ঝুঁকি-আনন্দের ঘরযাত্রা!

- আপডেট সময় : ১১:৫৬:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মে ২০২১ ১৯২ বার পড়া হয়েছে
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। চার দিন পর ঈদ আনন্দ। তারপর ফের ঝুঁকি নিয়ে ফেরা। বর্তমান করোনাকালে আনন্দের যাত্রা বিষাদের ছায়া নেমে আসতে পারে! বর্তমান স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে গোটা বিশ্ব যখন মহাদুশ্চিন্তায়, তখন এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় সমাবেশ এবং উৎসব আয়োজন থেমে নেই। যেখানে স্বাস্থ্যবিধির বিন্দুমাত্র মান্যতা নেই!
এটাকে মানুষের এক ধরণের লাগামহীনতা ছাড়া আর কিছু না-এমন মন্তব্য চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং সমাজ সচেতন মানুষের। মানুষের এমনি সমাগমের চিত্র দেখার পর সচেতন মানুষ ভাষাহীন। সামনের দিনগুলোর পরিণতির কথাই বার বার মনের মধ্যে কাঁটা দিচ্ছে!
চারিদিকে শববাহী যানের পিলে চমকানো কর্কশ আওয়াজ! চারিদিকে শবমিছিল। তারপরও পরও মানুষের এতোটা উদাসিনতা।
আর চারদিন পরই ঈদ পালন করবেন বাংলাদেশের মানুষ। যার যার অবস্থানে থেকেই এবারের ঈদ পালনের আহ্বান করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বার বার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, সময়টা খুব ভালো নয়। এই পরিস্থিতিতে দলবেধে, গাদাগাদি করে বাড়ি গেলে সংক্ষণ বেড়ে যাবার আশঙ্কা করা স্বাভাবিক।
জনসচেতনতায় সকল বার্তা, অনুরোধ, প্রশাসনিক বাধা আবেগ তাড়িত মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ ঘরযাত্রায় সামিল হয়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউ বাকী থাকছে না, দুর্ভোগের ঈদ যাত্রায়!

ভোররাত থেকেই ফেরিঘাট অভিমুখে মানুষের ভীড় লেগে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পদ্মা পারে রীতিমত মানব ঢল। ঈদ যতই এগুলোচ্ছে, মানুষের ভিড়ও বাড়চ্ছে। ফেরিতে মানুষের অস্বাভাবিক ভিড়! এখানে স্বাস্থ্যবিধি বলতে কিছু নেই! ঘরে ফেরাটাই তাদের বড় কথা। পদ্মার স্রোতের সঙ্গে ঘরমুখো মানুষের যাত্রার একাকার।
ঘাটে ঘাটে চেকপোষ্ট বসিয়েও ঘরমুখো জনস্রোত রুখা যাচ্ছে না, তার স্বাক্ষী দেশের ফেরিঘাটগুলো। করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কাকে সামনে রেখেই সরকার ঈদে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রাখে। কিন্তু তাই বলে কি থেমে যাবে ঈদ যাত্রা?
এ যাত্রা নিদানকাল বোঝেনা। মহাবিপদকে আলিঙ্গন করে সপরিবারে অস্বাভাবিক পরিবেশে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তাতে গ্রামাঞ্চলেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনার সংক্রমণ রোধে যাত্রী পারাপার বন্ধে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তারপরও অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য যানবাহনে হাজারো যাত্রীদের চাপের মুখে ফেরি চলাচল করতে বাধ্য হয়।
আরিচা অফিসের বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলেও শববাহী ও অ্যাম্বুলেন্সসহ কিছু ছোট গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। কিন্তু ঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় সামাল দেওয়া সম্ভব না হওয়ায়, দুই আড়াই ঘন্টার পর দুই তিনটি করে ফেরি ছাড়া হচ্ছে।
যাত্রীরা ঘাটে এসেই ফেরিতে উঠে পড়ছেন। কোনও বাধা নিষেধ মানছেনা। অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য গাড়ি ফেরিতে ওঠার আগেই যাত্রীরা ফেরি ওঠে যাবার কারণে গাড়ি নেওয়ার স্থান টুকু থাকছে না।