ঢাকা ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সংকট জাতীয় পর্যায়ে তুলে আনার প্রকৌশলী সাংবাদিক সমাজ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:১৪:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩ ৫৮ বার পড়া হয়েছে

প্রয়াত সাংবাদিক অধ্যাপক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরী স্মরণানুষ্ঠান

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘অনন্য আনিস ও সুবাসিত সুভাষ’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠান

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নজির গড়া কর্মকাণ্ডের জন্য আজ তারা আলোচিত। তারা শিক্ষক-সাংবাদিক এবং সমাজ চিন্তক। তাদের সহধর্মীনি যোদ্ধারাও শিক্ষকতার মহান পেশায় নিবেদীত। আলোচিত দুজন সাংবাদিকই আজ প্রয়াত। কিন্তু তাদের আলোকিত জীবনে পথ চলা থেমে নেই। তারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সংকটকে নিজেদের মধ্যে ধারণ করেছেন। সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে কাজ করেছেন। যেকারণে আজকের ব্যস্ততম সময়েও তাদের অনুকরণীয় কাজের স্বীকৃতি তারা পেয়েছেন। তারাই আমাদের সমাজের শুভবোধের সারথি।

আলোচিত দু’জন শিক্ষক-সাংবাদিক বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা অধ্যাপক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরী। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নানামুখী সমস্যাকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে আনার কারিগর ছিলেন তারা।

প্রয়াত এই দুই সাংবাদিকের স্মরণ সভা হলো ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেই উপলক্ষে ‘অনন্য আনিস ও সুবাসিত সুভাষ’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠানে দুটি বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করা হয়।

অধ্যাপক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরী কর্মজীবনে যে ভূমিকা রেখে গিয়েছেন আজকের দিনে তা জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় ওঠে এসেছে।


সম্মান জানিয়ে একমিনিটের নীরবতা পালন

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত’র সভাপতিতে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রতিথযশা শিক্ষক আ আ স ম আরেফীন সিদ্দিক।

সাংবাদিক নিখল ভদ্রের সঞ্চলনায় শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে সাংবাদিক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরীর সুহৃদদের পক্ষ থেকে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনিসুর রহিমের স্ত্রী অধ্যক্ষ ড. দিলারা বেগম, সুভাষ চৌধুরীর স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মিনতি চৌধুরী, সংস্কৃতি কর্মী পুলক রাহা, একাত্তর টিভি’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ হ ম তারেক উদ্দিন, সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, স্বদেশ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, পত্রদূত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেজুতি, সাতক্ষীরার সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন প্রমূখ প্রয়াতদের বিষয়ে নিজেদের অনুভূতির কথা তুলে ধরেন।

আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মফঃস্বল সাংবাদিকদের জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতির জন্য শুভ সূচনা হলো। দু’জনই তৃণমূল সাংবাদিকতায় থেকেও জাতীয় পর্যায়ে স্থান করে নেওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সমাজ প্রকৌশলী হিসেবে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তাদেরকে অনুসরণের জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শ্যামল দত্ত বলেন, প্রায়ত দুই বন্ধু সাতক্ষীরায় আধুনিক সাংবাদিকতার নবধারা সৃষ্টি করেছিলেন। তারা ছিলেন সৃজনশীল ব্যক্তি, নিরহংকার ও নির্লোভ মানুষ ও সমাজ সংস্কারক। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।

তারা সাংবাদিক পরিচয়ের বাইরেও শিক্ষাবিদ, শিশু সংগঠক, কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষ ও নাগরিক সমাজের নেতা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছেন। সমাজকে আলোকিত করতে বিশেষ অবদানের জন্য রাষ্ট্র তাদেরকে স্বীকৃতি দিবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আনিসুর রহিম গত ৩ জানুয়ারি স্বজনদের সঙ্গে সুন্দরবন ভ্রমণকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্রের সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। সাহসী সাংবাকিতার কারণে কয়েক বার হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং ভূমিহীন ও নাগরিক আন্দোলনে আজীবন সক্রিয় ছিলেন তিনি।

সাতক্ষীরার ডায়েরিখ্যাত সুভাষ চৌধুরী ৩৬ বছর ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে যেমন জনপ্রিয় ছিলেন, তেমনি সাংবাদিকতায় ছিলেন পথিকৃত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দৈনিক যুগান্তর ও এনটিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। সুভাষ চৌধুরী সাংবাদিকতার কারণে ১৯৮৮ সালে কারারুদ্ধ হন। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালের বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সংকট জাতীয় পর্যায়ে তুলে আনার প্রকৌশলী সাংবাদিক সমাজ

আপডেট সময় : ১০:১৪:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩

‘অনন্য আনিস ও সুবাসিত সুভাষ’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠান

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নজির গড়া কর্মকাণ্ডের জন্য আজ তারা আলোচিত। তারা শিক্ষক-সাংবাদিক এবং সমাজ চিন্তক। তাদের সহধর্মীনি যোদ্ধারাও শিক্ষকতার মহান পেশায় নিবেদীত। আলোচিত দুজন সাংবাদিকই আজ প্রয়াত। কিন্তু তাদের আলোকিত জীবনে পথ চলা থেমে নেই। তারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সংকটকে নিজেদের মধ্যে ধারণ করেছেন। সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে কাজ করেছেন। যেকারণে আজকের ব্যস্ততম সময়েও তাদের অনুকরণীয় কাজের স্বীকৃতি তারা পেয়েছেন। তারাই আমাদের সমাজের শুভবোধের সারথি।

আলোচিত দু’জন শিক্ষক-সাংবাদিক বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা অধ্যাপক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরী। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নানামুখী সমস্যাকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে আনার কারিগর ছিলেন তারা।

প্রয়াত এই দুই সাংবাদিকের স্মরণ সভা হলো ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেই উপলক্ষে ‘অনন্য আনিস ও সুবাসিত সুভাষ’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠানে দুটি বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করা হয়।

অধ্যাপক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরী কর্মজীবনে যে ভূমিকা রেখে গিয়েছেন আজকের দিনে তা জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় ওঠে এসেছে।


সম্মান জানিয়ে একমিনিটের নীরবতা পালন

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত’র সভাপতিতে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রতিথযশা শিক্ষক আ আ স ম আরেফীন সিদ্দিক।

সাংবাদিক নিখল ভদ্রের সঞ্চলনায় শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে সাংবাদিক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরীর সুহৃদদের পক্ষ থেকে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনিসুর রহিমের স্ত্রী অধ্যক্ষ ড. দিলারা বেগম, সুভাষ চৌধুরীর স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মিনতি চৌধুরী, সংস্কৃতি কর্মী পুলক রাহা, একাত্তর টিভি’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ হ ম তারেক উদ্দিন, সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, স্বদেশ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, পত্রদূত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেজুতি, সাতক্ষীরার সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন প্রমূখ প্রয়াতদের বিষয়ে নিজেদের অনুভূতির কথা তুলে ধরেন।

আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মফঃস্বল সাংবাদিকদের জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতির জন্য শুভ সূচনা হলো। দু’জনই তৃণমূল সাংবাদিকতায় থেকেও জাতীয় পর্যায়ে স্থান করে নেওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সমাজ প্রকৌশলী হিসেবে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তাদেরকে অনুসরণের জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শ্যামল দত্ত বলেন, প্রায়ত দুই বন্ধু সাতক্ষীরায় আধুনিক সাংবাদিকতার নবধারা সৃষ্টি করেছিলেন। তারা ছিলেন সৃজনশীল ব্যক্তি, নিরহংকার ও নির্লোভ মানুষ ও সমাজ সংস্কারক। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।

তারা সাংবাদিক পরিচয়ের বাইরেও শিক্ষাবিদ, শিশু সংগঠক, কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষ ও নাগরিক সমাজের নেতা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছেন। সমাজকে আলোকিত করতে বিশেষ অবদানের জন্য রাষ্ট্র তাদেরকে স্বীকৃতি দিবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আনিসুর রহিম গত ৩ জানুয়ারি স্বজনদের সঙ্গে সুন্দরবন ভ্রমণকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্রের সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। সাহসী সাংবাকিতার কারণে কয়েক বার হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং ভূমিহীন ও নাগরিক আন্দোলনে আজীবন সক্রিয় ছিলেন তিনি।

সাতক্ষীরার ডায়েরিখ্যাত সুভাষ চৌধুরী ৩৬ বছর ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে যেমন জনপ্রিয় ছিলেন, তেমনি সাংবাদিকতায় ছিলেন পথিকৃত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দৈনিক যুগান্তর ও এনটিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। সুভাষ চৌধুরী সাংবাদিকতার কারণে ১৯৮৮ সালে কারারুদ্ধ হন। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালের বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হন।