ঢাকা ১০:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবন সংগ্রামে জয়ী স্বর্নালী চৌধুরী : পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবন আলোকিত করতে চান

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ৬২৪ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঋদি হক

‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’ জীবের প্রতি আন্তরিক না হলে স্রষ্টার নৈকট্য লাভ করা সম্ভব নয়। স্বয়ং স্রষ্টার সৃষ্টিকে ভালোবাসার মাধ্যমেই কেবল স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করা সম্ভব। স্রষ্টার নির্দেশ ছাড়া গাছের পাতাটিও নড়ে না। একজন সচেতন মানুষ হিসেবে সমাজের প্রতি তার কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নিজের অর্থ-সম্পদ সমাজের অনগ্রসর লোকদের কল্যাণে ব্যয় করেন অনেকে। তবে, এর জন্য চাই সুস্থ মানুষিকতা। তাছাড়া আত্মার তাগিদ না থাকলে অঢেল সম্পদ থাকলেও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সেবার সুযোগ ঘটে না। এমন ব্যক্তির সংখ্যা সমাজে খুব কম। অর্থ-সামর্থ্য না থাকলেও মানুষকে ভালোবাসা যায়। এমন মহৎ ব্যক্তিও আমাদের সমাজে রয়েছেন। নিজের যোগ্যতা, অর্থ-সামর্থ্য ও বিচার-বুদ্ধি দিয়ে অন্যের উপকারে এগিয়ে আসতে হবে এটা সামাজি দায়িত্বেরই একটা অংশ। যারা বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করছেন, তাদের অনেকেই বিভিশালী। আবার অনেকেই সমাজের দশজনকে ঐক্যবদ্ধ করে সেবামূল কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন, স্বার্ণালী চৌধুরী।
তবে, আজকের আলোচিক ব্যক্তিটি হচ্ছেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। যিনি মানুষকে ভালোবাসেন। তাদের জন্য কিছু করতে চান। সময়-সুযোগ পেলেই কাজ চালিয়ে যান। সমাজের উচু-নিচু বলে তার খাতায় নেই। মানুষ হিসেবে, মানুষের সেবাদানই তার লক্ষ্য। হাজারো প্রতিকূলতার মুখোমুখি হলেও লড়াই করে তা উৎড়ে গেছেন। এমন এক জীবন সংগ্রামী ও আলোকিত নারীর নাম স্বার্ণালী চৌধুরী। একাধারে সংগঠক, সমাজসেবী এবং সংস্কৃতি পরিমন্ডলের বাসিন্দা। জীবনভর কঠোর সংগ্রামী এবং প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করতে সাহসিনী এক হার না মানা নারী। যিনি নিজেকে কখনও অবলা ভাবেননি। তিনি অধিকার রক্ষায় প্রতিবাদ করেছেন। সম্পৃক্ত হয়েছেন কর্ম-সেবায়। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পেছনের অনুপ্রেরণা বাবা-মা। মাও মানবসেবার ভাবনায় থেকেছেন। আজ বাবা-মা দুজনই স্বর্গীয়। গলা ধরে আসে স্বার্ণালী চৌধুরীর। বললেন, মানব জীবনের সংক্ষিপ্ত জমিনে সুফল চাষ করে যেতে চাই। এতেই আমার পরম সার্থকতা।
সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য সব সময় ভাবেন। একটা দৃষ্টান্ত রাখতে চান কর্মের মধ্য দিয়ে। এই মানবিকগুণের আবেদনটিকে মানবসেবার মাধ্যমে নিবেদিত করেছেন সমাজের অনগ্রসর শ্রেণীর কল্যাণে। কাজ করে চলেছেন নিভৃতে। তাই বহুমাত্রিক অভিধাটি তার জন্যই মানায়। এ কারণেই আজকের একজন আলোকিত নারী তিনি। নিজেকে শুধু আপন বলয়ে আত্মকেন্দ্রিকতার দেয়ালে বন্দী না রেখে তিনি সমর্পিত হয়েছেন বহুজনের মাঝে শুভ, সুন্দর, কল্যাণের মঙ্গলালোকে। তাই তিনি আমাদের সমাজের শুভবোধের সারথী। তিনি সামনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারেন পশ্চাৎপদ অনগ্রসর মানুষকে যে-কোন চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে।
সমাজের অস্বচ্ছল ও অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প মহিয়ষী করেছে জীবন সংগ্রামে জয়ী এই নারীকে। তার এই মানবিক গুণের কারণেই তিনি সমাজের অবহেলিত মানুষের মনমন্দিরে স্থায়ী আসন পেতে চান। তিনি মনে করেন, সেবাই হচ্ছে ধর্ম ব্রত পালনের মত একটি পবিত্র দায়িত্ব। তাই তার মনে সব সময়ই উদীত হয় ‘মানব সেবাই ধর্ম, কর্মই জীবন। এই দায়িত্ববোধ সমাজের সাম্য, শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। তাই একজন দুঃস্থের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে যদি তার জীবনের অবলম্বন তৈরি করে দেয়া যায়-তা হলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় মহৎ কর্তব্য পালন। এই কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে মানুষের মহত্ব প্রাপ্তির সুযোগ ঘটে। এই মহত্ব অর্জনের মধ্য দিয়েই সমাজের মলিনতা দূর হয়।
তিনি বিভিন্ন সমাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত কানেক্টিভিটি নেটওয়ার্কের শিলচর চেপ্টারের সদস্য। এছাড়া উভয় বাংলার কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীদের নিয়ে গঠিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘রবীন্দ্র-নজরুল মঞ্চের’ বরাক উপত্যকার সমন্বয়ক। সমাজে নারী শক্তিকে এখনো অনেকটা শৃঙ্খলিত করে রাখা হয়েছে। কারণ, নারীরা নানাভাবে কুসংস্কারেরর শিকার। কিছুটা ধর্মীয় গোড়ামীর কারণেই সমাজ উন্নয়নের নারীরা পুরুষের সমান অবদান রাখতে পারছেন না। যদিও পৃথিবীব্যাপী নারী উন্নয়নের সুবাতাস বইছে। কোথায় নেই নারীর অবদান? ঘর থেকে শুরু করে আকাশ অব্দিতো দেখা যাচ্ছে নারীরা দোর্দন্ড প্রতাপে এগিয়ে যাচ্ছেন।
ভারত, বৃটেনের মতো আধুনিক দেশে সফলতার সঙ্গে নারী প্রধানমন্ত্রীরা দেশ পরিচালনা করেছে। অ্যাঞ্জেলা মার্কেজতো এখনও আছেন। আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতো উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিচ্ছেন। বাংলাদেশকে আজ ঈর্ষনীয়স্থানে পৌছে দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ আজ সাবমেরিন ও স্যাটেলাইটের গর্বিত মালিক। সুতরাং তারপরও বলবো নারীর ক্ষমতায়ন এখন অনেকটা শ্লোগানবন্দী। স্বার্ণালী চৌধুরী তার সীমিত সামর্থের মধ্যেই সেবাব্রত’র মন্ত্রে দু’বাহু বাড়িয়ে দিয়েছেন-এটাই তার জীবনের লক্ষ্য। তার দুয়ার সকাল-সন্ধ্যা-রাত অষ্টপ্রহরব্যাপী সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষের জন্য খোলা। তাদের জীবনে যে তিনি দ্বীপ জ্বালাতে চান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জীবন সংগ্রামে জয়ী স্বর্নালী চৌধুরী : পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবন আলোকিত করতে চান

আপডেট সময় : ০২:০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০

ঋদি হক

‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’ জীবের প্রতি আন্তরিক না হলে স্রষ্টার নৈকট্য লাভ করা সম্ভব নয়। স্বয়ং স্রষ্টার সৃষ্টিকে ভালোবাসার মাধ্যমেই কেবল স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করা সম্ভব। স্রষ্টার নির্দেশ ছাড়া গাছের পাতাটিও নড়ে না। একজন সচেতন মানুষ হিসেবে সমাজের প্রতি তার কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নিজের অর্থ-সম্পদ সমাজের অনগ্রসর লোকদের কল্যাণে ব্যয় করেন অনেকে। তবে, এর জন্য চাই সুস্থ মানুষিকতা। তাছাড়া আত্মার তাগিদ না থাকলে অঢেল সম্পদ থাকলেও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সেবার সুযোগ ঘটে না। এমন ব্যক্তির সংখ্যা সমাজে খুব কম। অর্থ-সামর্থ্য না থাকলেও মানুষকে ভালোবাসা যায়। এমন মহৎ ব্যক্তিও আমাদের সমাজে রয়েছেন। নিজের যোগ্যতা, অর্থ-সামর্থ্য ও বিচার-বুদ্ধি দিয়ে অন্যের উপকারে এগিয়ে আসতে হবে এটা সামাজি দায়িত্বেরই একটা অংশ। যারা বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করছেন, তাদের অনেকেই বিভিশালী। আবার অনেকেই সমাজের দশজনকে ঐক্যবদ্ধ করে সেবামূল কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন, স্বার্ণালী চৌধুরী।
তবে, আজকের আলোচিক ব্যক্তিটি হচ্ছেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। যিনি মানুষকে ভালোবাসেন। তাদের জন্য কিছু করতে চান। সময়-সুযোগ পেলেই কাজ চালিয়ে যান। সমাজের উচু-নিচু বলে তার খাতায় নেই। মানুষ হিসেবে, মানুষের সেবাদানই তার লক্ষ্য। হাজারো প্রতিকূলতার মুখোমুখি হলেও লড়াই করে তা উৎড়ে গেছেন। এমন এক জীবন সংগ্রামী ও আলোকিত নারীর নাম স্বার্ণালী চৌধুরী। একাধারে সংগঠক, সমাজসেবী এবং সংস্কৃতি পরিমন্ডলের বাসিন্দা। জীবনভর কঠোর সংগ্রামী এবং প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করতে সাহসিনী এক হার না মানা নারী। যিনি নিজেকে কখনও অবলা ভাবেননি। তিনি অধিকার রক্ষায় প্রতিবাদ করেছেন। সম্পৃক্ত হয়েছেন কর্ম-সেবায়। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পেছনের অনুপ্রেরণা বাবা-মা। মাও মানবসেবার ভাবনায় থেকেছেন। আজ বাবা-মা দুজনই স্বর্গীয়। গলা ধরে আসে স্বার্ণালী চৌধুরীর। বললেন, মানব জীবনের সংক্ষিপ্ত জমিনে সুফল চাষ করে যেতে চাই। এতেই আমার পরম সার্থকতা।
সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য সব সময় ভাবেন। একটা দৃষ্টান্ত রাখতে চান কর্মের মধ্য দিয়ে। এই মানবিকগুণের আবেদনটিকে মানবসেবার মাধ্যমে নিবেদিত করেছেন সমাজের অনগ্রসর শ্রেণীর কল্যাণে। কাজ করে চলেছেন নিভৃতে। তাই বহুমাত্রিক অভিধাটি তার জন্যই মানায়। এ কারণেই আজকের একজন আলোকিত নারী তিনি। নিজেকে শুধু আপন বলয়ে আত্মকেন্দ্রিকতার দেয়ালে বন্দী না রেখে তিনি সমর্পিত হয়েছেন বহুজনের মাঝে শুভ, সুন্দর, কল্যাণের মঙ্গলালোকে। তাই তিনি আমাদের সমাজের শুভবোধের সারথী। তিনি সামনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারেন পশ্চাৎপদ অনগ্রসর মানুষকে যে-কোন চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে।
সমাজের অস্বচ্ছল ও অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প মহিয়ষী করেছে জীবন সংগ্রামে জয়ী এই নারীকে। তার এই মানবিক গুণের কারণেই তিনি সমাজের অবহেলিত মানুষের মনমন্দিরে স্থায়ী আসন পেতে চান। তিনি মনে করেন, সেবাই হচ্ছে ধর্ম ব্রত পালনের মত একটি পবিত্র দায়িত্ব। তাই তার মনে সব সময়ই উদীত হয় ‘মানব সেবাই ধর্ম, কর্মই জীবন। এই দায়িত্ববোধ সমাজের সাম্য, শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। তাই একজন দুঃস্থের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে যদি তার জীবনের অবলম্বন তৈরি করে দেয়া যায়-তা হলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় মহৎ কর্তব্য পালন। এই কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে মানুষের মহত্ব প্রাপ্তির সুযোগ ঘটে। এই মহত্ব অর্জনের মধ্য দিয়েই সমাজের মলিনতা দূর হয়।
তিনি বিভিন্ন সমাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত কানেক্টিভিটি নেটওয়ার্কের শিলচর চেপ্টারের সদস্য। এছাড়া উভয় বাংলার কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীদের নিয়ে গঠিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘রবীন্দ্র-নজরুল মঞ্চের’ বরাক উপত্যকার সমন্বয়ক। সমাজে নারী শক্তিকে এখনো অনেকটা শৃঙ্খলিত করে রাখা হয়েছে। কারণ, নারীরা নানাভাবে কুসংস্কারেরর শিকার। কিছুটা ধর্মীয় গোড়ামীর কারণেই সমাজ উন্নয়নের নারীরা পুরুষের সমান অবদান রাখতে পারছেন না। যদিও পৃথিবীব্যাপী নারী উন্নয়নের সুবাতাস বইছে। কোথায় নেই নারীর অবদান? ঘর থেকে শুরু করে আকাশ অব্দিতো দেখা যাচ্ছে নারীরা দোর্দন্ড প্রতাপে এগিয়ে যাচ্ছেন।
ভারত, বৃটেনের মতো আধুনিক দেশে সফলতার সঙ্গে নারী প্রধানমন্ত্রীরা দেশ পরিচালনা করেছে। অ্যাঞ্জেলা মার্কেজতো এখনও আছেন। আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতো উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিচ্ছেন। বাংলাদেশকে আজ ঈর্ষনীয়স্থানে পৌছে দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ আজ সাবমেরিন ও স্যাটেলাইটের গর্বিত মালিক। সুতরাং তারপরও বলবো নারীর ক্ষমতায়ন এখন অনেকটা শ্লোগানবন্দী। স্বার্ণালী চৌধুরী তার সীমিত সামর্থের মধ্যেই সেবাব্রত’র মন্ত্রে দু’বাহু বাড়িয়ে দিয়েছেন-এটাই তার জীবনের লক্ষ্য। তার দুয়ার সকাল-সন্ধ্যা-রাত অষ্টপ্রহরব্যাপী সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষের জন্য খোলা। তাদের জীবনে যে তিনি দ্বীপ জ্বালাতে চান।