২০২২ সালে ট্রেনে চড়ে একঘুমে পর্যটন নগরী কক্সবাজার

- আপডেট সময় : ০৭:৫৭:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২১ ৩০৩ বার পড়া হয়েছে

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা
বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকতের গর্বিত মালিক বাংলাদেশ। প্রতিবছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসু পর্যটক। তারা মুগ্ধ হন এবং মিশে যান কক্সবাজার ও আশপাশের দৃষ্টিনন্দন স্থানের দৃশ্য অবলোকন করে। এই কক্সবাজারকে শতভাগ পর্যটন বান্ধব করতে সরকারের তরফে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী বছর থেকেই চালু হতে যাচ্ছে রেলপরিষেবা। জোরকদমে উন্নয়ন কাজ চলছে কক্সবাজার বিমানবন্দরের। রেলপথ চালু হলে ভ্রমনপিপাসুরা সাশ্রয়ীমূল্যে ও দ্রুত কক্সবাজার পৌছাতে পারবেন। কক্সবাজারকে পর্যটনবান্ধব করতে রেলপথ নির্মাণের কাজ হাত লাগিয়েছেন হাসিনা সরকার।
কক্সবাজারে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রকের মন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেছেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ সম্পন্ন হবে এবং ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার ট্রেন চালু হবে। রেলপথমন্ত্রীর নজিরগড়া ঘোষণায় পর্যটক তথা ভ্রমণ পিপাসু মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। এবারে অন্তত কোন প্রকারের ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই ঢাকা থেকে একঘুমে কক্সবাজার পৌছাতে আর কোন বাধা থাকলো না। আর ট্রেন থেকে আড়মোড়া ভেঙ্গে এগিয়ে যেতেই সুবিশাল সমুদ্র সৈকত। রেলপথ মন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই দেশের নানা প্রান্তের মানুষ এখন থেকেই দিন গুনতে শুরু করেছেন। তবে, বাংলাদেশের মানুষ এমনি ঘোষণাকে এখন আর স্বপ্ন মনে করেন না। কারণ, শেখ হাসিনার হাত ধরে উত্তাল পদ্মায় যখন সেতু গড়ে ওঠেছে, তখন আর বাঙালির ভয় হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে। এখন কেবলই দীপ্ত গতিতি সামনে এগিয়ে চলার পালা।
বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রীকে বলা হয়ে থাকে ‘রেলের উন্নয়ন কর্তা’। কারণ, তিনি কোন অপরাধ দুর্নীতির রেয়াদ করেন না। কাজ ছাড়া তার কাছে কোন তোষামোদকারী কাছ ঘেষাতো দূরের কথা ত্রিসীমানার বাইরে পাঠিয়ে দেন। তার সাফ কথা তোষামোদ নয়, সঠিক দায়িত্ব পালন করুন। এখন থেকে রেল ২৪ ঘন্টা জেগে আছে এবং জেগে থাকবে। মানুষের কল্যাণে রেলকে এগিয়ে নিতে হবে। এটাই মূলমন্ত্র ধারণ করে কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সূজন জানালেন, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ধরা হলেও ৬ মাস হাতে রেখেই ঘোষণা করছি আগামী বছরেই মানুষ ট্রেনে চড়ে কক্সবাজারে পৌছাতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবহেলিত রেলখাতকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করে চলেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এজন্য আলাদা একটি মন্ত্রক করে দিয়েছেন। রেলওয়েতে এখন অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে। মূলত ২০১১ সালের পর থেকেই রেলওয়েকে পুনর্গঠিত করার কাজ শুরু করেছেন শেখ হাসিনা। সরকারের দশটি মেগা প্রকল্পের মধ্যে দুটি হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ের। যার একটি হচ্ছে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প।
প্রকল্প সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে কক্সবাজার থেকে রামু হয়ে মায়ানমারের নিকটবর্তী গুনদুম পর্যন্ত নেওয়া হবে এবং পরবর্তে যা চীন সম্প্রসারিত হবে। কক্সবাজার রেললাইন চালু হলে পর্যটনের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। দেশের অগ্রগতিতে পর্যটন খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্পটি পরিকল্পনা মাফিক করা হচ্ছে। ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ভবন নির্মিত হচ্ছে। ৬ তলা বিশিষ্ট এ ভবনে সকল সুবিধা থাকবে। আইকনিক স্টেশন ভবনটি আন্তর্জাতিক মানের উল্লেখ করে করে রেলপথ মন্ত্রী বলেন, এখানে দেশি-বিদেশি প্রচুর পর্যটক আসবেন। আগত পর্যটকরা যাতে স্বস্তিবোধ করেন, তার জন্য সকল সুবিধা থাকবে।
জাফর আলম এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমেদ এমপি, নাদিরা ইয়াসমিন জলি এমপি, রেলপথ মন্ত্রকের সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ, রেলপথ মন্ত্রকের সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশে রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান।