অনিরুদ্ধ
১৯৬৫ সাল পর্যন্ত নৌবন্দরটি চালু ছিল। স্থানীয় বলেন, বসন্তপুর ছিলসিমৃদ্ধ নৌবন্দর। তৎকালীন পাকিন্তান এবং ভারতের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ব্যস্ততম বন্দর ছিল এটি। কিন্তু ৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর বন্ধ হয়ে নৌ-বন্দরটি। সেই সঙ্গে ইছামতির জলে মিলিয়ে যায় মানুষের কোলাহল। সীমান্তবর্তী ইছামতী-কালিন্দী ও কাকশিয়ালী নদীর মোহনায় সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জের বসন্তপুর নৌবন্দর।
বসন্তপুর নৌবন্দর চালু হলে কলকাতার হলদিয়া বন্দর, খিদিরপুর ডক, বসিরহাট, হাসনাবাদ থেকে নৌপথে সাশ্রয়ীমূল্যে আমদানি ও রপ্তানি করা সম্ভব হবে। অত্যন্ত সম্ভবনাময় এই নৌবন্দরটি ঘিরে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বেধে আছেন। এমনটিই জানালেন, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক এবং বসন্তপুর নদী বন্দর বিষয়ক সাবকমিটির আহ্বায়ক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন।
[caption id="attachment_26264" align="alignnone" width="1021"] সন্তপুর নৌবন্দর সাব-কমিটির আহ্বায়ক ও সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহম্মেদ স্বপন[/caption]
বলেন, বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন মান্দার বাড়িয়া সি-বিচ, হেরোইন পয়েন্ট ও দুবলারচর হয়ে রায়মঙ্গলের মধ্য দিয়ে ডায়মন্ড হারবার, পূর্ব-মেদিনীপুরের বন্দর এবং দীঘা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত দুদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে।
বসন্তপুর নদী বন্দর স্থাপন প্রসঙ্গে এজাজ আহমেদ স্বপন বলনে, ২০২১ সালে নৌবন্দরটি চালু করতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে চিঠি লিখেন। পাক ভারত যুদ্ধের কারণে বসন্তপুর নদী বন্দর স্থাপনের কার্যক্রম চাপা পড়লে সাতক্ষীরার আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নদী বন্দর স্থাপনের দাবিতে নৌপরিবহন মন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বসন্তপুর নৌবন্দরটি চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন স্বপন।
এজাজ আহমেদ স্বপনের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নৌবন্দরটি চালু হচ্ছে। ১৩ নভেম্বর খুলনা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভায় উপস্থিত হয়ে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের বসন্তপুর নদীবন্দরের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের ৮ নভেম্বরের এক স্মারকপত্রে বিষয়টি সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।
এজাজ আহমেদ জানান, এই নৌবন্দরের মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্য হতো ভারতের সঙ্গে। তখন বসন্তপুর ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করা যেত। এ ছাড়া সাতক্ষীরায় উৎপাদিত মাছ, কাঠ ও কাঠের তৈরি সামগ্রীসহ স্থানীয়ভাবে উদপাদিত বিভিন্ন পণ্য ভারতে রপ্তানি হতো।
[caption id="attachment_26267" align="alignnone" width="1063"] বসন্তপুর কাস্টামস অফিস[/caption]
বন্দরটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন। স্বপন জানালেন, বসন্তপুর নদীবন্দর কালিগঞ্জ তথা বাংলাদেশের ইতিহাসের সাক্ষী। এই নদীবন্দর পুনরায় চালুর মধ্য দিয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমৃদ্ধ হবে।
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীরা মতে, দ্রুত নদী বন্দর স্থাপন হলে সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণবঙ্গের মৎস্য ব্যবসায়ীসহ কৃষিপণ্য উৎপাদন, বিপণন ও আমদানি রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা স্বস্তি ফিরে পাবেন। কৃষক তথা উৎপাদনকারী তাদের উৎপাদিত মৎস্য, আম ও কৃষিজাত পণ্য দ্রব্যের ন্যায্যমূল্য পাবেন। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে সাতক্ষীরাসহ দেশের অসংখ্য বেকারের।