বিবিসিএন’র বৈঠক : বাংলাদেশ-ভারত জলপথ নৌবাণিজ্যের নয়া দিগন্ত
- আপডেট সময় : ০৩:০৭:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর ২০২০ ৫২১ বার পড়া হয়েছে
বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত কানেক্টিভিটি নেটওয়ার্ক (বিবিসিএন) এর ভার্চূয়াল বৈঠক
ভয়েস রিপোর্ট
৮ নভেম্বর বাংলাদেশ থেকে পণ্যবাহী জাহাজ গিয়ে ভিড়বে আসামের করিমগঞ্জের জাহাজঘাটে। জানা গেছে, এদিন দিল্লী থেকে ভার্চূয়ালী অসমের একাধিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া পণ্যও গ্রহণ করবেন তিনি। অতীতে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের রাজবাড়িসহ বিভিন্ন স্থান থেকে জলপথে যাত্রীবাহী জাহাজ এসে ভিড়তো এই জাহাজ ঘাটে। সেই থেকে আজও এটি জাহাজঘাট নামেই পরিচিত। রবিবার এই জাহাজ ঘাটেই ভিড়বে পণ্যবাহী জাহাজ। এটি আসবে বাংলাদেশ থেকে। বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে এই বিষয়টিকে সামনে রেখে ‘বাংলাদেশ-ভারত কানেক্টিটিভি নেটওয়ার্ক (বিবিসিএন) তরফে একটি ভার্চূয়ালী বৈঠকের আয়োজন করে। বিবিসিএন’র সভাপতি ড. অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে যোগ দেন আসামের বরাকউপত্যকার প্রথম প্রধান জাতীয় দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ’র সম্পাদক তৈয়মুর রেজা চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. রফিক মীর, বিবিসিএন’র অন্যতম সদস্য মো. ইউসুফ ফয়সাল, নিখিল ভদ্র, রাহা কাজি। অনুষ্ঠান পরিচানা করেন বিবিসিএন’র প্রতিষ্ঠাতা ও এক্সিজিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট আমিনুল হক।
তৈয়মুর রেজা চৌধুরী, সম্পাদক সাময়িক প্রসঙ্গ, শীলচর ভারত
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত নৌপ্রোটকলের আওতায় দু’দেশের মধ্যে নৌবাণিজ্যে এক নয়াদিগন্তের সূচনা করেছে। বর্তমানে নৌপ্রোটোকলের আওতায় ১০টি জলপথ সচল রয়েছে। এসব জলপথে নিয়মিত পণ্যপরিবাহিত হয়ে আসছে। প্রতিমাসে কেবল কলকাতা থেকে সিমেন্টের কাঁচামাল ফ্ল্যাইঅ্যাস পরিবহনে বাংলাদেশের প্রায় ৮০০ জাহাজ নিয়েজিত রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের চিলমারি থেকে আসামের ধুবড়ি, শিলঘাট ও পান্ডু পর্যন্ত জলপথটি দিনকে দিন ব্যস্ত হয়ে ওঠেছে। এই জলপথটি দিয়ে ভারত থেকে পাথর পরিবাহিত হচ্ছে। জলপথটি খননে ভারত ৮০% এবং বাংলাদেশ ২০% অর্থ যোগান দিচ্ছে। তেমননি বাংলাদেশের আশুগঞ্জ থেকে কুশিয়ারা পর্যন্ত দীর্ঘ জলপথটিও খননে একই ভাবে অর্থেও যোগান দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
তৈয়মুর জো চৌধুরী বলেন, দু’দেশের বন্ধনটা ঐতিহাসিক। উত্তরপূর্ব ভারতে জলপথে পণ্যপরিবাহিত সাশ্রয়ী এবং সময়ও কম লাগবে। এতে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। তৈমুর রেজা চৌধুরী বলেন, নৌপথে পন্যপরিবহনের পাশাপাশি দু-দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে এটি একটি সিড়ি হিসেবে কাজ করবে। যার অংশিদারিত্ব থাকবে বিবিসিএন।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. রফিক মীর
ইউসুফ ফয়সাল বলেন, বাংলাদেশের চিলমারি থেকে অসমের ধুবড়ি, শিলঘাট ও পান্ডু জলপথে ১০টি জাহাজ চলাচল করছে। এই জলপথটির প্রধান সমস্যা হচ্ছে গভীর (প্রাফট) কম। যে কারণে, বড় আকারের জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। খনন কাজ চলছে। কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ ফিট গভীর হলে এপথে হাজার টনের জাহাজ অনায়াসে চলাচল সম্ভব। নিখিল ভদ্র বলেন, দু’দেশের জলপথের পাশাপাশি রেলপথ, সড়ক পথেও পণ্য পরিবাহিত হচ্ছে। আগামীতে এই ব্যস্থতা আরও বাড়বে। কারণ বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে যে সম্ভবনা রয়েছে তা কাজে লাগাতে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। রাহা কাজী বলেন, দুদেশের সম্পর্ক খুবই গভীরে। একে আকড়ে ধওে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই দু’দেশের এই উদ্যোগ আরও গতিশীল হবে।
ড. অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায়। এটি সম্ভব হয়েছে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে। আগামী এসম্পর্ক আরও গতিশীল করতে আমাদেও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ কওে যেতে হবে। যে যে সমস্যা দেখা দেবে তা সহনশীলতার মধ্যে সমাদান করতে হবে। বাংলাদেশ একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। এই গতি ধরে রাখতে আমাদেও কাজ কওে যেতে হবে। আমাদেও মনে রাখতে হবে, সুসম্পর্ক মানুষের কল্যাণ সাধনের অন্যতম পথ। ড. শফিক মীর বলেন, দুদেশের পর্যটনসহ বহু ক্ষেত্র রয়েছে। যা আমাদের অংকারের বিষয়। এগুলো আমাদের কাজে লাগাতে হবে। পর্যটন দু’দেশের সেতুবন্ধনে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে। ইতিহাস-ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে আমাদেও এগিয়ে যেতে হবে।
অসমের করিগঞ্জের পথে বাংলাদেশি পণ্যবোঝাই জাহাজ
সভাপতির বক্তব্যে ড. হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায়। আর তা সম্ভব হয়েছে, বাংলাদেশের শেখ হাসিনার হাত ধরে। আগামীতে নৌপথ ও পর্যটনসহ সকল ক্ষেত্রে দুদেশের সম্পর্ক আর সম্প্রসারিত হবে। আগামী বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে। এচাড়া আসছে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে ভার্চ্যূয়াল বৈঠকের কথা রয়েছে।