ধর্মের নামে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না: আইজিপি
- আপডেট সময় : ০৬:১৭:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল ২০২১ ২৩৯ বার পড়া হয়েছে
ব্রাহ্মনবাড়িয়া সার্কিটহাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করছেন পুলিশ বাহিনীর প্রধান ড. বেনজির আহমেদ : ছবি সংগ্রহ
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দ্বীনের সেবা না করে ধর্মের নামে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। সম্প্রতি বাংলাদেশের ব্রহ্মনবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলাম রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক তান্ডব চালায়। এ ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান পুলিশের আইজিপি ড. বেনজির আহম্মদ।
গত ২৮ মার্চ হেফাজতের হরতালে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সকাল থেকেই হরতাল সমর্থকেরা বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে। তারা ভ’মি অফিসের সকল কাগজপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হেফাজতের ইসলামের হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ। বৃহস্পতিবার পরিদর্শন শেষে স্থানীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আইজিপি। এসব কথা বলেন।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে তান্ডবের ঘটনা ঘটেছে, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এতটা তাণ্ডব হয়নি। যেটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হয়েছে। এসময় হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্যে বলেন, পাক হানাদার বাহিনী যে তাণ্ডব করেছে, আপনারা সেই তাণ্ডব করছেন। আপনাদের মাঝে পাকহানাদার বাহিনীর চরিত্র ফুটে উঠেছে।
আইজিপি এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, আপনারা একা নন। ২০ কোটি জনগণ আপনাদের পাশে রয়েছে। আমরা জনগণের সহযোগিতায় ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবো। ধর্মের নামে রাজনীতি হতে পারে না।
সহিসংসতাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। নবী করিম (স.) শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম প্রচার করেছেন। তিনি কখনও সহিংসতা করেননি। সকল ধর্ম ও সকল ধর্মের মানুষ তার কাছে নিরাপদ ছিলো। তিনি তার উম্মতদের সকল ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার শিক্ষা দিয়েছেন।
ভূমি অফিস পরিদর্শনের পর ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভূমি অফিসের সঙ্গে কিসের শত্রুতা? ভূমি অফিসের সব কাগজপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা দেখে মনে হচ্ছে গান পাউডার দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। তাছাড়া এভাবে ভস্মীভূত হতে পারে না।
ভূমি রেকর্ড অফিসের গুরুত্বপূর্ণ এসব কাগজপত্র পুড়িয়ে দেওয়া প্রমাণ করে এটা ধর্মের নামে নাশকতা ও রাজনীতি। আপনারা প্রতিবাদ করেন কিন্তু ‘সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন’ পুড়িয়ে প্রমাণ করে এটা প্রতিবাদ নয়। সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা।’
আইজিপি আরও বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৩ লাখ লোক বাস করে। এখানে ৫৭৬টা মাদরাসা রয়েছে। এসব মাদরাসায় ১ লাখ ৩ হাজার ছাত্র পড়াশোনা করে। জনগণের দান-খয়রাতের মাধ্যমে এসব মাদরাসার ছাত্ররা লেখাপড়া করে। বছরে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা জনগণ এসব মাদরাসার ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য দান করে থাকেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, র্যাবের ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, অতিরিক্ত আইজিপি এসবি মনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ারা হোসেন, পুলিশ হেডকোয়াটার্সের ডিজি হায়দার আলী খান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।