পুলিশকেই প্রতিপক্ষ বানানো হয় কেন ?
- আপডেট সময় : ১২:১৬:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মার্চ ২০২১ ২৪৯ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
পুলিশের দায়িত্বই হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। সাধারণের জানমার রক্ষায় দায়িত্ব পাল করতে গিয়ে বার বার প্রতিদপক্ষ বানানো অপচেষ্টা করা হয়, কেন? একজন সুস্থ মানুষের সামনে এমন প্রশ্নটিই ঘুরপাক খাবে। এটাই স্বাভাবিক। রাস্তায় নেমে যানবাহ ভাঙচুর, সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগে ঠেলে দেওয়া ইত্যাদি ঘঁনা যখন পুলিশ যখদে যায়, তখনই পুলিশকে বানানো প্রতিপক্ষ। কেন ? কোন রাজনৈতিক দলের ফ্রি স্টাইল কর্মকান্ড চালানোয় বাধা দেওয়া হলেই কি প্রতিপক্ষ পুলিশ!
এরই ধারাবাহিকতায় বাহিনীটির প্রধান অর্থাৎ আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ মন্তব্য জনগণের নিরাপত্তায় পুলিশ সব সময় তৎপর, পুলিশ কারও প্রতিপক্ষ নয়। তারপরও কেন সব সময় পুলিশকে প্রতিপক্ষ বানানো হয়?
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২১ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।
২০২০ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের যেসব সদস্যের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবারকে স্বীকৃতি স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০২০ সালে ২০৮ জন পুলিশ সদস্য কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
অনুষ্ঠানে আইজিপি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, পুলিশ তো জনগণের সেবক, কারও প্রতিপক্ষ নয়। তাহলে কেন সব সময় পুলিশকে প্রতিপক্ষ বানানো হয়? এই প্রশ্ন বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের প্রতি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ঘটনার প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, গেল রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে। তারপরও পুলিশ সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রেখে কাজ করছে। পুলিশকে পেটানোর ঘটনায় কোনো রিফ্লেকশন হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি।
তিনি বলেন, দেশের মধ্যে যে একটা ছোট অংশ আছে সেটা দেখলেই বোঝা যায়। কারণ দেশের কোনো ভালো কিছুর প্রতি তাদের আগ্রহ নেই, দেশের কোনো অর্জনে তাদের কিছু আসে যায় না, এই দেশের ভিন্ন সংস্কৃতির, ভিন্ন চেতনার মানুষগুলো আমাদের দেশের মানুষ হিসেবে দাবি করে। এই মানুষগুলোকে আমাদের দেশের বৃহত্তর জাতিসত্তা থেকে আলাদা করার সময় এসেছে। এরা আমাদের জাতির অংশ নয়।
ওই ছোট একটা গ্রুপ যারা দেশের কোনো ভালো কিছু দেখেন না এবং সমালোচনা করেন তাদের এমনকি তারা পুলিশের সমালোচনা করেন তাদের মুখে ছাই পড়ুক। এ দেশের প্রকৃতিতে যারা বড় হয়ে ছুড়ি মারতে চায় তাদের মুখে আমরা দেশবাসী সবাই মিলে ছাই ছুড়ে দিতে চাই’, যোগ করেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।
আইজিপি বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশ সম্মুখ সারিতে থেকে দায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশ পুলিশ তাদের দক্ষতা ও দৃঢ়তার যে সাক্ষ্য দিয়েছে তা দিয়ে তারা জনগণের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, করোনাকালে কৃষেকের ধানকাটাতেও সহায়তা করেছে পুলিশ সদস্যরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইজিপি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মেমোরিয়াল ডে’র সঙ্গে আরেকটি উৎসব উদযাপন করে সেটি হচ্ছে ‘ব্লু রেবন ডে’। মূলত ওই দিন দেশবাসী পুলিশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ব্লু-রিবন পুলিশকে পরিয়ে দেয়, নিজেরা গাড়িতে, বাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নীল রঙে সাজায়। আগামী বছর থেকে এই অনুষ্ঠানটি চালু করতে চাই।
আইজিপি আরও বলেন, কোনো দেশের সঙ্গে যুদ্ধ লাগলে তখন বিকল্প ফোর্স যুদ্ধ করে। আর যখন শান্তির সময় থাকে তখন দেশের মধ্যে দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে, বনশত্রুদের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের শত্রুদের বিরুদ্ধে এবং রাষ্ট্রকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ যুদ্ধ করে। এই যুদ্ধ ক্রমাগত, অবিরত ও অবিরাম। আর যুদ্ধ হলেই অবিরামভাবে আসে মৃত্যু। সে কারণে প্রতি বছর আমাদের ডজন ডজন সহকর্মীকে হারাই। এই করোনাকালেও পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার ৮৫ জন সদস্যকে আমরা হারিয়েছি। সেই সঙ্গে করোনাকালে প্রায় ২১ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, সুস্থ হয়েছেন এবং আবার সুস্থ হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন।