নারী সমাজকে সচেতন করতে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছে পিআইবি

- আপডেট সময় : ০১:৪৯:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুন ২০২১ ১৯৯ বার পড়া হয়েছে
শিশু ও নারী উন্নয়ন বিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মশালায় বক্তব্য রাখছেন পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। ডানে যুগ্মসচিব ও জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মো. আনছার আলী ও অধ্যাপক ড. তানিয়া হক।
শিশু ও নারী উন্নয়ন বিষয়ক সচেতনামূলক কর্মশালা
স্বাধীন বাংলাদেশে সামাজিক ও মানসিকভাবে পিছিয়ে মানুষদের সংখ্যা একটা সময় ভারি ছিলো। দিন বদলের সঙ্গে তা অনেকটা কমে এসেছে। এই কমে আসার ক্ষেত্র তৈরি করতে হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী সমাজের চিত্রটি কিন্তু এক নয়। এখানে অনেক বাধা পেরিয়ে পথ চলতে হয়েছে নারী সমাজকে। আর বৈষম্যটা কোথায় নেই বলুন?
বাংলাদেশ যে গতিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে মাইলক ছুঁয়েছে, বলতে দ্বিধা নেই, সেই গতিতে মানসিক উন্নয়নে পিছিয়ে আমরা। এখান থেকে আমাদেরকে বেড়িয়ে আসতে হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী ও শিশুর উন্নয়নে নিবেদীত। নারী ও শিশুর উন্নয়নে কত রকমের প্রকল্প রয়েছে, তা জানতে হলে হিসাব কষতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে একবার তাকান। শিক্ষাবর্ষের শুরুর দিনে গোটা দেশে একযোগে বই ‘উৎসব’। যেখানে নিখরচায় সোয়া ৪ কোটি শিশু-কিশোরের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নতুন পাঠ্যবই। বই বিতরণের মধ্যদিয়ে মহাআয়োজন দুনিয়াকে পথ দেখানোর কাজটি করে চলেছেন শিক্ষান্বেষী শেখ হাসিনা।
সোমবার ঢাকার সার্কিট হাউজ প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘শিশু ও নারী উন্নয়ন বিষয়ক পরিকল্পনা কর্মশালা’র উদ্বোধনী বক্তৃতায় এসব কথা তুলে ধরেন পিআইবির মহাপরিচালক (ডিজি) একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও গবেষক জাফর ওয়াজেদ।
তিনি বলেন, আমাদের ভাবনায় আনতে হবে, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত যে শিক্ষার্থী রয়েছে, তা অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। বিপুল সংখ্যক ছেলে-মেয়ের শিক্ষাদীক্ষায় সরকারি সুবিধা নিশ্চিত করা কিন্তু সহজ বিষয় নয়। এই ভাবনা থেকে নারী ও শিশুদের উন্নয়নে দেশজুড়ে কর্মসূচি চালিয়ে আসছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)। জাফর ওয়াজেদ বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব না হলে, নারী সমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। এই ভাবনাকে মজবুত অবস্থানে পৌছে দিতে সংবাদমাধ্যমকে আমরা সঙ্গী করেছি।
রাজধানীসহ বিভাগ, জেলা এবং উপজেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় নাড়া দেওয়া প্রবল ইচ্ছে থেকেই কাজ করছে পিআইবি। তিনি আশা করেন, আগামীর দিনগুলোতে দেশের সকল সংবাদমাধ্যম পিআইবি’র সঙ্গে পাশে থেকে সফলতার হাতকে মজবুত করতে সহায়তা করবে।

আয়োজনের প্রধান অতিথি ছিলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের যুগ্মসচিব ও জাতীয় প্রকল্পের পরিচালক মো. আনছার আলী, বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক। পরামর্মমূলক বক্তব্যে অংশ নেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাহী সদ্য শেখ মামুনুর রশীদ, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের নির্বাহী সম্পাদক সালেহ্ বিপ্লব, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিনিয়র রিপোর্টার শাহনাজ সিদ্দিকী সোমা প্রমুখ।
শিশু ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক কার্যক্রম প্রকল্পের নতুন আর্থিক বছরে প্রশিক্ষণ ও ফিচার কার্যক্রমে কী কী বিষয় অন্তর্ভূক্ত হতে পারে, তা নির্ধারণেই পিআইবি’র এই আয়োজন। শুরুতেই প্রেজেন্টেশন নিয়ে আসেন পিআইবির পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আফরাজুর রহমান। যেখানে শিশু ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক কার্যক্রম প্রকল্পের ৫ম পর্যায়ের বাস্তবায়নের নানা তথ্য তুলে ধরেন। পিআইবি’র এবারের অর্থবছরে প্রায় ৫৫টি কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করেছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমাপ্ত অর্থ বছরের শেষ কর্মশালাটি সম্পন্নর দিনে আয়োজিত কর্মশালায় সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক এবং সিনিয়র সাংবাদিকসহ প্রায় ৪০জন সংবাদমাধ্যমকর্মী অংশ নেন।
বর্তমান সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নারী ও শিশুদের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হাসিনা সরকার। নারী ও শিশুর সার্বিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতায়ন এবং সামগ্রিক উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্তকরণে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, জাতীয় শিশু নীতি, শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশের সমন্বিত নীতি, মনোসামাজিক কাউন্সেলিং নীতিমালা, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নকল্পে কর্মপরিকল্পনা, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ইত্যাদি হাসিনা সরকারের হাত ধরেই এসেছে। যা আলোচকরা ফের স্মরণ করিয়ে দেন।