ঢাকা ০২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় জলাবদ্ধতা

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০১:৫২:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুন ২০২১ ২০২ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাত্র ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। তাতেই রাজপথজুড়ে কোমড়-হাটু ভাঙ্গাজল। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নগরায়ন চলছে অব্যাহত গতিতে। কিন্তু সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে নগরীর জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা অপ্রতুল। সুয়ারেস ড্রেন, সারফেস এবং জল নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো কার্যত প্রায় বন্ধ।

রাজধানীর খালগুলো অস্তিত্বহীন। খালের ওপরে স্থাপনা গড়ে ওঠেছে। ওয়াসা এসব খাল উদ্ধারে ঢামাঢোল পেটালে কোন গতি হয়নি। এসব কথা মানুষ এখন শুনতে চায় না। ফলে হাল্কা বা মাঝারি বৃষ্টিতেই ঢাকার পথে হাটু ভাঙ্গা জল।

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীতে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৃষ্টিতে নগরবাসী যেমন মুক্তি পেয়েছে তীব্র গরম থেকে, তেমনি এই নগরী পেয়েছে নতুন রূপ। মালিবাগ, বনানী, ধানমন্ডি, পান্থপথ, মিরপুর, গ্রিন রোড, এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলোকে দেখলেই মনে হচ্ছে হয়তো ইতালির ভেনিসে চলে এসেছি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নেটিজেনরা হয়ে উঠেছেন সক্রিয়। অনেকেই পোস্ট করেছেন জলাবদ্ধ রাস্তার ছবি কিংবা ভিডিও। এর সঙ্গে অনেকেই লিখেছেন, বের হবেন না, ভেসে যাবেন, কিংবা সমুদ্র বিলাসের মতো ক্যাপশন। সবাই যেনো এই জলাবদ্ধতায় আবদ্ধ। রাস্তায় কোমরসমান পানি, তীব্র জ্যাম আর যানবাহন সঙ্কটে যে যার মতো বিরক্তি প্রকাশ করছেন।

সকালের এই বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা। বৃষ্টি, রাস্তায় পানি, গণপরিবহনে স্থান সঙ্কট সবকিছু মিলিয়ে দিনের শুরুতে এ যেনো এক আকস্মিক ভোগান্তি। কিন্তু কিছুই করার নেই কারো। করোনার সংক্রমণের ফলে গণপরিবহন অর্ধেক যাত্রী বহন করছে। আসন সংখ্যা তাই অর্ধেক। কিন্তু কমেনি অফিসগামী যাত্রীর সংখ্যা। তাই গণপরিবহনে আসন না পেয়ে অধিকাংশ মানুষের শেষ ভরসা রিকসা কিংবা সিএনজি। সেখানেও গুনতে হচ্ছে অস্বাভাবিক বাড়তি ভাড়া। অনেকাংশে তা দ্বিগুণের মতো।

রাজধানীর কল্যাণপুরের রাস্তায় সকালে দেখা যায় জনস্রোত। অফিসগামীদের এই দীর্ঘ অপেক্ষা যেনো দেখার কেউ নেই। যারা যেভাবে পারছেন ছুটছেন গন্তব্যের দিকে। রিকশা, সিএনজি, বাস, মোটরসাইকেল আর না হলে হেঁটে রওনা দিয়েছেন যে যার মতো।

দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন কল্যানপুর বাসস্ট্যান্ডে। কিন্তু কোনো উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত অফিসে গিয়েছেন সিএনজিতে। দিয়েছেন প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া। তিনি জানান, ধানমন্ডি আর খামারবাড়িতে পানি জমেছে। তাই বিশাল জ্যাম ঠেলে তিনি এসেছেন বিজয়স্মরণী হয়ে।

প্রায় একই দৃশ্য রাজধানীর মালিবাগ, বনানী, ধানমন্ডি, গ্রিন রোড, এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকায়। বৃষ্টি হলেই এ সব এলাকার দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। পানি নিষ্কাশনের উপায়, খাল ভরাট, অপরিকল্পিত নগরায়নসহ নানা কারণে প্রতিনিয়ত এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে এসব এলাকা। দীর্ঘদিনের এ সমস্যার সমাধান হয়নি এখনো। কবে আর কিভাবে হবে সেটাও যেনো কেউ জানে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ঢাকায় জলাবদ্ধতা

আপডেট সময় : ০১:৫২:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুন ২০২১

মাত্র ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। তাতেই রাজপথজুড়ে কোমড়-হাটু ভাঙ্গাজল। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নগরায়ন চলছে অব্যাহত গতিতে। কিন্তু সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে নগরীর জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা অপ্রতুল। সুয়ারেস ড্রেন, সারফেস এবং জল নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো কার্যত প্রায় বন্ধ।

রাজধানীর খালগুলো অস্তিত্বহীন। খালের ওপরে স্থাপনা গড়ে ওঠেছে। ওয়াসা এসব খাল উদ্ধারে ঢামাঢোল পেটালে কোন গতি হয়নি। এসব কথা মানুষ এখন শুনতে চায় না। ফলে হাল্কা বা মাঝারি বৃষ্টিতেই ঢাকার পথে হাটু ভাঙ্গা জল।

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীতে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৃষ্টিতে নগরবাসী যেমন মুক্তি পেয়েছে তীব্র গরম থেকে, তেমনি এই নগরী পেয়েছে নতুন রূপ। মালিবাগ, বনানী, ধানমন্ডি, পান্থপথ, মিরপুর, গ্রিন রোড, এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলোকে দেখলেই মনে হচ্ছে হয়তো ইতালির ভেনিসে চলে এসেছি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নেটিজেনরা হয়ে উঠেছেন সক্রিয়। অনেকেই পোস্ট করেছেন জলাবদ্ধ রাস্তার ছবি কিংবা ভিডিও। এর সঙ্গে অনেকেই লিখেছেন, বের হবেন না, ভেসে যাবেন, কিংবা সমুদ্র বিলাসের মতো ক্যাপশন। সবাই যেনো এই জলাবদ্ধতায় আবদ্ধ। রাস্তায় কোমরসমান পানি, তীব্র জ্যাম আর যানবাহন সঙ্কটে যে যার মতো বিরক্তি প্রকাশ করছেন।

সকালের এই বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা। বৃষ্টি, রাস্তায় পানি, গণপরিবহনে স্থান সঙ্কট সবকিছু মিলিয়ে দিনের শুরুতে এ যেনো এক আকস্মিক ভোগান্তি। কিন্তু কিছুই করার নেই কারো। করোনার সংক্রমণের ফলে গণপরিবহন অর্ধেক যাত্রী বহন করছে। আসন সংখ্যা তাই অর্ধেক। কিন্তু কমেনি অফিসগামী যাত্রীর সংখ্যা। তাই গণপরিবহনে আসন না পেয়ে অধিকাংশ মানুষের শেষ ভরসা রিকসা কিংবা সিএনজি। সেখানেও গুনতে হচ্ছে অস্বাভাবিক বাড়তি ভাড়া। অনেকাংশে তা দ্বিগুণের মতো।

রাজধানীর কল্যাণপুরের রাস্তায় সকালে দেখা যায় জনস্রোত। অফিসগামীদের এই দীর্ঘ অপেক্ষা যেনো দেখার কেউ নেই। যারা যেভাবে পারছেন ছুটছেন গন্তব্যের দিকে। রিকশা, সিএনজি, বাস, মোটরসাইকেল আর না হলে হেঁটে রওনা দিয়েছেন যে যার মতো।

দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন কল্যানপুর বাসস্ট্যান্ডে। কিন্তু কোনো উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত অফিসে গিয়েছেন সিএনজিতে। দিয়েছেন প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া। তিনি জানান, ধানমন্ডি আর খামারবাড়িতে পানি জমেছে। তাই বিশাল জ্যাম ঠেলে তিনি এসেছেন বিজয়স্মরণী হয়ে।

প্রায় একই দৃশ্য রাজধানীর মালিবাগ, বনানী, ধানমন্ডি, গ্রিন রোড, এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকায়। বৃষ্টি হলেই এ সব এলাকার দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। পানি নিষ্কাশনের উপায়, খাল ভরাট, অপরিকল্পিত নগরায়নসহ নানা কারণে প্রতিনিয়ত এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে এসব এলাকা। দীর্ঘদিনের এ সমস্যার সমাধান হয়নি এখনো। কবে আর কিভাবে হবে সেটাও যেনো কেউ জানে না।