ঢাকা-দিল্লীর মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই
- আপডেট সময় : ০৫:৩৫:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মার্চ ২০২১ ২৬৫ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা
বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পাঁটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। বাণিজ্যে অশুল্ক বাধা দূর, তথ্য-যোগাযোগ সহায়তা ও দুর্যোগ মোকাবিলাসহ পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। অবশ্য বিদেশমন্ত্রক সূত্র আগেই জানিয়েছিল, দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে কানেক্টিভিটি তথা যোগাযোগের ওপর জোর দেবে ঢাকা।
বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আন্তঃবাণিজ্য বাড়াতে সড়ক, রেল ও জলপথ ছাড়াও সমুদ্র যোগাযোগের বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়। সামনের দিনগুলোতে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের পথচলা এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলাসহ রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। ঢাকা-দিল্লীর মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। দুইদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলো সই হয়।
এসময় ভার্চুয়ালি বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে শনিবার বিকাল পাঁচটা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রাথমিক অবস্থায় দুই সরকার প্রধানের মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়। এরপরই উভয় দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে বসা বৈঠকটি শেষ হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছালে টাইগার গেটে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।
দুই দেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক সই ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভার্চুয়ালি বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে, ঢাকা ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন সার্ভিস, বাংলাদেশ-ভারত স্বাধীনতা সড়ক। মুক্তিযুদ্ধে যেসব ভারতীয় সৈন্য আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদের স্মরণে আশুগঞ্জে একটি সমাধিসৌধ উদ্বোধন করা হয়। এছাড়াও কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কুটিবাড়িতে ভারতের অর্থায়নে যে সংস্কার কাজ হয়েছে তারও উদ্বোধন করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের কাছে ভারতের ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করেন মোদি। এছাড়া দুটি সীমান্ত হাট এবং স্মারক ডাকটিকিটের মোড়ক উন্মোচন করা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজনে যোগ দিতে শুক্রবার দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসেন নরেন্দ্র মোদি। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সঙ্গে নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতায় ভারত অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে মনোযোগী। এই পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক, রেল, নৌ আর সমুদ্রপথে ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সংযুক্তির উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছে।
তাই বাংলাদেশ দুই দেশের বিদ্যমান নৌ-প্রটোকলের আওতায় নেপালকে এ দেশের নৌপথ ও ভূখণ্ড ব্যবহার করে পণ্য পরিবহন করতে দিতে চায়। পাশাপাশি ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভুটানে পণ্য পরিবহন করতে চায়। এমন এক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এর মধ্যেই ভারতকে সড়ক ও রেলপথে নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে সংযুক্তির জন্য পাঁচটি রুটে পণ্যবাহী যান চলাচলের অনুরোধ জানিয়েছে। ঢাকার বৈঠকে বিষয়টি তুলে তা দ্রুত বাস্তবায়নের অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ।
সড়কপথে নেপালের জন্য মেছিনগর, বিরাটনগর, বীরগঞ্জ ও রেলপথে রোহানপুর-সিংহাবাদে অনুমতির অনুরোধ জানিয়েছে। আর ভুটানের সঙ্গে রেলপথে চিলাহাটি-হলদিবাড়ীতে যুক্ত হতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নেপাল ও ভুটানের পাশাপাশি বাংলাদেশ এ অঞ্চলের অন্য দেশ মিয়ানমারের সঙ্গেও সংযুক্তিতে আগ্রহী। এই লক্ষ্য থেকে সম্প্রতি ভারতকে ত্রিদেশীয় মহাসড়কে যুক্ত হতে আগ্রহী দেখিয়েছে। বাংলাদেশ মনে করে, ভারতের সহযোগিতা থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের সঙ্গে নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া সহজ হবে।