ঢাকা ১০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই মাসে করোনার সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের

নবারুণ, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ১০:২৮:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১ ২২১ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছবি সংগৃহিত

“স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত এক সপ্তাহ ধরে করোনায় মৃতের সংখ্যা শ’র ওপরে। ৩০ জুন ১১৫ জন মৃত্যু হয়েছিলো। এরপর ১ জুলাই ১৪৩ জন, ২ জুলাই ১৩২, ৩ জুলাই ১৩৩, ৬ জুলাই তা পৌছে যায় ১৬৩ জনে। এর আগের দিনও ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সর্বশেষ ৭জুলাই মৃতের সংখ্যা পৌছে গেলো একেবারে চূড়ায় অর্থাৎ ২০১ জনে!”

করোনার সংক্রমণ যে লাগামহীন অবস্থা তা বোঝা যাচ্ছে প্রতিদিনের আক্রান্তর মধ্য দিয়ে। একে লাগামহীন পরিস্থিতি বলা যেতে পারে। কারণ, প্রতিদিন আক্রান্ত পারদ উর্ধমুখী। বিস্তাররোধে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের শেষ দিনে আক্রান্তর সংখ্যা ১১ হাজার ১৬২ এবং মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের।

মঙ্গলবার আক্রান্তর সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছিলো সাড়ে ১১ হাজার। এই মৃত্যু ও সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তর মধ্য লকডাউনের সপ্তাহ পেরিয়ে গেল। পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।

সামনে কোরবাণীর ঈদ। মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদের মধ্যেও কি লকডাউন থাকবে না শীথিল হবে সেই বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

করোনা শুরুর সময়টা ঢাকা এবং বিভাগ হটস্পটে পরিণত হয়েছিলো। প্রথম কাতারে ছিলো ঢাকা মহানগরী এবং দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলো রাজধানীর পাঁজরঘেষা শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জ। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেই না মানুষের যাতায়ত বেড়ে গেলো, অমনি স্ফূলিঙ্গের মতো জ্বলে ওঠলো। ধীরে ধীরে সারা দেশে ছড়িয়ে যায় করোনার প্রাদুর্ভাব।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বার বার বলেছেন, আপনার যে যার অবস্থানে থাকুন। নিজে ও নিজের পরিবার এবং সমাজের মানুষদের রক্ষায় বিধিনিষেধ মেনে চলুন। প্রতিটি অনুষ্ঠানের শুরুতেই এমনি আকুল আবেদন জানিয়েছেন দেশের মানুষের কাছে। প্রধানমন্ত্রী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বার্তা কানে না তুলে গাদি গাদি করে মানুষ চলাচল করেছে। ফলে সংক্রমণকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর গত এপ্রিল ও জুন মাসে যে পরিমাণ সংক্রমণ হয়েছিল, তার চেয়ে বহুগুণ বেশি সংক্রমণ বাড়বে জুলাই মাসে। আক্রান্তের সংখ্যা এভাবে বাড়লে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।

বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত করোনা বিষয়ক বুলেটিনে তিনি বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সে অনুযায়ী জুলাই মাসের সংক্রমণ গত জুন এবং এপ্রিল মাসকে ছাড়িয়ে যাবে।

এমন পরিস্থিতিতে রোগীদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। এ বিষয়ে অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত যেখানে ২১ হাজার ৬২৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এপ্রিল মাসে সেই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যায়। জুন মাসে ১ লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন এবং জুলাই মাসের এখন পর্যন্ত মাত্র ৬ দিনে ৫৩ হাজার ১৪৮ জন রোগীকে শনাক্ত হয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী বিস্তার প্রবণতা অব্যাহত থাকে পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় জুলাইয়ে রোগীর সংখ্যা জুন-এপ্রিল মাসকেও ছাড়িয়ে যাবে।

জুলাই মাসের শুরুতে দেশে করোনা সংক্রমণের হার ছিল ২৫ শতাংশের কিছু বেশি। কিন্তু মঙ্গলবার শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৪৬ শতাংশে পৌঁছে। গত ২৯ জুন দেশে ৮ হাজার ৮২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়, সপ্তাহের ব্যবধানে যেখানে ১১ হাজার ছাড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত এক সপ্তাহ ধরে করোনায় মৃতের সংখ্যা শ’র ওপরে। ৩০ জুন ১১৫ জন মৃত্যু হয়েছিলো। এরপর ১ জুলাই ১৪৩ জন, ২ জুলাই ১৩২, ৩ জুলাই ১৩৩, ৬ জুলাই তা পৌছে যায় ১৬৩ জনে। এর আগের দিনও ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সর্বশেষ ৭জুলাই মৃতের সংখ্যা পৌছে গেলো একেবারে চূড়ায় অর্থাৎ ২০১ জনে!

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জুলাই মাসে করোনার সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের

আপডেট সময় : ১০:২৮:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১

ছবি সংগৃহিত

“স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত এক সপ্তাহ ধরে করোনায় মৃতের সংখ্যা শ’র ওপরে। ৩০ জুন ১১৫ জন মৃত্যু হয়েছিলো। এরপর ১ জুলাই ১৪৩ জন, ২ জুলাই ১৩২, ৩ জুলাই ১৩৩, ৬ জুলাই তা পৌছে যায় ১৬৩ জনে। এর আগের দিনও ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সর্বশেষ ৭জুলাই মৃতের সংখ্যা পৌছে গেলো একেবারে চূড়ায় অর্থাৎ ২০১ জনে!”

করোনার সংক্রমণ যে লাগামহীন অবস্থা তা বোঝা যাচ্ছে প্রতিদিনের আক্রান্তর মধ্য দিয়ে। একে লাগামহীন পরিস্থিতি বলা যেতে পারে। কারণ, প্রতিদিন আক্রান্ত পারদ উর্ধমুখী। বিস্তাররোধে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের শেষ দিনে আক্রান্তর সংখ্যা ১১ হাজার ১৬২ এবং মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের।

মঙ্গলবার আক্রান্তর সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছিলো সাড়ে ১১ হাজার। এই মৃত্যু ও সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তর মধ্য লকডাউনের সপ্তাহ পেরিয়ে গেল। পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।

সামনে কোরবাণীর ঈদ। মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদের মধ্যেও কি লকডাউন থাকবে না শীথিল হবে সেই বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

করোনা শুরুর সময়টা ঢাকা এবং বিভাগ হটস্পটে পরিণত হয়েছিলো। প্রথম কাতারে ছিলো ঢাকা মহানগরী এবং দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলো রাজধানীর পাঁজরঘেষা শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জ। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেই না মানুষের যাতায়ত বেড়ে গেলো, অমনি স্ফূলিঙ্গের মতো জ্বলে ওঠলো। ধীরে ধীরে সারা দেশে ছড়িয়ে যায় করোনার প্রাদুর্ভাব।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বার বার বলেছেন, আপনার যে যার অবস্থানে থাকুন। নিজে ও নিজের পরিবার এবং সমাজের মানুষদের রক্ষায় বিধিনিষেধ মেনে চলুন। প্রতিটি অনুষ্ঠানের শুরুতেই এমনি আকুল আবেদন জানিয়েছেন দেশের মানুষের কাছে। প্রধানমন্ত্রী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বার্তা কানে না তুলে গাদি গাদি করে মানুষ চলাচল করেছে। ফলে সংক্রমণকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর গত এপ্রিল ও জুন মাসে যে পরিমাণ সংক্রমণ হয়েছিল, তার চেয়ে বহুগুণ বেশি সংক্রমণ বাড়বে জুলাই মাসে। আক্রান্তের সংখ্যা এভাবে বাড়লে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।

বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত করোনা বিষয়ক বুলেটিনে তিনি বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সে অনুযায়ী জুলাই মাসের সংক্রমণ গত জুন এবং এপ্রিল মাসকে ছাড়িয়ে যাবে।

এমন পরিস্থিতিতে রোগীদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। এ বিষয়ে অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত যেখানে ২১ হাজার ৬২৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এপ্রিল মাসে সেই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যায়। জুন মাসে ১ লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন এবং জুলাই মাসের এখন পর্যন্ত মাত্র ৬ দিনে ৫৩ হাজার ১৪৮ জন রোগীকে শনাক্ত হয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী বিস্তার প্রবণতা অব্যাহত থাকে পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় জুলাইয়ে রোগীর সংখ্যা জুন-এপ্রিল মাসকেও ছাড়িয়ে যাবে।

জুলাই মাসের শুরুতে দেশে করোনা সংক্রমণের হার ছিল ২৫ শতাংশের কিছু বেশি। কিন্তু মঙ্গলবার শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৪৬ শতাংশে পৌঁছে। গত ২৯ জুন দেশে ৮ হাজার ৮২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়, সপ্তাহের ব্যবধানে যেখানে ১১ হাজার ছাড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত এক সপ্তাহ ধরে করোনায় মৃতের সংখ্যা শ’র ওপরে। ৩০ জুন ১১৫ জন মৃত্যু হয়েছিলো। এরপর ১ জুলাই ১৪৩ জন, ২ জুলাই ১৩২, ৩ জুলাই ১৩৩, ৬ জুলাই তা পৌছে যায় ১৬৩ জনে। এর আগের দিনও ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সর্বশেষ ৭জুলাই মৃতের সংখ্যা পৌছে গেলো একেবারে চূড়ায় অর্থাৎ ২০১ জনে!