ঢাকা ১১:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিমিষে কেড়ে নিলো ১৪ প্রাণ, মহসড়কে অনুমোদনহীন যানবাহনের কতোটা উদ্যত্ত তার স্বাক্ষী ফরিদপুর

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:১০:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১১১ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

অনুমোদনহীন একটি বাস নিমিষে কেড়ে নিলো ১৪ প্রাণ। সড়ক-মহসড়কে অনুমোদনহীন যানবাহনের কতোটা উদ্যত্ত তার স্বাক্ষী থাকলো ফরিদপুর। মঙ্গলবার ফরিদপুরে পথ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫জনসহ ১৪ মারা যায়।

ঢাকা থেখে মাগুরামুখো যাত্রাবাসটির কোন বৈধ অনুমোদন ছিলো না। এটি ২০২১ সালে থেকে অবৈধভাবে রাস্তায় চলাচল করে আসছিলো কিভাবে? এর উত্তর কে দেবে। অথচ রুট পারমিটের বিষয়টি বিআরটিএর এখতিয়ার।

১৪টি প্রাণ হারানোর পর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এখন কি বলবে? তাদের দায়িত্বহীনতার মাশুল কে দেবে?

যে নিয়ম মেনে কোন যানবাহন রাস্তায় চলাচল করতে হয়, তার কিছুই ছিলো ফরিদপুরের দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির। এটি রুট পারমিট দূরের কথা ঐ রুটে চলাচলের কোন বৈধ অনুমোদন ছাড়াই যাত্রী নিয়ে মাগুরা যাচ্ছিল।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইউনিক পরিবহনের বাসটি চট্টগ্রাম-বগুড়া রুটে চালানোর অনুমোদন (রুট পারমিট) ছিলো।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে বাসটির কোন কাগজপত্রই হালনাগাদ করা হয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ট্যাক্স টোকেন হালনাগাদ করা হলেও তার মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের নভেম্বরে।


জানা গেছে, ইউনিক পরিবহনের যে বাস পিকআপটিকে চাপা দিয়েছে, সেটি রাস্তায় চলাচল করছিলো ফিটনেস ছাড়পত্র ও ট্যাক্স টোকেন ছাড়াই। এমনকি যে সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই রুটে চলাচলের অনুমোদনও ছিল না বাসটির।

অপর দিকে যে পিকআপটি যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসছিলো, সেটি পণ্য পরিবহনের বিধি লঙ্ঘন করে যাত্রী পরিবহন করছিল। পুলিশ জানিয়েছে, হতাহতরা সবাই পিকআপের যাত্রী।

এদিন সকালে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে উত্তরা ইউনিক পরিবহনের একটি বাস মাগুরা যাচ্ছিলো। পথে ফরিদপুরের কানাইপুরের দিপনগর এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা পিকআপটিকে চাপা দেয় বাস। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া পিকআপের ১১ যাত্রী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের ৫ লাখ, আহতদের ৩ লাখ এবং মরদেহ দাফনের জন্য আরও ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

 

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঘটে যাওয়া এ প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিষ কুমার দে। সংগঠনের তরফে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, ট্রাক-পিকআপসহ পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

তা সত্ত্বেও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রায় ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ঢাকায় আসছিল। নিহত সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন। সুতরাং পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির দায় এড়াতে পারে না।

নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা নিহত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ ও চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা, শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

নিমিষে কেড়ে নিলো ১৪ প্রাণ, মহসড়কে অনুমোদনহীন যানবাহনের কতোটা উদ্যত্ত তার স্বাক্ষী ফরিদপুর

আপডেট সময় : ১০:১০:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

 

অনুমোদনহীন একটি বাস নিমিষে কেড়ে নিলো ১৪ প্রাণ। সড়ক-মহসড়কে অনুমোদনহীন যানবাহনের কতোটা উদ্যত্ত তার স্বাক্ষী থাকলো ফরিদপুর। মঙ্গলবার ফরিদপুরে পথ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫জনসহ ১৪ মারা যায়।

ঢাকা থেখে মাগুরামুখো যাত্রাবাসটির কোন বৈধ অনুমোদন ছিলো না। এটি ২০২১ সালে থেকে অবৈধভাবে রাস্তায় চলাচল করে আসছিলো কিভাবে? এর উত্তর কে দেবে। অথচ রুট পারমিটের বিষয়টি বিআরটিএর এখতিয়ার।

১৪টি প্রাণ হারানোর পর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এখন কি বলবে? তাদের দায়িত্বহীনতার মাশুল কে দেবে?

যে নিয়ম মেনে কোন যানবাহন রাস্তায় চলাচল করতে হয়, তার কিছুই ছিলো ফরিদপুরের দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির। এটি রুট পারমিট দূরের কথা ঐ রুটে চলাচলের কোন বৈধ অনুমোদন ছাড়াই যাত্রী নিয়ে মাগুরা যাচ্ছিল।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইউনিক পরিবহনের বাসটি চট্টগ্রাম-বগুড়া রুটে চালানোর অনুমোদন (রুট পারমিট) ছিলো।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে বাসটির কোন কাগজপত্রই হালনাগাদ করা হয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ট্যাক্স টোকেন হালনাগাদ করা হলেও তার মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের নভেম্বরে।


জানা গেছে, ইউনিক পরিবহনের যে বাস পিকআপটিকে চাপা দিয়েছে, সেটি রাস্তায় চলাচল করছিলো ফিটনেস ছাড়পত্র ও ট্যাক্স টোকেন ছাড়াই। এমনকি যে সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই রুটে চলাচলের অনুমোদনও ছিল না বাসটির।

অপর দিকে যে পিকআপটি যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসছিলো, সেটি পণ্য পরিবহনের বিধি লঙ্ঘন করে যাত্রী পরিবহন করছিল। পুলিশ জানিয়েছে, হতাহতরা সবাই পিকআপের যাত্রী।

এদিন সকালে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে উত্তরা ইউনিক পরিবহনের একটি বাস মাগুরা যাচ্ছিলো। পথে ফরিদপুরের কানাইপুরের দিপনগর এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা পিকআপটিকে চাপা দেয় বাস। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া পিকআপের ১১ যাত্রী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের ৫ লাখ, আহতদের ৩ লাখ এবং মরদেহ দাফনের জন্য আরও ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

 

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঘটে যাওয়া এ প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিষ কুমার দে। সংগঠনের তরফে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, ট্রাক-পিকআপসহ পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

তা সত্ত্বেও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রায় ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ঢাকায় আসছিল। নিহত সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন। সুতরাং পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির দায় এড়াতে পারে না।

নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা নিহত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ ও চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা, শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।