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়ান।
ঘরের মধ্যে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়ানো না হলে এতো পথ কি আসা সম্ভব হতো।
আজকের আলোচনায় যিনি, তিনি বিশুদ্ধ এক বরীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী ছন্দা দত্ত। যিনি সুর নিয়েই বেচে আছেন আপনভূবনে। জানালেন, রবীন্দ্রনাথের গানই তার চাওয়া-পাওয়া এবং সাধনার শক্তি। তবে বিশুদ্ধ রবীন্দ্র সঙ্গীতের র্চ্চায় বিশ্বাসী। তার শিক্ষার্থীদেরও এই কথাটি সর্বপ্রথমে বলে থাকেন।
চন্দনগর থেকে পথ চলা। তারপর কলকতা। যেখানেই গিয়েছেন, সেখানেই গড়ে তুলেছেন রবীসুরের ঘরবসতি। রবীন্দ্র সঙ্গীতের এক নিবেদিত প্রাণ ছন্দা দত্ত। এই সুরের তরী বেয়ে চলেছেন ক্লান্তহীনভাবে। যতটাই বেয়ে চলেছেন, মনে হয়েছে সামনে আরও একটা সমৃদ্ধ দিনের দেখা মিলবে।
এই সুরের মোহ তাকে এক ভিন্ন জগতে টেনে নেয়, শক্তি যোগায়। তাই অবলীলায় বলেন, ‘রবীর সুরে সমাজের মলিনতা দূর করতে চান তিনি।
সঙ্গীতের পাশাপাশি সমাজকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গেও নিজেকে জড়িয়ে রেখেন শিল্পী। তিনি বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ, রবীন্দ্র সংগীত প্রশিক্ষিক ও সংগীত সংগ্রামী মুক্তমনা ব্যক্তি ছন্দা দত্ত।
‘রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি’ জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সংগীত শিক্ষিকা। পাশাপাশি জোড়াসাঁকো বিশ্বসাহিত্য সভা ও জোড়াসাঁকো চলমান সাহিত্য পরিষদ, কলকাতার মুখ্য সভাপতি মণ্ডলীতে যুক্ত রয়েছেন।
তিনি মনে করেন, রবীন্দ্রনাথের গান একজন মানুষকে পূর্ণতা এনে দেয়। বাঙালিকে বিশ্বদরবারে প্রথম পরিচিত করে তোলেন রবীন্দ্রনাথ। তিনিই বাঙলার সাংস্কৃতির শিকড়। আজ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তাই সুরের সাধনার মধ্য দিয়েই মনোমন্দিরে দ্বীপ জানাতে চান ছন্দা দত্ত।
আমি আপ্লুত