বিদেশে বন্ধু থাকবে প্রভু থাকবে না: শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি

- আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ ৬২ বার পড়া হয়েছে
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে প্রভু থাকবেনা। ভারতের কারণে সার্ক আজ অকার্যকর। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগও সমানভাবে দায়ী। বিএনপি আসলে আবার সার্ক গতিশীল হবে। বিশ্বের প্রতিটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে আলাদা পলিসি হবে।
বিএনপি ক্ষমতায় আসলে মিডিয়া মুক্তমনে কাজ করবে। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স-এ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন এ্যানি চৌধুরী।
এসময় এ্যানি চৌধুরী বলেন, এরশাদ ও হাসিনা স্বৈরাচার ছিল। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল দাবি করলেও তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা ভারতে আরাম-আয়েশে ছিল। আওয়ামী লীগ কখনো জনমানুষের দল ছিল না। কিন্তু আওয়ামীলীগ স্বৈরাচারের পাশাপাশি কর্তৃত্ববাদী ছিল। দেশ ধ্বংসে এরশাদের চেয়ে আওয়ামী লীগ এগিয়ে। এ্যানি চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ ব্যক্তিগত দুর্নীতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৫ বছর সাপোর্ট দিয়েছে, বিএনপি করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে এ্যানি বলেন, বিএনপি এমন কাজ করবে না, যেভাবে আওয়ামী লীগ করেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। প্রস্তুতি নিতে সময় নিচ্ছেন।
২৪ এর আন্দোলনটা কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুলাইয়ের আন্দোলন গণঅভূত্থান। বিএনপি একটি দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ দল হিসেবে দেশের সংকটময় মুহূর্তে সঠিক বার্তা দিয়েছে। খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে মানুষকে আশ্বস্ত করেন। বিশেষ করে, আগস্টের ৫, ৬, ৭ ও ৮ তারিখের অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের প্রতি মানুষের ঘৃণা ও হামলার ঘটনায় তারেক রহমান ঐক্যের ডাক দিয়ে সব রাজনৈতিক দল ও দেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ, আইনশৃঙ্খলার অবনতিসহ বিভিন্ন কারণেই দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দরকার। যারা নির্বাচন বিলম্বিত করবে তাদের জনপ্রিয়তা কমবে। যারা দেরিতে নির্বাচন চান তারা মূলত মাঠ সাজিয়ে আরো বেশি কাজ করতে চান। ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে চান। এজন্য তাদের সময় দরকার। এ কারণেই তারা নির্বাচন দেরিতে চায়।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে মিট দ্য রিপোর্টার্স সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
এ্যানি আরও বলেন, গত ১৭ বছরের ‘দুঃশাসন’ সত্ত্বেও, তারেক রহমানের দূরদর্শিতায় দেশে বড় ধরনের কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তারেক রহমানের প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও সম্মানের মূল কারণ এটাই এবং এ আস্থা থেকেই বিএনপি ভরসা করে যে, আগামী দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এ্যানি অভিযোগ করেন, আওয়ামী সরকার ‘রক্তচক্ষু’ দেখিয়ে শুধু বিএনপি নয়, দেশের সব রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষকে ঘায়েল করেছে, যার ফলে দেশের রাজনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং স্বাভাবিক রাজনৈতিক চর্চার কোনো সুযোগ ছিল না। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ভোটের কোনো পরিবেশ ছিল না, ২০১৮ সালে রাতের আঁধারে ভোট হয়েছে এবং ২০২৪ সালে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচন করা হয়েছে। তার মতে, স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ কখনোই প্রকৃত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী ছিল না।
এ্যানি চৌধুরী বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলকে গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নমুখী হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান নিজের হাতে অস্ত্র ধরে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের সূচনা করেছেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন। আর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের সূচনা হয়। তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান বা খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে কোনো ফ্যাসিবাদ, কর্তৃত্ববাদ বা স্বৈরাচারী মনোভাব ছিল না।