ঢাকা ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের সুরক্ষা দেওয়াল সুন্দরবনে ১৯ বছরে ২৫ বার আগুনে পুড়েছে গেছে ৮১ একর বনভূমি

ভয়েস রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৯:৫২:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মে ২০২১ ১৯৮ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সুন্দরবনে আগুন ছবি সংগ্রহ

বাংলাদেশের ফুস ফুস সুন্দরবনে কেন বার বার আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে! নেপথ্যের রহস্যই বা কি? বিগত ১৯ বছরে ২৫ বার আগুন লেগেছে। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়েছে গেছে প্রায় ৮১ একর বনভূমি। তাতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৩ টাকা। সুন্দরবন সংশ্লিষ্টরদের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সর্বনাশা আগুনের লেলিহান শিখা যেন ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের পিছু ধাওয়া করে ফিরছে। সুযোগ পেলেই আগুণের লেলিহান শিখায় একের পর এক ধ্বংস করে এই আগুন। কিভাবে লাগে আগুন। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বলতে গেলে একই এলাকায় বারং বার আগুন। একের পর এক আগুনে ক্ষতবিক্ষত বাংলাদেশ রক্ষার দেওয়া সুন্দরবন। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়েই চলেছে জীববৈচিত্র্যের।

বনবিভাগের সূত্রের খবর, ২০০২ থেকে ২০২১ সনের ৩ মে পর্যন্ত বিশ বছরে আগুনে পুড়েছে সুন্দরবনের প্রায় ৭২ একর বনাঞ্চল।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ সূত্রের খবর, ২০০২ সালে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কটকায় একবার। একই রেঞ্জের নাংলী ও মান্দারবাড়িয়ায় দুইবার। ২০০৫ সালে পচাকোড়ালিয়া, ঘুটাবাড়িয়ার সুতার খাল এলাকায় দুইবার। ২০০৬ সালে তেড়াবেকা, আমুরবুনিয়া, খুরাবাড়িয়া, পচাকোড়ালিয়া ও ধানসাগর এলাকায় পাঁচবার অগ্নিকান্ডের ঘটনা।

২০০৭ সালে পচাকোড়ালিয়া, নাংলি ও ডুমুরিয়ায় তিনবার, ২০১০ সালে গুলিশাখালীতে একবার। ২০১১ সালে নাংলীতে দুইবার। ২০১৪ সালে গুলিশাখালীতে একবার। ২০১৬ সালে নাংলী, পচাকোড়ালিয়া ও তুলাতলায় তিনবার। ২০১৭ সালে মাদ্রাসারছিলায় একবার এবং চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ধানসাগর এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ সুন্দরবনের দাসের ভারনী এলাকায় আগুন লাগে গত সোমবার অর্থাৎ ২ মে সকাল ১১টায়। পরদিন মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ৩০ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রনের কথা জানায় বন বিভাগ ও ফায়ার সাভির্স। পরে সন্ধ্যায় সুন্দরবন ত্যাগ করে ফায়ার সাভির্সের ৩টি ইঞ্জিন।

সর্বশেষ বুধবার ভোর থেকে একই স্থানে ফায়ার লাইনের মধ্যে ধোয়ার কুন্ডলী পাকিয়ে ফের আগুন লাগে। তাতে গাছপালা ও লতাগুল্ম দাউ-দাউ করে জ্বলতে থাকে। আগুনের খবর পেয়ে সকালে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের শরণখোলা থেকে একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ শুরু করে।

পরবর্তীতে মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাটের ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইঞ্জন সুন্দরবনে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আগুন নিভানোর কাজে যুক্ত হয়। স্থানটি লোকালয় থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার বনের গহীনে দাসের ভারানী এলাকায়।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জয়নাল আবেদীন তৃতীয় দিনের মতো শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারনী এলাকায় আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শরনখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাটের ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইঞ্জিনসহ বন বিভাগ ও সুন্দরবন সুরক্ষায় ভিটিআরসি টিমের সদস্যরা সুন্দরবনে আগুন নিভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে বন বিভাগ। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে (ডিএফও) প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বাংলাদেশের সুরক্ষা দেওয়াল সুন্দরবনে ১৯ বছরে ২৫ বার আগুনে পুড়েছে গেছে ৮১ একর বনভূমি

আপডেট সময় : ০৯:৫২:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মে ২০২১

সুন্দরবনে আগুন ছবি সংগ্রহ

বাংলাদেশের ফুস ফুস সুন্দরবনে কেন বার বার আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে! নেপথ্যের রহস্যই বা কি? বিগত ১৯ বছরে ২৫ বার আগুন লেগেছে। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়েছে গেছে প্রায় ৮১ একর বনভূমি। তাতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৩ টাকা। সুন্দরবন সংশ্লিষ্টরদের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সর্বনাশা আগুনের লেলিহান শিখা যেন ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের পিছু ধাওয়া করে ফিরছে। সুযোগ পেলেই আগুণের লেলিহান শিখায় একের পর এক ধ্বংস করে এই আগুন। কিভাবে লাগে আগুন। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বলতে গেলে একই এলাকায় বারং বার আগুন। একের পর এক আগুনে ক্ষতবিক্ষত বাংলাদেশ রক্ষার দেওয়া সুন্দরবন। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়েই চলেছে জীববৈচিত্র্যের।

বনবিভাগের সূত্রের খবর, ২০০২ থেকে ২০২১ সনের ৩ মে পর্যন্ত বিশ বছরে আগুনে পুড়েছে সুন্দরবনের প্রায় ৭২ একর বনাঞ্চল।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ সূত্রের খবর, ২০০২ সালে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কটকায় একবার। একই রেঞ্জের নাংলী ও মান্দারবাড়িয়ায় দুইবার। ২০০৫ সালে পচাকোড়ালিয়া, ঘুটাবাড়িয়ার সুতার খাল এলাকায় দুইবার। ২০০৬ সালে তেড়াবেকা, আমুরবুনিয়া, খুরাবাড়িয়া, পচাকোড়ালিয়া ও ধানসাগর এলাকায় পাঁচবার অগ্নিকান্ডের ঘটনা।

২০০৭ সালে পচাকোড়ালিয়া, নাংলি ও ডুমুরিয়ায় তিনবার, ২০১০ সালে গুলিশাখালীতে একবার। ২০১১ সালে নাংলীতে দুইবার। ২০১৪ সালে গুলিশাখালীতে একবার। ২০১৬ সালে নাংলী, পচাকোড়ালিয়া ও তুলাতলায় তিনবার। ২০১৭ সালে মাদ্রাসারছিলায় একবার এবং চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ধানসাগর এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ সুন্দরবনের দাসের ভারনী এলাকায় আগুন লাগে গত সোমবার অর্থাৎ ২ মে সকাল ১১টায়। পরদিন মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ৩০ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রনের কথা জানায় বন বিভাগ ও ফায়ার সাভির্স। পরে সন্ধ্যায় সুন্দরবন ত্যাগ করে ফায়ার সাভির্সের ৩টি ইঞ্জিন।

সর্বশেষ বুধবার ভোর থেকে একই স্থানে ফায়ার লাইনের মধ্যে ধোয়ার কুন্ডলী পাকিয়ে ফের আগুন লাগে। তাতে গাছপালা ও লতাগুল্ম দাউ-দাউ করে জ্বলতে থাকে। আগুনের খবর পেয়ে সকালে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের শরণখোলা থেকে একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ শুরু করে।

পরবর্তীতে মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাটের ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইঞ্জন সুন্দরবনে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আগুন নিভানোর কাজে যুক্ত হয়। স্থানটি লোকালয় থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার বনের গহীনে দাসের ভারানী এলাকায়।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জয়নাল আবেদীন তৃতীয় দিনের মতো শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারনী এলাকায় আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শরনখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাটের ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইঞ্জিনসহ বন বিভাগ ও সুন্দরবন সুরক্ষায় ভিটিআরসি টিমের সদস্যরা সুন্দরবনে আগুন নিভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে বন বিভাগ। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে (ডিএফও) প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।