ঢাকা ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বাংলার সমৃদ্ধ লোকজ সংস্কৃতিকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে ডিজিটাইজ অপরিহার্য : মোস্তাফা জব্বার

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১ ১৮৮ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মৈমনসিংহ গীতিকাসহ বাংলার লোকজ সংস্কৃতির যে সমৃদ্ধ রয়েছে, তা বিশ্ব পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দিতে প্রচলিত ধারার বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিজিটালাইজ সংস্কৃতির বিকল্প নেই। আর এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। ‘নেত্রকোণার বাউলা গান’ শিরোনামের বইয়ের প্রকাশনা আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মঙ্গলবার ঢাকা বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে ৫৫ জন বাউলের ২ হাজার গান নিয়ে বইটি প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু. সংস্কৃত বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল, সাবেক সচিব মাসুদ সিদ্দিকী এবং বইটির সম্পাদক ও বাউল গান সংগ্রাহক কেন্দুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বক্তৃতা করেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘নেত্রকোণার বাউলা গান’ বইটিকে বাংলার লোকজ সাহিত্যের একটি সমৃদ্ধ ভান্ডার আখ্যায়িত করে বলেন, চন্দ্রকুমার দে, দ্বীনেশ চন্দ্র সেনের রত্মভান্ডার মৈমনসিংহ গীতিকার পর নেত্রকোণার বাউলা গান সংকলনটি লোকজ সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য গর্বের ধন। ভৈরব বাজার থেকে উত্তরে গারো পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষের জীবনধারা বৈচিত্রময়। সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই বর্ষায় লম্বা অবসর সময়ে বাউল গান এখানকার মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্দ অংশ।

বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, লেখাপড়া নেই, কিন্তু আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে বাউলেরা যে গান রচনা করেন ও সুর আরোপ করেন তা মাটি থেকে উঠে আসা সুর। এটি যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পৃথিবী জয় করতে পারবে বলে মনে করেন কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রী বাউল গান বইটি প্রতিটি অঞ্চলে সাংস্কৃতিক কর্মীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, বাউল গানের সুর, কথা, বাণীর গভীরতা সোঁদা মাটির সঙ্গে যুক্ত। এর আবেদনে অন্তরকে নাড়া দেয়, অন্তর কেঁপে উঠে বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা সাহিত্যের সাবেক ছাত্র মোস্তাফা জব্বার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ বেয়ে বিশ্ব সাহিত্য ভান্ডারে এটি ছড়িয়ে দিতে মন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী জানান ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্যোগে লোকজ সাহিত্যের রত্মভান্ডার খ্যাত মৈমনসিংহ গীতিকা পুনমুদ্রন করা হচ্ছে।

সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেত্রকোণার লোকজ সাহিত্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। মৈমনসিংহ গীতিকার সিংহভাগ এখানকার মানুষ প্রাণ খুলে গাইতে পারে। মহুয়া-মলুয়া উপখ্যান নেত্রকোণা অঞ্চলের বলে তিনি উল্লেখ করেন। বইটির সম্পাদক নুরুল ইসলামের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, নুরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের সম্পদ তৈরি করেছেন।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চল লোকজ সংস্কৃতির জন্য প্রসিদ্ধ। লোকগানের কিংবদন্তি পুরুষ শাহ আবদুল করিম, রাধারমণ, দূরবীণ শাহ নেত্রকোণার বাউল গান দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এমনকি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বাউল গানে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তিনি তাঁর কবিতা ও গানে বাউল গানের মর্মবাণী ও সুর সচেতনভাবে ব্যবহার করেছেন।

সভাপতির বক্তৃতায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ৫৫ জন বাউলের ২ হাজার গান সংগ্রহ ও সম্পাদনা বইটির সম্পাদক নুরুল ইসলামের অসাধারণ কাজ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বাংলার লোকসাহিত্যের পাদপীঠ বৃহত্তর ময়মনসিংহের কেন্দুয়ায় একটি লোক সাহিত্য জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার সমৃদ্ধ লোকজ সংস্কৃতিকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে ডিজিটাইজ অপরিহার্য : মোস্তাফা জব্বার

আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১

মৈমনসিংহ গীতিকাসহ বাংলার লোকজ সংস্কৃতির যে সমৃদ্ধ রয়েছে, তা বিশ্ব পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দিতে প্রচলিত ধারার বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিজিটালাইজ সংস্কৃতির বিকল্প নেই। আর এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। ‘নেত্রকোণার বাউলা গান’ শিরোনামের বইয়ের প্রকাশনা আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মঙ্গলবার ঢাকা বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে ৫৫ জন বাউলের ২ হাজার গান নিয়ে বইটি প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু. সংস্কৃত বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল, সাবেক সচিব মাসুদ সিদ্দিকী এবং বইটির সম্পাদক ও বাউল গান সংগ্রাহক কেন্দুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বক্তৃতা করেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘নেত্রকোণার বাউলা গান’ বইটিকে বাংলার লোকজ সাহিত্যের একটি সমৃদ্ধ ভান্ডার আখ্যায়িত করে বলেন, চন্দ্রকুমার দে, দ্বীনেশ চন্দ্র সেনের রত্মভান্ডার মৈমনসিংহ গীতিকার পর নেত্রকোণার বাউলা গান সংকলনটি লোকজ সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য গর্বের ধন। ভৈরব বাজার থেকে উত্তরে গারো পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষের জীবনধারা বৈচিত্রময়। সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই বর্ষায় লম্বা অবসর সময়ে বাউল গান এখানকার মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্দ অংশ।

বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, লেখাপড়া নেই, কিন্তু আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে বাউলেরা যে গান রচনা করেন ও সুর আরোপ করেন তা মাটি থেকে উঠে আসা সুর। এটি যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পৃথিবী জয় করতে পারবে বলে মনে করেন কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রী বাউল গান বইটি প্রতিটি অঞ্চলে সাংস্কৃতিক কর্মীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, বাউল গানের সুর, কথা, বাণীর গভীরতা সোঁদা মাটির সঙ্গে যুক্ত। এর আবেদনে অন্তরকে নাড়া দেয়, অন্তর কেঁপে উঠে বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা সাহিত্যের সাবেক ছাত্র মোস্তাফা জব্বার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ বেয়ে বিশ্ব সাহিত্য ভান্ডারে এটি ছড়িয়ে দিতে মন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী জানান ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্যোগে লোকজ সাহিত্যের রত্মভান্ডার খ্যাত মৈমনসিংহ গীতিকা পুনমুদ্রন করা হচ্ছে।

সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেত্রকোণার লোকজ সাহিত্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। মৈমনসিংহ গীতিকার সিংহভাগ এখানকার মানুষ প্রাণ খুলে গাইতে পারে। মহুয়া-মলুয়া উপখ্যান নেত্রকোণা অঞ্চলের বলে তিনি উল্লেখ করেন। বইটির সম্পাদক নুরুল ইসলামের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, নুরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের সম্পদ তৈরি করেছেন।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চল লোকজ সংস্কৃতির জন্য প্রসিদ্ধ। লোকগানের কিংবদন্তি পুরুষ শাহ আবদুল করিম, রাধারমণ, দূরবীণ শাহ নেত্রকোণার বাউল গান দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এমনকি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বাউল গানে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তিনি তাঁর কবিতা ও গানে বাউল গানের মর্মবাণী ও সুর সচেতনভাবে ব্যবহার করেছেন।

সভাপতির বক্তৃতায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ৫৫ জন বাউলের ২ হাজার গান সংগ্রহ ও সম্পাদনা বইটির সম্পাদক নুরুল ইসলামের অসাধারণ কাজ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বাংলার লোকসাহিত্যের পাদপীঠ বৃহত্তর ময়মনসিংহের কেন্দুয়ায় একটি লোক সাহিত্য জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।