“করোনার টিকা পেতে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ২ কোটি ১৬ লাখের বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন। প্রতি মিনিটে এ সংখ্যা প্রায় ৫ হাজারের মতো। সমালোচনার উর্ধে ওঠে সাধারণ মানুষ টিকার জন্য নিজের নাম নিবন্ধন করে চলেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পাচ্ছেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ৭-১২ আগস্ট পর্যন্ত কর্যব্রমের মাধ্যমে প্রায় ৩২ লাখ মানুষকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে”
প্রায় দু’বছরের কাছাকাছি সময় বিশ্ববাসী ভাইরাসবিরোধী জীবনরক্ষায় যতরকমের প্রতিরোধী ব্যবস্থা রয়েছে, তা ব্যবহার করে চলেছেন। এরমধ্যে প্রধান প্রতিরোধী ব্যবস্থায় রয়েছে টিকা। তবে
যতদিন টিকা আবিষ্কার হয়নি, ততদিন সংক্রমণ রুখতে বার বার সাবানজল দিয়ে হাত ধোয়া এবং মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধী হিসেবে এখনও পৃথিবীর সর্বত্র মাস্ক ব্যবহার এবং হাত ধোয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে পৃথিবীর সর্বত্রই একটা শ্রেণীর মানুষের মধ্যে উদাসিনতা লক্ষ্য করা যায়।
টিকার আবিষ্কারের প্রথম দিকে সাধারণ মানুষ টিকার বিষয়ে ছিলেন উদাসিন। শোনা গিয়েছে সমালোচনাও। কিন্তু কার্যত জীবনরক্ষায় সালোচনা টিকেনি। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানের জয় হয়েছে। টিকার জন্য সাধারণ মানুষ এখন রাত ভর লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন।
ভারতে মধ্যরাতে লাইনে দাঁড়িয়ে পরদিন বিকাল অব্ধি টিকা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। সকল সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে জীবন রক্ষায় কার্যকরি টিকা নিচ্ছে মানুষ।
বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, দেশের মানুষকে রক্ষায় তার যে
কমিটমেন্ট রয়েছে, তা বাস্তবায়নে পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে টিকা আমদানি করার। হচ্ছে তাই। তিনি আরও বলেন, টিকার জন্য যত টাকার প্রয়োজন তা মজুত রাখা হয়েছে। শেখ হাসিনার এই উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে গণটিকা কর্মসূচি। টিকাকরণের আওতায় রয়েছেন বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে টিকার আওতায় আনার এই উদ্যোগে সারা
দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিন সকাল থেকে দীর্ঘ দাঁড়িয়ে টিকার জন্য মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এরই মধ্যেই দেশের ২ কোটির অধিক মানুষ টিকা পেতে নিবন্ধন করেছেন। শনিবার এবিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি) এক কর্মকর্তা। তিনি জানান, শেখ হাসিনার হাত ধরে আসা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পাচ্ছেন
প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ এদিন দুপুর পর্যন্ত ২ কোটি ১৬ লাখের বেশি নিবন্ধন করা হয়েছে। প্রতি মিনিটে প্রায় ৫ হাজারের মতো নিবন্ধন হচ্ছে।
চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি করোনার টিকা পেতে বাংলাদেশে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় টিকা কার্যক্রম। টিকার মজুত কমে আসায় ৮ জুন থেকে সাময়িকভাবে টিকার নিবন্ধন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখে স্বাস্থ্যবিভাগ। এরপর জুন মাসের শেষ দিকে
ফের শুরু হয় টিকার নিবন্ধন কার্যক্রম। দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, মডার্না ও ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে।
চায়নার সঙ্গে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং বেইজিং থেকে আসছে সাড়ে ৭কোটি ডোজ টিকা। যুক্তরাষ্ট্র থেকেও পৌঁছেছে বিপুল সংখ্যক টিকা।
সামনে আরও টিকা দেবে দেশটি। রাশিয়ার সঙ্গে টিকার যৌথ উৎপাদনের বিষয়টিও এগুচ্ছে। সব মিলিয়ে টিকাকরণের বিষয়টি বাংলাদেশের বেশ উজ্জ্বল।