ভ্যাকসিনের জন্য রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

- আপডেট সময় : ০৯:২৮:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মে ২০২১ ২৩৪ বার পড়া হয়েছে
এখনও কিছু ভ্যাকসিন মজুত থাকার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ভ্যাকসিন পেতে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে চিঠিপত্র আদানপ্রদান চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন পাওয়া সম্ভবানা রয়েছে।
করোনার মহামারি সারা পৃথিবীকে নাড়া দিয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের কারণে অনেকে কষ্টে রয়েছেন। অনেকের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের পাশে দাঁড়ানো সবারই দায়িত্ব। সরকার অসহায় মানুষের সহায়তায় হাজার হাজার কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। সারাদেশে করোনা মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার। অন্যান্য মন্ত্রক ও প্রশাসন স্বাস্থ্যমন্ত্রককে সহযোগিতা করছে।
শুক্রবার নিজ নির্বাচনি এলাকা মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া এলাকায় শুভ্র সেন্টার আয়োজিত ঈদুল ফিতর এবং করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দুই হাজার দুস্থ পরিবারের মধ্যে এসব খাদ্যসহায়তা বিরতণকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা গত এক বছর ধরে করোনা মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছি। করোনা এমন একটি ভাইরাস, যা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে কিভাবে চিকিৎসা দিতে হবে তা জানা ছিল না। ধীরে ধীরে তা বুঝতে হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সরা প্রশিক্ষিত হয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের অবস্থা দেখলে গা শিউরে ওঠে। লাশের পাশে আরেক লাশ সৎকার করা হচ্ছে। একটু অক্সিজেন পাওয়ার জন্য ছোটাছুটি করছে। কিন্তু অক্সিজেন পাচ্ছে না। করোনায় আক্রান্ত মানুষের হাজারো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। করোনায় ভারতে প্রতিদিন চার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। এই অবস্থা যেন আমাদের দেশে না হয়। তা হলে আমাদের দেশের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়ে যাবে। মানুষের জীবনের ক্ষতি অর্থাৎ মৃত্যু হবে। আমারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা চিকিৎসায় দেশে মাত্র ২ হাজার শয্যা ছিল। এখন শুধু ঢাকা শহরেই আছে ৮ হাজার শয্যা। সারাদেশে শয্যা সংখ্যা ১২ থেকে ১৩ হাজার। গত এক বছরে ১৩০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেনের আওতায় এখন ১৬ হাজার শয্যা রয়েছে।
এসব শয্যায় সেন্ট্রাল অক্সিজেন দেওয়ার পরে হাইফো নেজেল ক্যানোলার মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুরুতে একটি ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু করা হয়েছি। এখন প্রায় ৪০০ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে কখনও ওষুধের অভাব হয়নি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অক্সিজেনেরও অভাব এখনও দেখা দেয়নি। দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর ভারত থেকে অক্সিজেন আনা হয়। এখন দেশে প্রতিদিন ৭০-৮০ টন অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়।
স্বাভাবিক অবস্থায় প্রয়োজন হয় ৬০ টন। দেশে প্রতিদিন ২০০ টন অক্সিজেন উৎপাদন হয়ে থাকে। অক্সিজেনের বর্তমান মজুত ৯০০ টন। এক মাসের মধ্যে আরও ৪০ টন অক্সিজেন যুক্ত হবে। করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে আগামীতে দেশে অক্সিজেনের ঘাটতি হবে না।
জাহিদ মালেক বলেন, লকডাউন দেওয়ায় করোনায় আক্রান্তের হার ২৩ থেকে ৮-এ নেমে এসেছে। মৃত্যু হার ১১২ ছিল, সেখানে তা ৫০-এ নেমে এসেছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বাড়বে।
ঈদের জামাকাপড় কিনতে অনেকে শিশুদের নিয়ে বিপণিবিতানে কেনাকাটা করতে যাচ্ছেন, এটা ঠিক নয়, উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটা করতে হবে। ফেরিতে ১০০ মানুষের স্থলে ২ হাজার মানুষ ওঠছেন। এই অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে করোনা বাড়তে সময় লাগবে না। ঈদ আনন্দের বদলে দুঃখ বয়ে আনুক এটা কারো কাম্য নয়।
ভ্যাকসিন নিলে করোনায় আক্রান্ত হবে না, এটা ভুল ধারণা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন নিলেও করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন এমন অনেকে আছেন যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ভ্যাকসিন নিলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, মৃত্যু ঝুঁকি কমে।