দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট, সংক্রমন ৭০ ভাগ বেশি
- আপডেট সময় : ১১:৪২:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ এপ্রিল ২০২১ ২০১ বার পড়া হয়েছে
লকডাউনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠার খোলার দাবিতে বিক্ষোভ
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। যে কোন ধরণের রোগবাইল থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে সচেতনতার কথাই বলা হয়ে থাকা। সমাজিক সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই শক্তি ওপরে আর কিছু নেই। যে এলাকায় ঊর্ধমুখি সংক্রমণ সেসব এলাকায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ বলে মনে করেন চিকিসাবিজ্ঞানিরা।
বাংলাদেশে এবারের ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকার। এতেই আক্রান্তর সংখ্যা বেশি। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি’র গবেষণা তথ্যে একথাই বলছে। তবে, গত বছরের শেশ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। যা চলতি বছরের মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সক্রিয়।
লকডাউনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠার খোলার দাবিতে বিক্ষোভ
আইসিডিডিআরবি ওয়েবসাইটে বুধবার গবেষণার তথ্য জানিয়ে বলছে, ডিসেম্বর মাস থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআরের সঙ্গে করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের ওপর নজরদারি শুরু করে। ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে ১৬ হাজার ২৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ৭৫১টি নমুনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। আর ৬ জানুয়ারি প্রথম দেশে করোনার ব্রিটেনের ধরনটি শনাক্ত হয় এবং মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এই ধরনই বাংলাদেশে সংক্রমণ ঘটায়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতো এ বছরে সংক্রমন হার উর্ধমুখি। হাসপাতালে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত রোগীর চাপ। বেসরকারী হাসপাতালের চিকিৎসা পাওয়া খুবই ব্যয় বহুল। এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই।
আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষা
মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে থেকে বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনটি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আইসিডিডিআরবি বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব বাংলাদেশে ভাইরাস প্রসারের ক্ষেত্রে নাটকীয় পরিবর্তন এনে দিয়েছে। মার্চের চতুর্থ সপ্তাহেই শনাক্ত ধরনগুলোর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৮১ শতাংশই দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট।
করোনা ভাইরাসের নানা ধরনের মধ্যে ইউকে ভ্যারিয়েন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট ও ব্রাজিলিয়ান ভ্যারিয়েন্টই সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে সবচেয়ে বেশি। আইসিডিডিআরবি বলছে, এই তিনটি ধরনের সংক্রমণের হার বেশি এবং এদের জিনগত পরিবর্তনও ঘটে বেশি।
প্রথম দফার তুলনায় এবারে রোগীদের একটি অংশের মধ্যে অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ার প্রবণতা চিকিৎসকেরা দেখতে পাচ্ছেন। বিশেষ করে ৫০ ভাগ ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর রোগী জানতে পারছে যে, তার করোনা হয়েছে। অনেককে আক্রান্ত হওয়ার ছয়-সাত দিনের মধ্যেই উচ্চমাত্রার অক্সিজেন দিতে হচ্ছে এবং তা-ও আবার সেটি তুলনামূলক দীর্ঘ সময়, যেমন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে।
সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উপছে পড়া ভীড়
নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীদের অবস্থা একটু খারাপ হলে তা দ্রুতই আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আগে আইসিইউতে কোনো রোগী এলে বেশির ভাগকেই ৮-১০ দিনের মধ্যে রিকভারি করে কেবিনে পাঠানো হতো। কিন্তু এবার সেটি হচ্ছে না। এবার অনেক দীর্ঘ সময় লাগছে এবং আইসিইউ থেকে অনেকে আবার ফিরতেও পারছেন না। অনেকেরই ফুসফুস দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে এবং রক্ত জমাট বাঁধছে।
বর্তমানে করোনা রোগীদের মধ্যে কারো কারোর রক্তের অণুচক্রিকার সঙ্গে হিমোগ্লোবিনও কমে যাচ্ছে। অথচ গত বছর প্রথম দফার সংক্রমণের সময় অনেকের রক্তের অণুচক্রিকা কমলেও রোগীর ততটা হিমোগ্লোবিনের সমস্যা ছিল না।
এ অবস্থায় আপনাকে স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনেই জীবন ধারণ করার কথা শক্তভাবেই উচ্চারণ করে আসছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
ব্যবসায়ী নাদিম যা বলেন
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, লকডাউন হলো করোনা নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায়। মানুষের জীবন রক্ষার্থে সব দেশের সরকার লকডাউন করা হয়। এবারে সাত দিনের লকডাউন করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। ব্যবসায়ীরা লকডাউনের বিরুদ্ধে মিছিল সমাবেশ করেছে। এর চরম মূল্য দিতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সারা পৃথিবী লকডাউন দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এবারে সাত দিন লকডাউন দেওয়া হলেও তা কার্যকর করা যায়নি। তবে যেটুকু কাজ হয়েছে, তাতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া কোনো উপায় নেই। করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।