ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

পৃথিবীতে ফিরে আসার ১৩ দিন পর যা বলেন সুনিতা ও বুচ

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে

সংবাদ সম্মেলনে নাসার নভোচারী নিক হেগ, সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। জনসন স্পেস সেন্টার, ৩১ মার্চ হিউস্টন : সংগ্রহ

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর ৯ মাসের বেশি সময় পর গত ১৮ মার্চ তারা পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। ফেরার ১৩দিন পর সোমবার দুজনেই প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলেন।

নাসা ও স্পেসএক্সের এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে ক্রু-১০। জনসন স্পেস সেন্টারে নাসা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুনিতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর ও ক্রু ১০-এ থাকা তাদের সহকর্মী নিক হেগ স্টারলাইনারসহ নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

সুনিতা উইলিয়ামস বলেছেন, আমরা ফিরেই আসতাম, আমার মনে হয়, এটা মানুষের জানা উচিত। শেষমেশ আমরা ফিরেও এসেছি। এখন আমাদের এ ঘটনা সবাইকে জানাতে হবে কারণ, এটি একটি অনন্য ঘটনা। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

সুনিতা স্বীকার করেছেন, স্টারলাইনারের পরীক্ষামূলক মিশনে যে আলাদা কিছু একটা হবে, তা তারা জানতেন। কিন্তু তাদের বিষয়ে মানুষের এত প্রত্যাশা থাকবে, মানুষ এত মনোযোগ দেবে, তা তারা কেউই আশা করেননি।

এই যাত্রায় আগ্রহের পরিমাণ দেখে তিনি ও বুচ উইলমোর অত্যন্ত সম্মানিত এবং বিনীত বোধ করছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়ে আমরা কাজ করেছি, প্রশিক্ষণ নিয়েছি এবং আশ্চর্যজনক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি।

সুনিতা ও বুচ উভয়েই বলেছেন, স্টারলাইনার খুবই সক্ষম। বুচের মতে, সুযোগ পেলে তারা ভবিষ্যতে এটি আবার ওড়াবেন।

বুচ বলেছেন, আমরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, সেগুলো ঠিক করে ফেলব। এটাকে আবার কার্যকর করে তুলব। বোয়িং ও নাসা সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে যাব।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকাকালে রাজনীতির প্রভাব সম্পর্কে বারবার সুনিতা ও উইলমোরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে নিক হেগ বলেছেন, যখন আমরা মহাকাশে কাজ করি, তখন রাজনীতির কোনো কিছুই অনুভব করি না।

গত জুনে মাত্র আট দিনের এক মিশনে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন দুই নভোচারী বুচ ও সুনিতা। মিশন শেষে পৃথিবীতে ফেরার কথা থাকলেও মহাকাশযানের ত্রুটির কারণে তারা আটকে যান।

পৃথিবীতে তাদের ফেরানো নিয়ে রাজনীতিও শুরু হয়। ট্রাম্প এবং তার উপদেষ্টা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক কোনো প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাজনৈতিক কারণে বুচ ও সুনিতাকে মহাকাশ স্টেশনে ফেলে রেখেছেন।

অবশেষে তাদের ফিরিয়ে আনতে গত ১৪ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ক্রু-১০ নামে একটি মিশন পাঠায় নাসা ও ধনকুবের ইলন মাস্কের মহাকাশ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স।

এই মিশনে ছিলেন নাসার নভোচারী অ্যান ম্যাকক্লেইন, নিকোল আয়েরস, জাপান মহাকাশ অনুসন্ধান সংস্থা জেএএক্সএর নভোচারী তাকুইয়া ওনিশি ও রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের নভোচারী কিরিল পেসকভ।

নাসা ক্রু-৯ মিশন-এর অংশ হিসেবে ক্রু ড্রাগনে ফিরতি যাত্রা শুরু করার ১৭ ঘণ্টা পর এই চার নভোচারী পৃথিবীর আকাশমণ্ডলে প্রবেশ করেন। বাংলাদেশ সময় ১৮ মার্চ দিবাগত রাত ৩টা ৫৭ মিনিটে তাদের বহনকারী ক্যাপসুলটি বিশেষ প্যারাস্যুটের সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূল থেকে প্রায় ৫০ মাইল দূরে সমুদ্রে নেমে আসে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পৃথিবীতে ফিরে আসার ১৩ দিন পর যা বলেন সুনিতা ও বুচ

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর ৯ মাসের বেশি সময় পর গত ১৮ মার্চ তারা পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। ফেরার ১৩দিন পর সোমবার দুজনেই প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলেন।

নাসা ও স্পেসএক্সের এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে ক্রু-১০। জনসন স্পেস সেন্টারে নাসা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুনিতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর ও ক্রু ১০-এ থাকা তাদের সহকর্মী নিক হেগ স্টারলাইনারসহ নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

সুনিতা উইলিয়ামস বলেছেন, আমরা ফিরেই আসতাম, আমার মনে হয়, এটা মানুষের জানা উচিত। শেষমেশ আমরা ফিরেও এসেছি। এখন আমাদের এ ঘটনা সবাইকে জানাতে হবে কারণ, এটি একটি অনন্য ঘটনা। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

সুনিতা স্বীকার করেছেন, স্টারলাইনারের পরীক্ষামূলক মিশনে যে আলাদা কিছু একটা হবে, তা তারা জানতেন। কিন্তু তাদের বিষয়ে মানুষের এত প্রত্যাশা থাকবে, মানুষ এত মনোযোগ দেবে, তা তারা কেউই আশা করেননি।

এই যাত্রায় আগ্রহের পরিমাণ দেখে তিনি ও বুচ উইলমোর অত্যন্ত সম্মানিত এবং বিনীত বোধ করছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়ে আমরা কাজ করেছি, প্রশিক্ষণ নিয়েছি এবং আশ্চর্যজনক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি।

সুনিতা ও বুচ উভয়েই বলেছেন, স্টারলাইনার খুবই সক্ষম। বুচের মতে, সুযোগ পেলে তারা ভবিষ্যতে এটি আবার ওড়াবেন।

বুচ বলেছেন, আমরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, সেগুলো ঠিক করে ফেলব। এটাকে আবার কার্যকর করে তুলব। বোয়িং ও নাসা সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে যাব।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকাকালে রাজনীতির প্রভাব সম্পর্কে বারবার সুনিতা ও উইলমোরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে নিক হেগ বলেছেন, যখন আমরা মহাকাশে কাজ করি, তখন রাজনীতির কোনো কিছুই অনুভব করি না।

গত জুনে মাত্র আট দিনের এক মিশনে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন দুই নভোচারী বুচ ও সুনিতা। মিশন শেষে পৃথিবীতে ফেরার কথা থাকলেও মহাকাশযানের ত্রুটির কারণে তারা আটকে যান।

পৃথিবীতে তাদের ফেরানো নিয়ে রাজনীতিও শুরু হয়। ট্রাম্প এবং তার উপদেষ্টা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক কোনো প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাজনৈতিক কারণে বুচ ও সুনিতাকে মহাকাশ স্টেশনে ফেলে রেখেছেন।

অবশেষে তাদের ফিরিয়ে আনতে গত ১৪ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ক্রু-১০ নামে একটি মিশন পাঠায় নাসা ও ধনকুবের ইলন মাস্কের মহাকাশ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স।

এই মিশনে ছিলেন নাসার নভোচারী অ্যান ম্যাকক্লেইন, নিকোল আয়েরস, জাপান মহাকাশ অনুসন্ধান সংস্থা জেএএক্সএর নভোচারী তাকুইয়া ওনিশি ও রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের নভোচারী কিরিল পেসকভ।

নাসা ক্রু-৯ মিশন-এর অংশ হিসেবে ক্রু ড্রাগনে ফিরতি যাত্রা শুরু করার ১৭ ঘণ্টা পর এই চার নভোচারী পৃথিবীর আকাশমণ্ডলে প্রবেশ করেন। বাংলাদেশ সময় ১৮ মার্চ দিবাগত রাত ৩টা ৫৭ মিনিটে তাদের বহনকারী ক্যাপসুলটি বিশেষ প্যারাস্যুটের সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূল থেকে প্রায় ৫০ মাইল দূরে সমুদ্রে নেমে আসে।