ঢাকা ০১:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রধান বিচারপতি আদালতে বিনা মাস্কে কাউকে প্রবেশে নিষেধ কালোকোর্ট ও গাউন পড়া বিরত করেছেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৪:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মার্চ ২০২১ ১৫০ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব হোসেন

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা

বাংলাদেশে করোনার উর্ধমুখি সংক্রমণ অব্যাহত এবং আক্রান্ত ও মৃত্যুতে রেকর্ড। এরই মধ্যে মোট মৃত্যু ছাড়িয়ে গিয়েছে ৯ হাজারের ওপরে। এই অবস্থায় আসন্ন ঈদে অতি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঢাকা ছাড়তে এবং ঢাকায় প্রবেশ না করার পরামর্শ দিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এরই মধ্যে রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রাজনৈতিক সভা সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত করা নির্দেশনা এসেছে সরকারের তরফে। রাজনৈতিক কর্মকান্ড ঘরোয়াভাবে পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

বিশ্বে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৮৩ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আর মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ লাখ ৫ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে আক্রান্তর দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৩তম এবং মৃতের দিক থেকে ৪০তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৪টি ল্যাবে ২৬ হাজার ৯৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ৫৭৬টি নমুনা।

মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশএ এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং মৃত্যু হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ লাখ ১৭ হাজার ১১৩টি। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৬৩২টি।

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি যা বলেন

মার্চ মাসের গোড়া থেকেই আচমকা করোনার সংক্রমণ ঊর্ধমুখি। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব হোসেন করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে আদালতে প্রবেশের সময় সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে।

বুধবার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরুর সময় আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি একথা বলেন। করোনার পরিস্থিতির কারণে, বিচারগণ ও আইনজীবীদের কালো কোর্ট ও গাউন পড়বে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। এক্ষেত্রে সাদা সার্ট-প্যান্টের সঙ্গে নেকটাই এবং নারী বিচারপতি ও আইনজীবীদের বেলায় সাদা শাড়ি-সালোয়ার কামিজ পড়তে পারবেন।

আদালতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে পরামর্শ দিয়ে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, অন্যথায় সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও মাস্ক না পরার কারণে করোনা বাড়ছে। মাস্ক পরা বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি। এরআগে করোনা প্রতিরোধে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন বিচারক-আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন না পরতে নির্দেশনা জারি করেছে।

বিচারক ও আইনজীবীদের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ড্রেস বিষয়ে গতকাল ৩০ মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মোট মৃত্যু ছাড়িয়ে গেছে ৯ হাজার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশে ৫ হাজার ৩৫৮ জন আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জন। আর দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার ৪৬ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, একদিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা করোনা সংক্রমণ শুরুর পর সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর সোমবার প্রথমবারের মত একদিনে পাঁচ হাজারের বেশি নতুন আক্রান্তর খবর দেয় স্বাস্ধ্য অধিদপ্তর। তাতে করে মোট আক্রান্ত সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে যায়। গত দু’দিনের মাথায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে।

দৈনিক মারা যাওয়ার ঘটনা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গেল বছরের ২৬ অগাস্ট বর্তমানের চেয়ে বেশি সেদিন ৫৪ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা সনাক্ত হবার দশদিনের মাথায় অর্থাৎ ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর গণনা শুরু হয়েছিলো। পরবতীতে সময়ে গেল বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানা যায়। যা একদিনের বাংলাদেশে সর্বোচ্চ।

গত টানা তিনদিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজারের উপরে থাকার পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হারও বেড়ে ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ হয়েছে যা গত ২৪ অগাস্টের পর সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে গত এক দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ২১৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন । তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩৯৯ জন হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

প্রধান বিচারপতি আদালতে বিনা মাস্কে কাউকে প্রবেশে নিষেধ কালোকোর্ট ও গাউন পড়া বিরত করেছেন

আপডেট সময় : ০৭:৪৪:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মার্চ ২০২১

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব হোসেন

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা

বাংলাদেশে করোনার উর্ধমুখি সংক্রমণ অব্যাহত এবং আক্রান্ত ও মৃত্যুতে রেকর্ড। এরই মধ্যে মোট মৃত্যু ছাড়িয়ে গিয়েছে ৯ হাজারের ওপরে। এই অবস্থায় আসন্ন ঈদে অতি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঢাকা ছাড়তে এবং ঢাকায় প্রবেশ না করার পরামর্শ দিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এরই মধ্যে রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রাজনৈতিক সভা সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত করা নির্দেশনা এসেছে সরকারের তরফে। রাজনৈতিক কর্মকান্ড ঘরোয়াভাবে পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

বিশ্বে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৮৩ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আর মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ লাখ ৫ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে আক্রান্তর দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৩তম এবং মৃতের দিক থেকে ৪০তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৪টি ল্যাবে ২৬ হাজার ৯৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ৫৭৬টি নমুনা।

মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশএ এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং মৃত্যু হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ লাখ ১৭ হাজার ১১৩টি। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৬৩২টি।

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি যা বলেন

মার্চ মাসের গোড়া থেকেই আচমকা করোনার সংক্রমণ ঊর্ধমুখি। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব হোসেন করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে আদালতে প্রবেশের সময় সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে।

বুধবার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরুর সময় আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি একথা বলেন। করোনার পরিস্থিতির কারণে, বিচারগণ ও আইনজীবীদের কালো কোর্ট ও গাউন পড়বে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। এক্ষেত্রে সাদা সার্ট-প্যান্টের সঙ্গে নেকটাই এবং নারী বিচারপতি ও আইনজীবীদের বেলায় সাদা শাড়ি-সালোয়ার কামিজ পড়তে পারবেন।

আদালতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে পরামর্শ দিয়ে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, অন্যথায় সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও মাস্ক না পরার কারণে করোনা বাড়ছে। মাস্ক পরা বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি। এরআগে করোনা প্রতিরোধে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন বিচারক-আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন না পরতে নির্দেশনা জারি করেছে।

বিচারক ও আইনজীবীদের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ড্রেস বিষয়ে গতকাল ৩০ মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মোট মৃত্যু ছাড়িয়ে গেছে ৯ হাজার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশে ৫ হাজার ৩৫৮ জন আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জন। আর দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার ৪৬ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, একদিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা করোনা সংক্রমণ শুরুর পর সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর সোমবার প্রথমবারের মত একদিনে পাঁচ হাজারের বেশি নতুন আক্রান্তর খবর দেয় স্বাস্ধ্য অধিদপ্তর। তাতে করে মোট আক্রান্ত সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে যায়। গত দু’দিনের মাথায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে।

দৈনিক মারা যাওয়ার ঘটনা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গেল বছরের ২৬ অগাস্ট বর্তমানের চেয়ে বেশি সেদিন ৫৪ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা সনাক্ত হবার দশদিনের মাথায় অর্থাৎ ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর গণনা শুরু হয়েছিলো। পরবতীতে সময়ে গেল বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানা যায়। যা একদিনের বাংলাদেশে সর্বোচ্চ।

গত টানা তিনদিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজারের উপরে থাকার পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হারও বেড়ে ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ হয়েছে যা গত ২৪ অগাস্টের পর সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে গত এক দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ২১৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন । তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩৯৯ জন হয়েছে।