ঢাকা ০৭:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

‘ভারতে ধর্ষণের শিকার তরুণী’ পরিবার জানতো মেয়ে শ্বশুর বাড়ি

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১ ১৫৯ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর জড়িত এই পাঁচজনকে ধরিয়ে দিতে টুইটারে তাদের ছবি প্রথম প্রকাশ করে অসম পুলিশ’

বাবা ভেবেছিলেন মেয়ে চাঁদপুর শ্বশুরবাড়িতে। অথচ হতভাগ্য তরুণীকে ভারতে দৈহিক নির্যাতন (ধর্ষণ) করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি দুবৃর্ত্তরা-তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগে ছড়িয়ে দেয়।

ভিন দেশ ভারতে ঘটনাটি ঘটেছে, তা জানার পর মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন, ঢাকার ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তার একমাত্র আর্জি মেয়ে ফিরে পেতে চান।

সাত বছর আগে তার মেয়ে মগবাজার এলাকার বাসিন্দা চাঁদপুরের যুবকের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে। তিন বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সাড়ে তিন বছর আগে জামাই কুয়েতে গেলে মেয়েটি মাঝে মধ্যে ঢাকায় এসে থাকত। তার জীবন ভালোই কাটছিলো।

দেড় বছর আগের ঘটনা। মগবাজারে তার স্বামীর বন্ধু হৃদয়ের মাধ্যমে দুবাই যাওয়ার ভাবনার কথা জানালে তিনি নিষেধ করেছিলেন মেয়েকে। তারপরও মেয়েটি নাছোড়বান্দা। ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় ছয়জনকে আটকের খবর এসেছে ভারতের সংবাদমাধ্যমে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ২২ বছরের তরুণীকে বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতনের পর দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। গ্রেপ্তার সবাই একই গ্রুপের এবং সবাই বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের দুইজন নারীও রয়েছেন।

এই ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা ‘টিকটকার’ হৃদয় বাবুসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার এনডিটিভি জানায়, নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে ছয় দিন আগে। বিভৎস কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরে নির্যাতনের শিকার হওয়া তরুণীর বাবা বলেন, ফুটপাতে জুস বিক্রি করি, পড়াশোনাও করিনি, কতকিছু বুঝিও না। ছোট্ট নাতনিকে আমার কাছে রাখতাম, আর মেয়ে চাঁদপুরেই থাকত।

এক বছর ধরে মেয়ের কোনো খবর নেই। মনে করেছিলাম, মেয়ে চাঁদপুরে স্বশুর বাড়িতে রয়েছে। কিন্তু এখন দেখি মেয়ে আমার ভারতে, কেমন একটা নির্যাতনের শিকার।

মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকার কারণ হিসেবে বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি, আর স্ত্রীসহ চারজনকে নিয়ে মগবাজার এলাকায় বসবাস করছি। কিন্তু করোনাভাইরাসের সময় সব এলোমেলো হয়ে যায়।

সংসার আর চলছিলো না বলে পুরো পরিবারকে গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ পাঠিয়ে দেই। ঢাকায় একা থাকতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে যাই। তাই এর মাঝে আর মেয়ের খবর নেওয়া হয়নি।

তার মেয়ে ছোটবেলা থেকেই একটু চঞ্চল প্রকৃতির। তাকে ফুঁসলিয়ে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশের কমিশনার কামাল পান্ট টুইটারে জানান, নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি তরুণীকে পাচারের জন্য ভারতে আনা হয়েছিল। তিনি এখন অন্য একটি রাজ্যে রয়েছেন।

তাকে বেঙ্গালুরুতে নেওয়ার জন্য পুলিশের একটি দল গেছে। তাকে বেঙ্গালুরুতে নেওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার জবানবন্দি নেওয়া হবে।

এবিষয়ে হাতিরঝিল থানার ওসি মো. আব্দুর রশীদ বলেন, গণমাধ্যম থেকে আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়েছি। অফিসিয়ালি এখনও ভারতের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

‘ভারতে ধর্ষণের শিকার তরুণী’ পরিবার জানতো মেয়ে শ্বশুর বাড়ি

আপডেট সময় : ০৭:৩৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১

‘তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর জড়িত এই পাঁচজনকে ধরিয়ে দিতে টুইটারে তাদের ছবি প্রথম প্রকাশ করে অসম পুলিশ’

বাবা ভেবেছিলেন মেয়ে চাঁদপুর শ্বশুরবাড়িতে। অথচ হতভাগ্য তরুণীকে ভারতে দৈহিক নির্যাতন (ধর্ষণ) করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি দুবৃর্ত্তরা-তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগে ছড়িয়ে দেয়।

ভিন দেশ ভারতে ঘটনাটি ঘটেছে, তা জানার পর মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন, ঢাকার ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তার একমাত্র আর্জি মেয়ে ফিরে পেতে চান।

সাত বছর আগে তার মেয়ে মগবাজার এলাকার বাসিন্দা চাঁদপুরের যুবকের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে। তিন বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সাড়ে তিন বছর আগে জামাই কুয়েতে গেলে মেয়েটি মাঝে মধ্যে ঢাকায় এসে থাকত। তার জীবন ভালোই কাটছিলো।

দেড় বছর আগের ঘটনা। মগবাজারে তার স্বামীর বন্ধু হৃদয়ের মাধ্যমে দুবাই যাওয়ার ভাবনার কথা জানালে তিনি নিষেধ করেছিলেন মেয়েকে। তারপরও মেয়েটি নাছোড়বান্দা। ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় ছয়জনকে আটকের খবর এসেছে ভারতের সংবাদমাধ্যমে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ২২ বছরের তরুণীকে বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতনের পর দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। গ্রেপ্তার সবাই একই গ্রুপের এবং সবাই বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের দুইজন নারীও রয়েছেন।

এই ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা ‘টিকটকার’ হৃদয় বাবুসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার এনডিটিভি জানায়, নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে ছয় দিন আগে। বিভৎস কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরে নির্যাতনের শিকার হওয়া তরুণীর বাবা বলেন, ফুটপাতে জুস বিক্রি করি, পড়াশোনাও করিনি, কতকিছু বুঝিও না। ছোট্ট নাতনিকে আমার কাছে রাখতাম, আর মেয়ে চাঁদপুরেই থাকত।

এক বছর ধরে মেয়ের কোনো খবর নেই। মনে করেছিলাম, মেয়ে চাঁদপুরে স্বশুর বাড়িতে রয়েছে। কিন্তু এখন দেখি মেয়ে আমার ভারতে, কেমন একটা নির্যাতনের শিকার।

মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকার কারণ হিসেবে বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি, আর স্ত্রীসহ চারজনকে নিয়ে মগবাজার এলাকায় বসবাস করছি। কিন্তু করোনাভাইরাসের সময় সব এলোমেলো হয়ে যায়।

সংসার আর চলছিলো না বলে পুরো পরিবারকে গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ পাঠিয়ে দেই। ঢাকায় একা থাকতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে যাই। তাই এর মাঝে আর মেয়ের খবর নেওয়া হয়নি।

তার মেয়ে ছোটবেলা থেকেই একটু চঞ্চল প্রকৃতির। তাকে ফুঁসলিয়ে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশের কমিশনার কামাল পান্ট টুইটারে জানান, নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি তরুণীকে পাচারের জন্য ভারতে আনা হয়েছিল। তিনি এখন অন্য একটি রাজ্যে রয়েছেন।

তাকে বেঙ্গালুরুতে নেওয়ার জন্য পুলিশের একটি দল গেছে। তাকে বেঙ্গালুরুতে নেওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার জবানবন্দি নেওয়া হবে।

এবিষয়ে হাতিরঝিল থানার ওসি মো. আব্দুর রশীদ বলেন, গণমাধ্যম থেকে আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়েছি। অফিসিয়ালি এখনও ভারতের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি।