ঢাকা ০৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে  শহীদ মিনারে স্মরণকালে ভিড়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২৩:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৭৫ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা

রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাভাষা। এই ভাষার অধিকার আদায়ের বীরসেনানীদের স্মরণ করতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছিলো স্মরণকালে ভিড়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষতো বটেই, দেশের বাইরে থেকেও এসেছেন হাজারো মানুষ।

বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে বহু সংখ্যক মানুষ ঢাকায় ছুটে এসেছেন শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে। অনেকে পূর্বপুরুষের জন্মভিটায় এসে আবেগ-আপ্লুত। তারা মনে করেন, ভাষা দিবসের এই মিলন মেলা বিশে^র অন্যতম স্মারক।

পশ্চিমবঙ্গের বাচিক শিল্পী দেবনিষ্ঠার কণ্ঠে তেমনটিই উচ্চারিত হলো। মায়ের ভাষার জন্য যারা প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর ইচ্ছে তো বহুদিনের। এই বাংলা তাকে টানে। দু’বাহু বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। এখানের ভাষা, আতিথেয়তা, মানুষের ভালোবাসা এবং সম্প্রীতি আর কোথাও মিলবে কি না সন্দেহ।

বাংলা সাহিত্যের দারুন টান বিশেষ করে আবৃত্তি শিল্পী হিসাবে নিজের অবদান রাখার ইচ্ছে থেকেই কাজ করে চলেছেন। বাংলাদেশে তার ছাত্রও রয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দুই ছাত্রকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন এই বাচিক শিল্পী। আগামী দিনগুলোয় দারুনভাবে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে দেবনিষ্ঠার।

সুদুর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন আলশগীর হোসেন। যিনি ফোবানার সভাপতি। তিনি বাংলা ভাষার বিকাশে নিরলস ভাবে কাজ করেছে চলেছেন। জানালেন, বাঙালি বাংলা ভাষার লড়াইয়ে জয়ী। বাঙালি বলেই হয়তো এটি সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসির সভাপতি রোকসানা পারভিনের ভাষায়, সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন নিশ্চিত করতে হবে।

সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহারের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা হওয়া উচিত। পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষারও সুযোগ থাকতে হবে। এদিকে বুধবার ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বজুড়ে মাতৃভাষা যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার জন্য মাতৃভাষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃভাষায় শিক্ষা নিতে পারলে সেই শিক্ষা জানা বোঝা গ্রহণ করা অনেক সহজ হয়। তবে কর্মক্ষেত্রে অনেক ভাষা শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। আমি মনে করি আমাদের শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা হওয়া উচিত। পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষারও সুযোগ থাকতে হবে।

কারণ পৃথিবীর সব দেশে এটা থাকে। সে সুযোগ করে দিতে পারলে আমাদের দেশের মানুষের কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা না। প্রতিটি পরিবারের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। বিশ্ব বাংলা সাংস্কৃতিক পরষদের বাংলাদেশ চেপ্টারের সভাপতি গোলাম ফারুক মনে করেন, বাংলাভাষার জন্য আমাদের দামাল ছেলেরা প্রাণ উৎসর্গ করেছে।

রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।  কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চারিদিকের সড়ক হৃদয়ের রঙের অল্পনায় রাঙানো হয়েছে। রক্তরঙে লেখা প্রতিটি দেওয়াল বলে দিচ্ছে মায়ের ভাষার জন্য সেও অহংকারী।

প্রতুষ্য থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে শহীদ বেধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাখো মানুষ। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ মিনারের বেধি। সর্বস্তরের মানুষের গর্বিত উপস্থিতি গোটা দুনিয়ায় ভাষা শহীদদের নাম উচ্চারিত হয় সগর্বে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে  শহীদ মিনারে স্মরণকালে ভিড়

আপডেট সময় : ১০:২৩:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

 

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা

রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাভাষা। এই ভাষার অধিকার আদায়ের বীরসেনানীদের স্মরণ করতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছিলো স্মরণকালে ভিড়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষতো বটেই, দেশের বাইরে থেকেও এসেছেন হাজারো মানুষ।

বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে বহু সংখ্যক মানুষ ঢাকায় ছুটে এসেছেন শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে। অনেকে পূর্বপুরুষের জন্মভিটায় এসে আবেগ-আপ্লুত। তারা মনে করেন, ভাষা দিবসের এই মিলন মেলা বিশে^র অন্যতম স্মারক।

পশ্চিমবঙ্গের বাচিক শিল্পী দেবনিষ্ঠার কণ্ঠে তেমনটিই উচ্চারিত হলো। মায়ের ভাষার জন্য যারা প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর ইচ্ছে তো বহুদিনের। এই বাংলা তাকে টানে। দু’বাহু বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। এখানের ভাষা, আতিথেয়তা, মানুষের ভালোবাসা এবং সম্প্রীতি আর কোথাও মিলবে কি না সন্দেহ।

বাংলা সাহিত্যের দারুন টান বিশেষ করে আবৃত্তি শিল্পী হিসাবে নিজের অবদান রাখার ইচ্ছে থেকেই কাজ করে চলেছেন। বাংলাদেশে তার ছাত্রও রয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দুই ছাত্রকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন এই বাচিক শিল্পী। আগামী দিনগুলোয় দারুনভাবে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে দেবনিষ্ঠার।

সুদুর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন আলশগীর হোসেন। যিনি ফোবানার সভাপতি। তিনি বাংলা ভাষার বিকাশে নিরলস ভাবে কাজ করেছে চলেছেন। জানালেন, বাঙালি বাংলা ভাষার লড়াইয়ে জয়ী। বাঙালি বলেই হয়তো এটি সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসির সভাপতি রোকসানা পারভিনের ভাষায়, সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন নিশ্চিত করতে হবে।

সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহারের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা হওয়া উচিত। পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষারও সুযোগ থাকতে হবে। এদিকে বুধবার ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বজুড়ে মাতৃভাষা যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার জন্য মাতৃভাষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃভাষায় শিক্ষা নিতে পারলে সেই শিক্ষা জানা বোঝা গ্রহণ করা অনেক সহজ হয়। তবে কর্মক্ষেত্রে অনেক ভাষা শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। আমি মনে করি আমাদের শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা হওয়া উচিত। পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষারও সুযোগ থাকতে হবে।

কারণ পৃথিবীর সব দেশে এটা থাকে। সে সুযোগ করে দিতে পারলে আমাদের দেশের মানুষের কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা না। প্রতিটি পরিবারের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। বিশ্ব বাংলা সাংস্কৃতিক পরষদের বাংলাদেশ চেপ্টারের সভাপতি গোলাম ফারুক মনে করেন, বাংলাভাষার জন্য আমাদের দামাল ছেলেরা প্রাণ উৎসর্গ করেছে।

রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।  কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চারিদিকের সড়ক হৃদয়ের রঙের অল্পনায় রাঙানো হয়েছে। রক্তরঙে লেখা প্রতিটি দেওয়াল বলে দিচ্ছে মায়ের ভাষার জন্য সেও অহংকারী।

প্রতুষ্য থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে শহীদ বেধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাখো মানুষ। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ মিনারের বেধি। সর্বস্তরের মানুষের গর্বিত উপস্থিতি গোটা দুনিয়ায় ভাষা শহীদদের নাম উচ্চারিত হয় সগর্বে।