ঢাকা ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ভারতে জাহাজ ডুবি : বিয়ের সানাই বাজার আগেই অথৈ জলে নিখোঁজ রাহুল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০৯:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬০ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ঋদি হক

তরতাজা যুবক রাহুল তথা রাহুল রায়। চোখেমুখে তার সমৃদ্ধ পরিবার গড়ার স্বপ্ন। বাবা-মায়ের আশার আলো। সন্তানকে নিয়ে অনেক আশাভরসা ছিলো। ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন ঘরে বসবাস ছিলো তাদের।

এই হাতে গোনা মাস পাঁচেক বাকী ছিলো বাড়িতে বিয়ের সানাইন বাজার। কিন্তু তার আগেই অথৈ জলে নিখোঁজ হলো শান্তিনগর এলাকার রাহুল। উদ্বেগ আর শূন্যতায় প্রহর কাটছে বারাসাতে হৃদয়পুরের শান্তিনগর এলাকার রায় পরিবারের। কলকাতা খিদিরপুর ডক থেকে আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ার যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরে পণ্যবাহী জাহাজ ডুবির ঘটনয় নিখোঁজ হন রাহুল। নিখোঁজের তালিকায় এখনও রাহুলসহ তিনজন। কলকাতা থেকে এমন তথ্যই জানালেন শ্যামল বাবু। বাহুলের চাচা।

খবরটা ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় এসে পৌঁছায় কেবিন ক্রু রাহুল রায়ের বাবা সুবোধ কুমার রায়ের কাছে। সুবোধবাবু পেশায় ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উচ্চপদে কর্মরত আধিকারিক। রাহুল রায়ের পরিবার থেকে এসব তথ্য জানা গিয়েছে।

শ্যামল বাবু জানালেন, কলকাতার একটি বেসরকারি জাহাজ কোম্পানি আইটিটির জাহাজটি ১৫ বছরের পুরনো। রাহুলের বাবা সুবোধবাবু দাবি জাহাজের ১১ জন কর্মীকে উদ্ধার করলেও এখনো রাহুল রায় ও ক্যাপ্টেনসহ নিখোঁজ তিনজন। তাদের উদ্ধার কাজে কোস্টগার্ড ও ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স এর হেলিকপ্টার তল্লাশি চালাচ্ছে।

গেল বৃহস্পতিবার সকালেই পুনে থেকে দাদার নিখোঁজের খবর শুনে বারাসাতে হৃদয়পুরের বাড়িতে পৌঁছান রাহুলের ছোট ভাই এমবিএ পড়ুয়া রোহণ রায়। এদিন ছেলের নিখোঁজের শোক ও উদ্বেগের হাতিয়ে সুবোধ বাবু অভিযোগ করেন সরকার ও প্রশাসনের দেখা উচিত যে জাহাজ গুলি গভীর সমুদ্রে যাচ্ছে সেগুলির ফিটনেটস সার্টিফিকেট সঠিক কিনা।

অনেক বেসরকারি কোম্পানি পুরনো জাহাজ চালায়। তাতে যেমন জাহাজ কর্মীদের মৃত্যু হয়, তেমন লোকসানে পড়ে অন্য সরবরাহকারী কোম্পানিগুলি। রাহুলের কোম্পানি তরফ থেকে পরিবারকে জানানো হয়, ২৫ আগস্ট জাহাজটি রওনা দেয় খিদিরপুর ডক থেকে ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পোর্ট ব্লেয়ার ব্লেয়ারের উদ্দেশ্যে।

২৬ তারিখ বিকেল চারটে নাগাদ জাহাজটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কলকাতা থেকে ৯০ নটিকাল মাইল দূরে। জাহাজের ১১ জনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি তিনজন এখনো নিখোঁজ। এই সংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েন গোটা রায় পরিবার। বৃহস্পতিবারও সর্বশেষ খোঁজ নিতে পাড়া-প্রতিবেশীরা হাজির হন রাহুলের বাড়িতে। উদ্বেগে আছে তার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা।

৭২ ঘন্টা পার হয়ে গেল এখনো কেন উদ্ধার হলো না সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুলের বাবা সুবোধবাবু। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে তার বিবাহ ঠিক হয়েছিল। বড় ছেলের রাহুলের সেই বিবাহ অনুষ্ঠান এখন অনিশ্চিত। তবে তার বেঁচে থাকার আসা উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রতিবেশীরা।

কোস্টগার্ড এবং ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের তরফে যদি আরও খোঁজখবর তল্লাশি চালানো হয় তাহলে উদ্ধার হতে পারে রাহুলসহ বাকি তিনজন। ছেলে ঘরে ফিরবে সেই আশায় প্রহর গুনছেন রায় পরিবার ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভারতে জাহাজ ডুবি : বিয়ের সানাই বাজার আগেই অথৈ জলে নিখোঁজ রাহুল

আপডেট সময় : ০৯:০৯:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

ঋদি হক

তরতাজা যুবক রাহুল তথা রাহুল রায়। চোখেমুখে তার সমৃদ্ধ পরিবার গড়ার স্বপ্ন। বাবা-মায়ের আশার আলো। সন্তানকে নিয়ে অনেক আশাভরসা ছিলো। ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন ঘরে বসবাস ছিলো তাদের।

এই হাতে গোনা মাস পাঁচেক বাকী ছিলো বাড়িতে বিয়ের সানাইন বাজার। কিন্তু তার আগেই অথৈ জলে নিখোঁজ হলো শান্তিনগর এলাকার রাহুল। উদ্বেগ আর শূন্যতায় প্রহর কাটছে বারাসাতে হৃদয়পুরের শান্তিনগর এলাকার রায় পরিবারের। কলকাতা খিদিরপুর ডক থেকে আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ার যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরে পণ্যবাহী জাহাজ ডুবির ঘটনয় নিখোঁজ হন রাহুল। নিখোঁজের তালিকায় এখনও রাহুলসহ তিনজন। কলকাতা থেকে এমন তথ্যই জানালেন শ্যামল বাবু। বাহুলের চাচা।

খবরটা ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় এসে পৌঁছায় কেবিন ক্রু রাহুল রায়ের বাবা সুবোধ কুমার রায়ের কাছে। সুবোধবাবু পেশায় ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উচ্চপদে কর্মরত আধিকারিক। রাহুল রায়ের পরিবার থেকে এসব তথ্য জানা গিয়েছে।

শ্যামল বাবু জানালেন, কলকাতার একটি বেসরকারি জাহাজ কোম্পানি আইটিটির জাহাজটি ১৫ বছরের পুরনো। রাহুলের বাবা সুবোধবাবু দাবি জাহাজের ১১ জন কর্মীকে উদ্ধার করলেও এখনো রাহুল রায় ও ক্যাপ্টেনসহ নিখোঁজ তিনজন। তাদের উদ্ধার কাজে কোস্টগার্ড ও ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স এর হেলিকপ্টার তল্লাশি চালাচ্ছে।

গেল বৃহস্পতিবার সকালেই পুনে থেকে দাদার নিখোঁজের খবর শুনে বারাসাতে হৃদয়পুরের বাড়িতে পৌঁছান রাহুলের ছোট ভাই এমবিএ পড়ুয়া রোহণ রায়। এদিন ছেলের নিখোঁজের শোক ও উদ্বেগের হাতিয়ে সুবোধ বাবু অভিযোগ করেন সরকার ও প্রশাসনের দেখা উচিত যে জাহাজ গুলি গভীর সমুদ্রে যাচ্ছে সেগুলির ফিটনেটস সার্টিফিকেট সঠিক কিনা।

অনেক বেসরকারি কোম্পানি পুরনো জাহাজ চালায়। তাতে যেমন জাহাজ কর্মীদের মৃত্যু হয়, তেমন লোকসানে পড়ে অন্য সরবরাহকারী কোম্পানিগুলি। রাহুলের কোম্পানি তরফ থেকে পরিবারকে জানানো হয়, ২৫ আগস্ট জাহাজটি রওনা দেয় খিদিরপুর ডক থেকে ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পোর্ট ব্লেয়ার ব্লেয়ারের উদ্দেশ্যে।

২৬ তারিখ বিকেল চারটে নাগাদ জাহাজটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কলকাতা থেকে ৯০ নটিকাল মাইল দূরে। জাহাজের ১১ জনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি তিনজন এখনো নিখোঁজ। এই সংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েন গোটা রায় পরিবার। বৃহস্পতিবারও সর্বশেষ খোঁজ নিতে পাড়া-প্রতিবেশীরা হাজির হন রাহুলের বাড়িতে। উদ্বেগে আছে তার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা।

৭২ ঘন্টা পার হয়ে গেল এখনো কেন উদ্ধার হলো না সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুলের বাবা সুবোধবাবু। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে তার বিবাহ ঠিক হয়েছিল। বড় ছেলের রাহুলের সেই বিবাহ অনুষ্ঠান এখন অনিশ্চিত। তবে তার বেঁচে থাকার আসা উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রতিবেশীরা।

কোস্টগার্ড এবং ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের তরফে যদি আরও খোঁজখবর তল্লাশি চালানো হয় তাহলে উদ্ধার হতে পারে রাহুলসহ বাকি তিনজন। ছেলে ঘরে ফিরবে সেই আশায় প্রহর গুনছেন রায় পরিবার ।