ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘ জন্মজয়ন্তীতে লাখো প্রাণের শ্রদ্ধা’

ঋদ্ধিমান
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১ ২২৬ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অসম্প্রদায়িক, মানবতা ও চেতনার কবি কাজী নজরুল ‘তবু আমারে দেব না ভুলিতে’ 

কবির জন্মজয়ন্তীর আগের দিনেই কবিতা আবৃত্তি করে পাঠালো সুস্মিতা। তেমনি সাত সমুদ্র-তের নদীর দূরের নিউজার্সি শহর থেকে বন্ধু শিবানি পাঠালো দুখু মিয়া কবিতাটি। আমার জীবন চলার পথপদর্শক কবিকে নিবেদন করে দুই বন্ধুর দুটো কবিতা ছিলো কবির জন্মজয়ন্তীতে সবচেয়ে বড় পাওনা। কবির সমাধিতে কাজ শেষে ফিরেই এডিটিং টেবিলে।

সুস্মিতাকে কল করা হলে ও বললো দুপুরের খাবার খাবে। আমারও মনে হলো-তাইতো সকাল থেকে একটু জল ছাড়াতো আর কিছু খাওয়া হয়নি। এক ফাঁকে বন্ধু শিবানির সঙ্গেও কথা হয়ে গেলো। কবিকে নিয়ে যেন দুই বন্ধুর কথা আর ফুরোয় না। আমি তখন এডিটিং টেবিলে। বললাম কবিতা পাঠিয়ে বিছানায় যাও। হাতে কাজ।

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি। ১৮৯৯ সালের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের চুরুলিয়া গ্রামে তার জন্ম। তার ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি মূলত প্রেম-দ্রোহ, সাম্য-মানবতা ও শোষিত মানুষের মুক্তির কবি। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক নজরুল সাহিত্যের শাখা-প্রশাখায় ছিলো তার বিচরণ। বিচক্ষণ ও বাস্তববাদি কবি ছিলেন নজরুল।

কবিতা, গল্প-উপন্যাস, হাম-নাত, শ্যামা সংঙ্গীত কোন বাণী আসেনি তার কলমে? এই ভাবনা থেকেই বলতে হয়, ‘তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।’

করোনা কালেও জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে হাজারো মানুষের পথচারণায় মুখর ছিলো তার সমাধিস্থল। তবে সবটাই হয়েছে, সাবধানতা অবলম্বন করেই। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম এবং টেলিভিশনে এদিনে বিশেষ অনুষ্ঠান মালার আয়োজন রয়েছে। বিশেষ নিবন্ধন প্রকাশ করেছে সংবাদপত্রগুলো ।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির জন্মজয়ন্তীতে বাণী দিয়েছেন। মূলত বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই কবি স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।

কবি নজরুলকে বিশ্বে তুলে ধরার  প্রয়াস থেকেই কাজ করে চলা প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘বাঁশরী’। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার খালেকুজ্জামান জানালেন, বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ পূর্ণ হবে ডিসেম্বর নাগাদ। জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন স্থানে লাখো কন্ঠে বিদ্রোহী কবিতা পাঠ আয়োজন করা হবে। গেল কয়েক বছর আগে বিদ্রোহী কবিতা নিয়ে বাংলাদেশে এক নতুন ধারার আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন খালেকুজ্জামান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ময়দানে লাখো কন্ঠে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা পাঠ ছিলো উপমহাদেশে এক নজির গড়া আযোজন। যা করতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশই পারে যে কোন অসম্ভবকে সম্ভব করতে। বাঁশরী তার যাদুর বাশি বাজিয়ে হাজারো মানুষকে অসম্প্রদায়িক ও মানবতার কবি কাজী নহরুল ইসলামের গানকে শুদ্ধভাবে শিক্ষার প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। খালেকুজ্জামান জানালেন, তারা অনলাইন ক্লাস শুরু করবেন কবির জন্মজয়ন্তী তেকেই। যেখানে বিশ্বব্যাপী নজরুল প্রেমি মানুষ নিখচরায় শুদ্ধ নজরুল সঙ্গীত শিখতে পারবেন এবং কবির বিষয়ে বিশদ জানতে পারবেন।

নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ তথ্যচিত্র ‘তবু আমারে দেব না ভুলিতে’। সুজন আহমেদের গ্রন্থনা ও নির্মাণে এই তথ্যচিত্রটিতে তুলে ধরা হয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের শৈশব, শিক্ষাজীবন, সাহিত্যজীবন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, সঙ্গীতজীবনসহ সমগ্র জীবনচর্চা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘ জন্মজয়ন্তীতে লাখো প্রাণের শ্রদ্ধা’

আপডেট সময় : ০৩:৩৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১

অসম্প্রদায়িক, মানবতা ও চেতনার কবি কাজী নজরুল ‘তবু আমারে দেব না ভুলিতে’ 

কবির জন্মজয়ন্তীর আগের দিনেই কবিতা আবৃত্তি করে পাঠালো সুস্মিতা। তেমনি সাত সমুদ্র-তের নদীর দূরের নিউজার্সি শহর থেকে বন্ধু শিবানি পাঠালো দুখু মিয়া কবিতাটি। আমার জীবন চলার পথপদর্শক কবিকে নিবেদন করে দুই বন্ধুর দুটো কবিতা ছিলো কবির জন্মজয়ন্তীতে সবচেয়ে বড় পাওনা। কবির সমাধিতে কাজ শেষে ফিরেই এডিটিং টেবিলে।

সুস্মিতাকে কল করা হলে ও বললো দুপুরের খাবার খাবে। আমারও মনে হলো-তাইতো সকাল থেকে একটু জল ছাড়াতো আর কিছু খাওয়া হয়নি। এক ফাঁকে বন্ধু শিবানির সঙ্গেও কথা হয়ে গেলো। কবিকে নিয়ে যেন দুই বন্ধুর কথা আর ফুরোয় না। আমি তখন এডিটিং টেবিলে। বললাম কবিতা পাঠিয়ে বিছানায় যাও। হাতে কাজ।

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি। ১৮৯৯ সালের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের চুরুলিয়া গ্রামে তার জন্ম। তার ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি মূলত প্রেম-দ্রোহ, সাম্য-মানবতা ও শোষিত মানুষের মুক্তির কবি। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক নজরুল সাহিত্যের শাখা-প্রশাখায় ছিলো তার বিচরণ। বিচক্ষণ ও বাস্তববাদি কবি ছিলেন নজরুল।

কবিতা, গল্প-উপন্যাস, হাম-নাত, শ্যামা সংঙ্গীত কোন বাণী আসেনি তার কলমে? এই ভাবনা থেকেই বলতে হয়, ‘তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।’

করোনা কালেও জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে হাজারো মানুষের পথচারণায় মুখর ছিলো তার সমাধিস্থল। তবে সবটাই হয়েছে, সাবধানতা অবলম্বন করেই। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম এবং টেলিভিশনে এদিনে বিশেষ অনুষ্ঠান মালার আয়োজন রয়েছে। বিশেষ নিবন্ধন প্রকাশ করেছে সংবাদপত্রগুলো ।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির জন্মজয়ন্তীতে বাণী দিয়েছেন। মূলত বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই কবি স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।

কবি নজরুলকে বিশ্বে তুলে ধরার  প্রয়াস থেকেই কাজ করে চলা প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘বাঁশরী’। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার খালেকুজ্জামান জানালেন, বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ পূর্ণ হবে ডিসেম্বর নাগাদ। জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন স্থানে লাখো কন্ঠে বিদ্রোহী কবিতা পাঠ আয়োজন করা হবে। গেল কয়েক বছর আগে বিদ্রোহী কবিতা নিয়ে বাংলাদেশে এক নতুন ধারার আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন খালেকুজ্জামান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ময়দানে লাখো কন্ঠে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা পাঠ ছিলো উপমহাদেশে এক নজির গড়া আযোজন। যা করতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশই পারে যে কোন অসম্ভবকে সম্ভব করতে। বাঁশরী তার যাদুর বাশি বাজিয়ে হাজারো মানুষকে অসম্প্রদায়িক ও মানবতার কবি কাজী নহরুল ইসলামের গানকে শুদ্ধভাবে শিক্ষার প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। খালেকুজ্জামান জানালেন, তারা অনলাইন ক্লাস শুরু করবেন কবির জন্মজয়ন্তী তেকেই। যেখানে বিশ্বব্যাপী নজরুল প্রেমি মানুষ নিখচরায় শুদ্ধ নজরুল সঙ্গীত শিখতে পারবেন এবং কবির বিষয়ে বিশদ জানতে পারবেন।

নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ তথ্যচিত্র ‘তবু আমারে দেব না ভুলিতে’। সুজন আহমেদের গ্রন্থনা ও নির্মাণে এই তথ্যচিত্রটিতে তুলে ধরা হয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের শৈশব, শিক্ষাজীবন, সাহিত্যজীবন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, সঙ্গীতজীবনসহ সমগ্র জীবনচর্চা।