বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা ও সমাজে হানাহানি তৈরি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হতে হবে : তথ্যমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ১২:০৫:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২০ ৪৯৭ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নানা ইস্যু তৈরি করে যারা বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা ও সমাজে হানাহানি তৈরি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হতে হবে। সাংবাদিকরা দেশের মানুষকে পথ দেখায়। আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে যেমন সাংবাদিকদের অন্যন্য ভূমিকা ছিল, ঠিক একই সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামেও সাংবাদিকদের অনবদ্য ভূমিকা ছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার জন্য সাংবাদিকদের লেখনি, পত্রিকার সংবাদ মানুষকে সাহস ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে। কোন ইস্যুতে বঙ্গবন্ধুর অবমাননা সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, মুজিববর্ষ আমরা যেভাবে পালন করতে চেয়েছিলাম, করোনার কারণে হয়তো সেভাবে পালন করতে পারছি না।
মুজিববর্ষের শেষের দিকে এসে নানাভাবে নানা প্রসঙ্গ টেনে এনে বিতর্ক তৈরি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। একটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আজকে সমাজে অস্থিরতা তৈরি করার অপচেষ্টা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শনিবার মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও সাংবাদিকতা বিষয়ক চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবকে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক, প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ও বিএফইউজে’র যুগ্ন মহাসচিব এমএ মজিদ, বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা সমাজকে পিছিয়ে দিতে চায়, যারা মধ্যযুগের সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়, তাদেরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদের বিরুদ্ধেও আজ কলম নিয়ে সোচ্চার হবার সময় এসেছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত জাতিকে স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত করেছেন। হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালি জাতিসত্ত্বা সৃষ্টি হবার পর বাঙালি কখনো স্বাধীন ছিল না। বাঙালি সার্বিকভাবে কখনো নিজেদের শাসন করতে পারেনি। বাংলা ভাষাভাষি অঞ্চল নিয়ে স্বাধীন রাজ্য কখনো ছিল না। যা এসেছে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব হলেও চলনে বলনে কথনে বাঙালি ছিলেন না। তার ও রাজ ভাষা ছিল ফার্সি, সৈন্যদের মধ্যে কিছু উর্দু চালু ছিল। হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুই প্রথম স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত করে বাঙালিদের জন্য স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাঙালিকে অতীতে বহুজন উদ্বীপ্ত করেছেন, স্বাধীনতার জন্য আহবান জানিয়েছেন, কিন্তু সফল হননি। যেখানে মানুষ নিজের প্রাণটাকে সবচে বেশি ভালোবাসে, স্বাধীনতার জন্য সেই প্রাণ বিসর্জন দিতে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এটি শুধু বাঙালির ক্ষেত্রে নয়, পুরো বিশে^র প্রেক্ষাপটে এমন খুব কম নেতা আছেন, যারা মানুষকে এভাবে উদ্বীপ্ত করতে পেরেছেন নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করে দেয়ার জন্য।
এজন্য বঙ্গবন্ধু একদিকে যেমন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ঠিক একইভাবে তিনি বিশ^ ইতিহাসে সেরা নেতাদের মধ্যে একজন। তিনি শুধুমাত্র বাংলাদেশের বাঙালিদের নেতা নন, বঙ্গবন্ধু পুরো বিশে^র সমস্ত বাঙালিদের নেতা। বাঙালিদের জন্য তিনি বাংলাদেশ নামের জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন বলেন তথ্যমন্ত্রী।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে পাঠকের যেন কোন বিরোধ সৃষ্টি না হয়, তা নিরসনের লক্ষ্যেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের পর্যায়ে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি আগামী সংসদ অধিবেশনে সেটি উপস্থাপনের জন্য। এ আইন পাশ হলে প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা অনেক বাড়বে। এতে জনগণ এবং একই সঙ্গে সাংবাদিকরাও প্রেস কাউন্সিলের দ্বারস্থ হলে প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে পারবেন। প্রেস কাউন্সিল জনগণ, সাংবাদিক এবং সার্বিকভাবে রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করতে পারবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষ আসলে ধীরে ধীরে বই থেকে দুরে সরে যাচ্ছে। বই এখন খুব কম মানুষ পড়ে। আগে কিশোর, শিশু যুবক ও বৃদ্ধদের বই পড়ার অভ্যাস ছিল। তরুনদের মাঝে বই পড়ার অভ্যস আগের মত নেই। সবাই সোশ্যাল মিডিয়াতে বুঁদ হয়ে থাকে, স্মার্ট ফোন নিয়ে বসে থাকে। তিনি বলেন, বই থেকে অনেক দুরে চলে গেছে। বই পড়ার অভ্যাসটা আবারো ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। কারণ নতুন প্রজন্মকে যদি তাদের জীবন সংগ্রামে জয়ী হবার জন্য আমাদের প্রস্তুত করতে হয় তাহলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা ফিরিয়ে আনতে হবে ।