রুটির কারখানা থেকে যুদ্ধের ময়দান, কারাগারে দিনাতিপাত, চারণ বাউলের মতো মানববন্দনা খেয়ে বেড়ানো এক মহাযুগী। কখন গেয়েছেন ‘গোঠের রাখাল বলে দে রে কোথায় বিন্দা বন’ আবার উদাস কন্ঠে খেয়ে ওঠেছেন ‘রোজ হাশরে আল্লাহ আমার করোনা বিচার’, বা খেলিছো এই বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু’, ক্ষ্যাপা বাউল এবারে খেয়ে ওঠলেন ‘কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙ্গে ফেল—’, আবার গাইলেন, বল বীর বল উন্নত মম শির’, এবারে শান্ত হলেন কবি।
গাইলেন ‘মোড়া একই বৃন্তে দু’টি কুসুম, হিন্দু মুসলমান, মুসলিম তার নয়ন মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ’। সকল মাধ্যমে কবিতা, গান লিখে গিয়েছেন কবি। বিশ্বের অসম্প্রদায়িকতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম কাজী নজরুল ইসলাম। সচেতনার নাম কবি নজরুল।
‘কাজী নজরুল ইসলাম রাঢ় বাংলায় জন্ম নেওয়া একজন বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত’।
১৮৯৯ সালের ২৫ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়ায় জন্ম। তার বাবার নাম কাজি ফকীর আহমেদ, মায়ের নাম জাহিদা খাতুন। দুঃখকে সঙ্গী করে এক নিম্নভিত্ত পরিবারের জন্ম কবির। স্ত্রীর নাম প্রমিলা দেবী (বিবাহ. ১৯২৪-১৯৬২)। তার সন্তানের মধ্যে কাজী সব্যসাচী, কৃষ্ণ মোহাম্মদ, অরিন্দম খালেদ, কাজি অনিরুদ্ধ। তাদের কেউ বেচে নেই। বাংলাদেশের জাতয়ি কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকায় মারা যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ চত্বরে তার সমাধি রয়েছে।
১১ জ্যৈষ্ঠ, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন। বাঙালির আবেগ, অনুভূতিতে জড়িয়ে থাকা চির বিদ্রোহী এ কবির ১২২তম জন্তজয়ন্তী মঙ্গলবার। কবির জন্ম দিনে শ্রদ্ধার্ঘ হিসেবে কলকাতার প্রতিথযশা বাচিক শিল্পী সুস্তিতা মুর্খাজী দাস দু’টো কবিতা উৎসর্গ করেছেন। ভয়েস একাত্তর পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে ‘তার এই প্রাণ উজার করা ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞা’।