ঢাকা ০৪:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ঢাকা শহরকে হাসপাতাল বানালেও করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব নয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:১৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল ২০২১ ২৫৫ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা

গত বছরের মার্চ মাস থেকে করোনা মহামারি ভয়ঙ্করভাবে গোটা পৃথিবীকে গ্রাস করেছে! মনে করা যেতে পারে  একবিশংশ শতাব্দিতে ভাইরাস জগতে এটিই  অপ্রতিদ্বন্দি। তবে, এক্ষেত্রে সাধুবাদ জানাতে হয় বিজ্ঞানিদের। এতোটা স্বল্প সময়ে পৃথিবীতে কোন ভংঙ্কর ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের তথ্য জানা নেই।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। এ অবস্থায়  গোটা ঢাকা শহরকে  হাসপাতাল বানিয়ে দিলেও পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব নয়। মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশন মার্কেটে স্থাপিত কোভিড হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী আরও বলেন, যারা করোনা টিকা নিয়েছেন, তাদের অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানেননি। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যারা কক্সবাজার-বান্দরবান বেড়াতে গিয়েছেন এবং বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে  যোগ দিয়েছেন, তারাই বেশি সংক্রমিত হয়েছেন। এখন তারা নিজের পরিবারের সদস্যদের সংক্রমিত করছেন। সর্বোপরি সমাজকে করোনা সংক্রমিত করেছেন।

মহাখালী কাঁচাবাজারে স্থাপনায় হাসপাতালটি চালু করা হচ্ছে। ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ফাঁকা এ মার্কেটটি করোনার আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিলো। এবারে  করোনা হাসপাতাল চালু হলে বিদেশগামীদের জন্য এক পাশে পৃথকভাবে জায়গা রাখা হবে।

বাংলাদেশে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে করোনায় আক্রান্ত ও  মৃত্যুর রেকর্ড গড়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণ সরকার ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৯ মার্চ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। লকডাউনের প্রথম দিনেই ছিল ছুটির আমেজ। গণপরিবহন ছাড়া সব ধরণের পরিবহন চলাচল করেছে। দ্বিতীয় দিনে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার থেকে দেশের সিটি কর্পোরেশন এলাকাগুলোয় গণপরিবহন চলাচলের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

জনস্বাস্থ্য বিষেজ্ঞ ও হেলথ্ এন্ড হোপ হাসপাতালের চেয়াম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে করোনার বিস্তার ফের অতি দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছে। একদিকে মার্কেট, বিপণী-বিতান, দোকান বন্ধ, অন্য দিকে শিল্পকারখানা খোলা। অপর দিকে মানুষ দল বেধে এক শহর থেকে আরেক শহরে যাচ্ছে। এতে করে করোনার আরও বিস্তার ঘটবে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে দুই সপ্তাহের লকডাউন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

গত দুই সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমণ। প্রতিদিনই রেকর্ড সংখ্যক শনাক্ত হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে অতীতের সব রেকর্ড।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বার্তায় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ৬৬ জন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৩৮৪ জনে। শুধু মৃত্যু নয়, আক্রান্তও সবচেয়ে বেশি, ৭ হাজার ২১৩ জন। মোট আক্রান্ত ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬৫২ জন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে ২০০টির বেশি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করা হচ্ছে। একসঙ্গে ১২০০ (বারো শ’) বেশি মানুষ করোনা চিকিৎসা নিতে পারবেন।

হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, এ হাসপাতালে শুধু করোনা চিকিৎসা দেয়া হবে। এখানে কোনো অপারেশন করা হবে না। কারও অপারেশন দরকার হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। সচিবালয়ে নতুন স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া জানান, করোনা নিয়ে জনগণের মাঝে এখনও সচেতনতা কম। সবাইকে নিয়ে করোনা মোকাবেলা করার ভাবনা তাঁর।

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ঢাকা শহরকে হাসপাতাল বানালেও করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব নয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৮:১৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল ২০২১

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা

গত বছরের মার্চ মাস থেকে করোনা মহামারি ভয়ঙ্করভাবে গোটা পৃথিবীকে গ্রাস করেছে! মনে করা যেতে পারে  একবিশংশ শতাব্দিতে ভাইরাস জগতে এটিই  অপ্রতিদ্বন্দি। তবে, এক্ষেত্রে সাধুবাদ জানাতে হয় বিজ্ঞানিদের। এতোটা স্বল্প সময়ে পৃথিবীতে কোন ভংঙ্কর ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের তথ্য জানা নেই।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। এ অবস্থায়  গোটা ঢাকা শহরকে  হাসপাতাল বানিয়ে দিলেও পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব নয়। মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশন মার্কেটে স্থাপিত কোভিড হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী আরও বলেন, যারা করোনা টিকা নিয়েছেন, তাদের অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানেননি। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যারা কক্সবাজার-বান্দরবান বেড়াতে গিয়েছেন এবং বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে  যোগ দিয়েছেন, তারাই বেশি সংক্রমিত হয়েছেন। এখন তারা নিজের পরিবারের সদস্যদের সংক্রমিত করছেন। সর্বোপরি সমাজকে করোনা সংক্রমিত করেছেন।

মহাখালী কাঁচাবাজারে স্থাপনায় হাসপাতালটি চালু করা হচ্ছে। ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ফাঁকা এ মার্কেটটি করোনার আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিলো। এবারে  করোনা হাসপাতাল চালু হলে বিদেশগামীদের জন্য এক পাশে পৃথকভাবে জায়গা রাখা হবে।

বাংলাদেশে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে করোনায় আক্রান্ত ও  মৃত্যুর রেকর্ড গড়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণ সরকার ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৯ মার্চ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। লকডাউনের প্রথম দিনেই ছিল ছুটির আমেজ। গণপরিবহন ছাড়া সব ধরণের পরিবহন চলাচল করেছে। দ্বিতীয় দিনে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার থেকে দেশের সিটি কর্পোরেশন এলাকাগুলোয় গণপরিবহন চলাচলের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

জনস্বাস্থ্য বিষেজ্ঞ ও হেলথ্ এন্ড হোপ হাসপাতালের চেয়াম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে করোনার বিস্তার ফের অতি দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছে। একদিকে মার্কেট, বিপণী-বিতান, দোকান বন্ধ, অন্য দিকে শিল্পকারখানা খোলা। অপর দিকে মানুষ দল বেধে এক শহর থেকে আরেক শহরে যাচ্ছে। এতে করে করোনার আরও বিস্তার ঘটবে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে দুই সপ্তাহের লকডাউন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

গত দুই সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমণ। প্রতিদিনই রেকর্ড সংখ্যক শনাক্ত হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে অতীতের সব রেকর্ড।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বার্তায় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ৬৬ জন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৩৮৪ জনে। শুধু মৃত্যু নয়, আক্রান্তও সবচেয়ে বেশি, ৭ হাজার ২১৩ জন। মোট আক্রান্ত ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬৫২ জন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে ২০০টির বেশি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করা হচ্ছে। একসঙ্গে ১২০০ (বারো শ’) বেশি মানুষ করোনা চিকিৎসা নিতে পারবেন।

হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, এ হাসপাতালে শুধু করোনা চিকিৎসা দেয়া হবে। এখানে কোনো অপারেশন করা হবে না। কারও অপারেশন দরকার হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। সচিবালয়ে নতুন স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া জানান, করোনা নিয়ে জনগণের মাঝে এখনও সচেতনতা কম। সবাইকে নিয়ে করোনা মোকাবেলা করার ভাবনা তাঁর।