জল ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে সর্বোচ্চ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী ভারত : দোরাইস্বামী
- আপডেট সময় : ০৪:১৯:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ২৩৭ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস রিপোর্ট
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, ভারত সরকার জল ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী। সেই আগ্রহের কারণেই দুই দেশের মধ্যে ছয়টি নদী নিয়ে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির কাজ শুরু হয়েছে। তবে তিস্তা চুক্তি না হওয়া দুঃখজনক। ভারতের রাজ্য সরকারের আপত্তির কারণেই তিস্তা চুক্তি আটকে আছে। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি সুরাহার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন আয়োজন ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার এসব কথা বলেন।
দোরাইস্বামী বলেন, তিস্তা বিষয়ে সুরাহার জন্য ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। যে কারণে বিষয়টির মীমাংসা হচ্ছে না, আমি সেটি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির জন্য ভারত সরকারকে আমাদের অভ্যন্তরীণ একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অনুমোদন নিতে হবে। সেই অনুমোদনের জন্য ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এটা খুবই দুঃখজনক যে রাজ্য সরকারের আপত্তির কারণে তিস্তা চুক্তি এখনো হচ্ছে না। তাই নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সফরে তিস্তা বিষয়ক চুক্তি হবে কি না, সেটিও আমি এখনই বলতে পারছি না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্ভাব্য ঢাকা সফরে তিস্তা চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা এর আগে জানিয়েছেন বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেনও। গত ৩১ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আগামী এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন। এছাড়া আরও কয়েকটি রাজ্যের ভোট হবে। আমরা জানি যে ভোটের সময় যেকোনো বিষয়ে কাজ করা খুব জটিল। এদিকে, মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর করার কথা, আর তাদের ভোট এপ্রিলে। সেদিক দিয়ে তিস্তা চুক্তির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ থেকে যায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৫ ও ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পশ্চিমববঙ্গে দুই দিনের সফর করেন। ওই সফর শেষে ২০১৮ সালের ২৮ মে তৎকালীন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এক প্রেস বিফিংয়ে বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন বা এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গকে পাশ কাটিয়ে ভারত সরকার কিছুই করবে না। কেননা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে।
একাত্তরে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা যে নারকীয় গণহত্যা চালিয়েছে, তার বিচারের উদ্যোগ বাংলাদেশ যেকোনো সময় নিতে পারে বলেও মন্তব্য করেনে ভারতের হাইকমিশনার। আর এজন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পাদিত ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি এই গণহত্যার বিচারে কোনো প্রভাব ফেলবে না উল্লেখ করেন এই কূটনীতিক। একাত্তরের গণহত্যার দায় থেকে বাঁচতে পাকিস্তান ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির প্রসঙ্গ টানে কি না প্রসঙ্গে হাইকমিশনার বলেন, গণহত্যার বিচার যেকোনো সময়ই হতে পারে। ৫০ বছর পরও এই বিচার হতে পারে।
আর ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল, যেসব বাংলাদেশি নাগরিক পাকিস্তানের কারাগারে আটক ছিল, তাদের যাতে দ্রুত এবং সহজে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়। ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিকাব) সভাপতি পান্থ রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনউদ্দীন।