ব্যবসায়ীকে কোপানো গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা

- আপডেট সময় : ১০:০১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫ ৬০ বার পড়া হয়েছে

ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করেন মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে মিথুন। তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা পুলিশ থানায় নিয়ে আসার সময় মিথুনকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা করে মিথুনের অনুসারীরা।
নিউমার্কেট থানার সামনে এই হামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার (এসি) তারিক লতিফসহ ৫জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে সহকারী কমিশনার তারিক লতিফের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক এলাকা থেকে মোহাম্মদ হোসাইনকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার সকালে আসামিকে নিয়ে নিউমার্কেট থানায় প্রবেশের সময় হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক বাদী হয়ে মামলা করেন। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বশির ইসলাম (২৮), মোহাম্মদ হাসান (২১), মোহাম্মদ ইমন (২৫), মাসুম মাহমুদ (৩২), মোহাম্মদ আলামিন (৩০) ও আকবর আলী (২১)। এ ছাড়া ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে মিথুনকেও এ মামলার আসামি করা হয়েছে।
গত ১০ জানুয়ারি রাতে এলিফ্যান্ট রোডের বিপণিবিতান মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে বিপণিবিতানের ব্যবসায়ী এহতেশামুল হককে কুপিয়ে জখম করা হয়। এহতেশাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
তাকে যখন কোপানো হয়, তখন অপর ব্যবসায়ী ওয়াহিদুল হাসানের (দিপু) গাড়িতে হামলা হয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হেফাজতে থাকা অবস্থায় পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল হাসান ওরফে ইমনের হয়ে ধানমন্ডি এলাকার চাঁদা তোলার কাজ করেন মোহাম্মদ হোসাইন।
ব্যবসায়ীকে কোপানোর সময় তাকে ঘটনাস্থলে যেতে বলেছিলেন ছাত্রদল নেতা মিথুন। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ হোসাইনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মোহাম্মদ হোসাইনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার ভোর চারটার দিকে তাকে বহনকারী পুলিশের গাড়িটি নিউমার্কেট থানায় প্রবেশকালে চাপাতিসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে গাড়িটির গতি রোধ করেন আসামিরা।
পরে মোহাম্মদ হোসাইনের অনুসারীরা লাঠি, লোহার রড ইত্যাদি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেন। এতে নিউমার্কেট জোনের এসি তারিক লতিফ, এসআই আরব আলী, এসআই ফিরোজ আহমেদ ও খন্দকার মেসবাহ এবং বার্তা অপারেটর মো. আনোয়ার গুরুতর আহত হন।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহসিন উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় মোহাম্মদ হোসাইনসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত ব্যবসায়ীকে কোপানোর মামলায় মোহাম্মদ হোসাইনকে এক দিনের রিমান্ড দিয়েছেন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বশির ইসলামকেও এক দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে মাটে রয়েছে পুলিশ।
মিথুন ও রাসেল বহিষ্কার
এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসান রাসেলকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে ছাত্রদল। এদিন সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক ওই দুই নেতার সঙ্গে কোনো ধরনের সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখতে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।