ঢাকা ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে করা সকল চুক্তি প্রকাশের দাবি

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:০৪:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশে ভারত রাষ্ট্রের আধিপত্য: স্বরূপ ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ : ছবি সংগ্রহ

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

শেখ হাসিনার সরকার শর্তহীনভাবে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে

আধিপত্য রুখতে সব কটি চুক্তি সরকারকে প্রকাশ করতে হবে
দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে

২০০৮ সালের পর যখন ন্যূনতম নির্বাচনী গণতন্ত্রও আর থাকল না,
তখন বাংলাদেশ ভারতের অনাচারের একটি ছিটমহলে পরিণত হয়

 

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার শর্তহীনভাবে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। একের পর এক চুক্তি করেছে। এর প্রধান কারণ ছিল নির্বাচন ছাড়া চিরস্থায়ী ক্ষমতা তৈরি করা। সে কারণে তার পুরো নির্ভরশীলতা তৈরি হয় ভারত রাষ্ট্রের ওপর। এক দশকের যে অনির্বাচিত সরকার ও স্বৈরশাসন এটা ছিল ভারতের আধিপত্য বিস্তারের প্রধান অবলম্বন।

এক দশকের অনির্বাচিত সরকার ও স্বৈরশাসন ছিল বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তারের প্রধান অবলম্বন। এই দেশে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে প্রতিবেশী দেশটি নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে। ট্রানজিট, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসম চুক্তির মাধ্যমে ভারত এই আধিপত্য সৃষ্টি করেছে। সেই আধিপত্য রুখতে সব কটি চুক্তি সরকারকে প্রকাশ করতে হবে ও দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে।

ভারত প্রসঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের সুনির্দিষ্ট কিছু বক্তব্য, অভিযোগ ও সমস্যা রয়েছে। এটা সাম্প্রদায়িক কোনো বিষয় নয়, এটি আধিপত্যের সমস্যা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সমস্যাগুলো শুধু শেখ হাসিনার আমলে হয়েছে, তা নয়। তার আগেও হয়েছে।

শনিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশে ভারত রাষ্ট্রের আধিপত্য: স্বরূপ ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। আনু মুহাম্মদ সম্পাদিত ত্রৈমাসিক প্রকাশনা সর্বজনকথা এই সেমিনারের আয়োজন করে।

আনু মুহাম্মদ মনে করেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার এসেছে, তাদের যে প্রতিশ্রুতি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, সে অনুযায়ী অগ্রসর হতে হলে প্রথম কাজ হচ্ছে, সামরিক-বেসামরিক সব চুক্তি জনগণের সামনে প্রকাশ করা। যেসব চুক্তি জনস্বার্থবিরোধী, দেশের জন্য ক্ষতিকর সেগুলো বাতিল করা। চুক্তি বাতিলের পথ অনুসন্ধান করা সরকারের প্রথম দায়িত্ব। তিনি ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তির পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সঙ্গে সই করা চুক্তিগুলোও প্রকাশ করার দাবি জানান।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পসহ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রকল্প, নদীর পানি বণ্টন ও সীমান্ত হত্যার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ন্যূনতম গণতান্ত্রিক নির্বাচন যখন ছিল, তখন ভারতের সঙ্গে দর-কষাকষির একধরনের জায়গা ছিল। ২০০৮ সালের পর যখন ন্যূনতম নির্বাচনী গণতন্ত্রও আর থাকল না, তখন বাংলাদেশ ভারতের অনাচারের একটি ছিটমহলে পরিণত হয়। এই ছিটমহলের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তাকে এখন সুরক্ষা দিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশে পরিবর্তনের পর ভারতের যে প্রতিক্রিয়া, তাতে স্পষ্ট হয়ে গেছে বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনায় নিতেও তাদের কষ্ট হচ্ছে। কারণ, ছিটমহলের দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তিনি এখন নেই।

উত্তেজিত হয়ে কথাবার্তা বলে মূল সংকটের জায়গায় নজর দেওয়া হচ্ছে না, এমন মন্তব্য করে তানজীমউদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে যত চুক্তি হয়েছে সেগুলো প্রকাশ করে বুঝিয়ে দেওয়া জরুরি, কীভাবে দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বা অন্য কেউ কুক্ষিগত করেছে। চুক্তিগুলো প্রকাশ করা না হলে বোঝা যাবে না বাংলাদেশ এখনো কীভাবে ভারতের কাছে ছিটমহল হয়ে আছে। চুক্তিগুলো এখনো বহাল আছে। এগুলো শুধু আধিপত্যের নয়, চুক্তিগুলো নিপীড়নের।

সেমিনার সঞ্চালক গবেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মির্জা বলেন, অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারত সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। সীমান্তে নিয়মিত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের একটি অংশ ধারাবাহিকভাবে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এর ফলে সামাজিক মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের মধ্যে একধরনের বৈরিতা দেখা যাচ্ছে। ভারতবিরোধী রাজনৈতিক পাটাতন ধীরে ধীরে শক্তিশালী হচ্ছে। এর কারণে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিকাশ হচ্ছে, এটা খুব ভীতিকর।

মাহা মির্জা বলেন, একধরনের রাজনৈতিক ‘রেটরিক’ ব্যবহার করা হচ্ছে; কিন্তু আধিপত্যবাদের স্বরূপ কী, কীভাবে আধিপত্য হচ্ছে এসব বিশ্লেষণে ঘাটতি আছে। পরিবেশবিধ্বংসী প্রকল্প, জনস্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলোর ব্যাপারে পদক্ষেপ কী হবে, বাতিল করার প্রক্রিয়া কী হবে, এসব ভাবতে হবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত কৌশলগতভাবে বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তারের একটি মাধ্যম বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল। ভবিষ্যতে এই নির্ভরতা আরও বাড়তে পারে। একবার নির্ভরতার জালে আটকে গেলে সেখান থেকে বের হয়ে আসা কঠিন হয়ে যায়।

লেখক-গবেষক কল্লোল মোস্তফা বলেন, ভারত বাংলাদেশে তার আধিপত্য বজায় রাখতে নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এমনকি নির্বাচনব্যবস্থার ওপরও প্রভাব বিস্তার করে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। এখন কি আধিপত্য নেই? এখন যে অনেকে স্লোগান দিচ্ছে, এই স্লোগান দিলেই কি আধিপত্য থেকে মুক্ত হয়ে যাব?’

সীমান্তে হত্যা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসম চুক্তি, যৌথ নদীর পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে কল্লোল মোস্তফা বলেন, সমুদ্রের গভীর থেকে শুরু করে মহাকাশ পর্যন্ত যত বিষয় আছে, সব বিষয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি আছে। এসব চুক্তি নিয়ে কখনো আলোচনা হয়নি। জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলো বাতিল না হলে ভারতীয় আধিপত্য থেকে যাবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে করা সকল চুক্তি প্রকাশের দাবি

আপডেট সময় : ০৯:০৪:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

 

শেখ হাসিনার সরকার শর্তহীনভাবে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে

আধিপত্য রুখতে সব কটি চুক্তি সরকারকে প্রকাশ করতে হবে
দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে

২০০৮ সালের পর যখন ন্যূনতম নির্বাচনী গণতন্ত্রও আর থাকল না,
তখন বাংলাদেশ ভারতের অনাচারের একটি ছিটমহলে পরিণত হয়

 

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার শর্তহীনভাবে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। একের পর এক চুক্তি করেছে। এর প্রধান কারণ ছিল নির্বাচন ছাড়া চিরস্থায়ী ক্ষমতা তৈরি করা। সে কারণে তার পুরো নির্ভরশীলতা তৈরি হয় ভারত রাষ্ট্রের ওপর। এক দশকের যে অনির্বাচিত সরকার ও স্বৈরশাসন এটা ছিল ভারতের আধিপত্য বিস্তারের প্রধান অবলম্বন।

এক দশকের অনির্বাচিত সরকার ও স্বৈরশাসন ছিল বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তারের প্রধান অবলম্বন। এই দেশে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে প্রতিবেশী দেশটি নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে। ট্রানজিট, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসম চুক্তির মাধ্যমে ভারত এই আধিপত্য সৃষ্টি করেছে। সেই আধিপত্য রুখতে সব কটি চুক্তি সরকারকে প্রকাশ করতে হবে ও দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে।

ভারত প্রসঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের সুনির্দিষ্ট কিছু বক্তব্য, অভিযোগ ও সমস্যা রয়েছে। এটা সাম্প্রদায়িক কোনো বিষয় নয়, এটি আধিপত্যের সমস্যা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সমস্যাগুলো শুধু শেখ হাসিনার আমলে হয়েছে, তা নয়। তার আগেও হয়েছে।

শনিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশে ভারত রাষ্ট্রের আধিপত্য: স্বরূপ ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। আনু মুহাম্মদ সম্পাদিত ত্রৈমাসিক প্রকাশনা সর্বজনকথা এই সেমিনারের আয়োজন করে।

আনু মুহাম্মদ মনে করেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার এসেছে, তাদের যে প্রতিশ্রুতি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, সে অনুযায়ী অগ্রসর হতে হলে প্রথম কাজ হচ্ছে, সামরিক-বেসামরিক সব চুক্তি জনগণের সামনে প্রকাশ করা। যেসব চুক্তি জনস্বার্থবিরোধী, দেশের জন্য ক্ষতিকর সেগুলো বাতিল করা। চুক্তি বাতিলের পথ অনুসন্ধান করা সরকারের প্রথম দায়িত্ব। তিনি ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তির পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সঙ্গে সই করা চুক্তিগুলোও প্রকাশ করার দাবি জানান।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পসহ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রকল্প, নদীর পানি বণ্টন ও সীমান্ত হত্যার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ন্যূনতম গণতান্ত্রিক নির্বাচন যখন ছিল, তখন ভারতের সঙ্গে দর-কষাকষির একধরনের জায়গা ছিল। ২০০৮ সালের পর যখন ন্যূনতম নির্বাচনী গণতন্ত্রও আর থাকল না, তখন বাংলাদেশ ভারতের অনাচারের একটি ছিটমহলে পরিণত হয়। এই ছিটমহলের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তাকে এখন সুরক্ষা দিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশে পরিবর্তনের পর ভারতের যে প্রতিক্রিয়া, তাতে স্পষ্ট হয়ে গেছে বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনায় নিতেও তাদের কষ্ট হচ্ছে। কারণ, ছিটমহলের দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তিনি এখন নেই।

উত্তেজিত হয়ে কথাবার্তা বলে মূল সংকটের জায়গায় নজর দেওয়া হচ্ছে না, এমন মন্তব্য করে তানজীমউদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে যত চুক্তি হয়েছে সেগুলো প্রকাশ করে বুঝিয়ে দেওয়া জরুরি, কীভাবে দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বা অন্য কেউ কুক্ষিগত করেছে। চুক্তিগুলো প্রকাশ করা না হলে বোঝা যাবে না বাংলাদেশ এখনো কীভাবে ভারতের কাছে ছিটমহল হয়ে আছে। চুক্তিগুলো এখনো বহাল আছে। এগুলো শুধু আধিপত্যের নয়, চুক্তিগুলো নিপীড়নের।

সেমিনার সঞ্চালক গবেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মির্জা বলেন, অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারত সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। সীমান্তে নিয়মিত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের একটি অংশ ধারাবাহিকভাবে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এর ফলে সামাজিক মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের মধ্যে একধরনের বৈরিতা দেখা যাচ্ছে। ভারতবিরোধী রাজনৈতিক পাটাতন ধীরে ধীরে শক্তিশালী হচ্ছে। এর কারণে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিকাশ হচ্ছে, এটা খুব ভীতিকর।

মাহা মির্জা বলেন, একধরনের রাজনৈতিক ‘রেটরিক’ ব্যবহার করা হচ্ছে; কিন্তু আধিপত্যবাদের স্বরূপ কী, কীভাবে আধিপত্য হচ্ছে এসব বিশ্লেষণে ঘাটতি আছে। পরিবেশবিধ্বংসী প্রকল্প, জনস্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলোর ব্যাপারে পদক্ষেপ কী হবে, বাতিল করার প্রক্রিয়া কী হবে, এসব ভাবতে হবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত কৌশলগতভাবে বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তারের একটি মাধ্যম বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল। ভবিষ্যতে এই নির্ভরতা আরও বাড়তে পারে। একবার নির্ভরতার জালে আটকে গেলে সেখান থেকে বের হয়ে আসা কঠিন হয়ে যায়।

লেখক-গবেষক কল্লোল মোস্তফা বলেন, ভারত বাংলাদেশে তার আধিপত্য বজায় রাখতে নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এমনকি নির্বাচনব্যবস্থার ওপরও প্রভাব বিস্তার করে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। এখন কি আধিপত্য নেই? এখন যে অনেকে স্লোগান দিচ্ছে, এই স্লোগান দিলেই কি আধিপত্য থেকে মুক্ত হয়ে যাব?’

সীমান্তে হত্যা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসম চুক্তি, যৌথ নদীর পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে কল্লোল মোস্তফা বলেন, সমুদ্রের গভীর থেকে শুরু করে মহাকাশ পর্যন্ত যত বিষয় আছে, সব বিষয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি আছে। এসব চুক্তি নিয়ে কখনো আলোচনা হয়নি। জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলো বাতিল না হলে ভারতীয় আধিপত্য থেকে যাবে।