ভারতে বাংলাদেশী নারী নির্যাতন গ্রেফতার ৫

- আপডেট সময় : ০৯:০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১ ২৩০ বার পড়া হয়েছে
প্রতীকী ছবি
ভারতে ভাইরাল হওয়া নারী নির্যাতনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত এক বাংলাদেশীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ব্যাঙ্গালুরু পুলিশ। হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় বাংলাদেশিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়েছেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ।
কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে শারীরিক ও যৌন নিপীড়ন করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে দেখা গেছে, ২০/২২ বছরের তরুণীকে তিন-চার যুবক নির্যাতন করেন। তাদের সঙ্গে একজন তরুণীও রয়েছেন।
বেঙ্গালুরু পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ভিডিও ক্লিপ দেখে আসামিদের শনাক্ত করেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্যাতনের শিকার তরুণী মানবপাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে ভারতে এসেছিলেন। এখন তিনি বাংলাদেশে রয়েছেন। তিনি এলে তার বিবৃতি রেকর্ড করা হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ জানান, বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার এক তরুণীকে ভারতের কেরালা রাজ্যে নিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় বাংলাদেশেরই রিফাতুল ইসলাম হৃদয় (২৬) নামের এক যুবক জড়িত থাকার বিষয়টি সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। সে রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা।
গত কয়েকদিন ধরে ভারতে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ২০-২২ বছরের একজন তরুণীকে বিবস্ত্র করে ৩/৪ জন যুবক শারীরিক ও বিকৃতভাবে যৌন নির্যাতন করছে। ভিডিওটির একজনের সঙ্গে বাংলাদেশি একটি ছেলের ছবি মিলে যায়। এরপরই এ বিষয়ে তদন্তে মাঠে নামেন তারা।
তদন্তের একপর্যায়ে জানা যায়, নির্যাতনকারী যুবকের নাম রিফাতুল ইসলাম হৃদয়। হৃদয়ের পরিচয় তার মা ও মামার কাছ থেকে শনাক্ত করা হয়। এলাকায় সে টিকটক হৃদয় নামে পরিচিত।
উপ-কমিশনার বলেন, এ বিষয়ে হৃদয়ের মা ও মামাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানান, উশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের কারণে ৪ মাস আগে হৃদয়কে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। বাসার কারো সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই। তদন্তের একপর্যায়ে হৃদয়ের মামার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তার ভারতীয় নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। হৃদয় জানায়, গত ৩ মাস আগে সে ভারতে গেছে। যৌন নির্যাতনের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেই ঘটনা ঘটে ১৫ থেকে ১৬ দিন আগে।
হৃদয় ফোনে তার মামাকে আরও জানায়, ভিকটিম তরুণী বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা। সে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় থাকত। ওই তরুণীর আরও পরিচয় জানতে চাওয়া হলে হৃদয় হোয়াটসঅ্যাপে ভিকটিমের একটি ভারতীয় পরিচয়পত্র আধার কার্ড পাঠায়। যৌন নির্যাতনের ঘটনায় হৃদয় ও তার কয়েকজন বন্ধু জড়িত ছিল। এটি ঘটে ভারতের কেরালায়।
উপ-কমিশনার বলেন, হৃদয়ের দেওয়া তথ্যমতে তরুণীর পরিবারের সন্ধান পেয়েছি। পরিবারের সঙ্গে মেয়েটির গত দুই বছর ধরে কোনো যোগাযোগ ছিল না।
এদিকে হৃদয়ের বাসা তল্লাশি করে তার জাতীয় পরিচয় পত্র, জেএসসি পরীক্ষার এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও রমনা থানায় তার নামে দায়ের করা একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার এজাহার ও এফআইআর কপি জব্দ করা হয়েছে।
হৃদয় জানায় বর্তমানে সে ভারতের পুনেতে অবস্থান করছে। তার প্রকৃত অবস্থান শনাক্তের পাশাপাশি সে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে কি না তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। হৃদয়ের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে যারা যৌন নির্যাতনে অংশগ্রহণ করেছে তাদের পরিচয় শনাক্তকরণের পাশাপাশি তারা বাংলাদেশি নাকি ভারতীয় নাগরিক তা যাচাই-বাছাই চলছে।