জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই

- আপডেট সময় : ১২:৩১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১ ১৭৩ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস আজ
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পরিকল্পিত জনসংখ্যার বিকল্প নেই। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের আগের দিনে বার্তায় একথাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিকল্পিত জনসংখ্যাই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌছানোর অন্যতম সিঁড়ি। যা বাংলাদেশের পক্ষে এটা একটা বড় সমস্যাই বলা যায়।
আবার করোনাকালীন সময়ে অনাকাক্সিক্ষত গর্ভধারণ ও বাল্যবিবাহ বেড়েছে এমন বলা হচ্ছে। একারণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবার পক্ষেও যুক্ত রয়েছে। তবে মূল কথা হচ্ছে, সচেতনতার বিষয়টি সেভাবে বৃদ্ধির লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে সনাতনি ধ্যান ধারণা থেকে তৃণমূলের একটা বড় অংশ বেড়িয়ে আসতে পারছে না।
মামহামারির বাধাকে অতিক্রম করে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পরিবার পরিকল্পনা সেবার মান উন্নয়নে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে জোরালো সম্পৃক্ততায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

অনলাইন স্বাস্থ্যসেবার আওতা বাড়াতেও সরকারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরামর্শও রয়েছে।
আজ বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য :‘অধিকার ও পছন্দই মূলকথা: প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার প্রাধান্য পেলে কাঙ্ক্ষিত জন্মহারে সমাধান মেলে।’ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে। বর্তমানে করোনার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল ইউএনএফপিএ এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে আমার শরীর, কিন্তু আমার পছন্দ নয় শীর্ষক প্রতিবেদন বলছে, ৫৭টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের অর্ধেকের বেশি নারী যৌনমিলন, জন্মনিয়ন্ত্রণ এমনকি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারে না।
সেভ দ্য চিলড্রেনের গ্লোবাল রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৫ লাখ মেয়ে বাল্যবিবাহর ঝুঁকিতে। আর বাল্যবিবাহর শিকার ১০ লাখ মেয়ে সন্তানসম্ভবা হওয়ার আশঙ্কায়। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ২ লাখেরও বেশি মেয়ে বাল্যবিবাহর ঝুঁকিতে রয়েছে, যার প্রভাব বাংলাদেশের জন্য অশুভ। মহামারির কারণে ২০২৫ সালে বাল্যবিবাহর সংখ্যা বেড়ে মোট ৬ কোটি ১০ লাখ পর্যন্ত হবার আশঙ্কা সংস্থাটির।
বাল্যবিবাহতে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। কিন্তু করোনা মহামারির মধ্যে এদেশে ১৩ শতাংশ বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিগত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উত্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাকালে প্রথম তিন মাসে (মার্চ- জুন ২০২০) সারা দেশে ২৩১টি বাল্যবিবাহ হয়েছে এবং ২৬৬টি বাল্যবিবাহ ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।
সবচেয়ে বেশিসংখ্যক বাল্যবিবাহ হয়েছে কুড়িগ্রাম, নাটোর, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলায়। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বলছে, গত জুন মাসে ৪৬২টি কন্যা শিশু বাল্যবিবাহর শিকার হয়। এর মধ্যে প্রশাসন ও সচেতন মানুষের আন্তরিক সক্রিয় উদ্যোগে ২০৭টি বন্ধ করা সম্ভব হয়।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কাজী মহিউল ইসলামের মতে, করোনাকালে সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে সেবা গ্রহণ অথবা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবার পরিকল্পনা তথ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। তাই অ্যাপভিত্তিক সেবার গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হবে।
মেরী স্টোপস বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি ও কমিউনেশন প্রধান মনজুন নাহার বলেন, করোনাকালে প্রজনন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে অল্প বয়সে গর্ভধারণ, গর্ভপাত এবং অনিরাপদ সন্তান প্রসবের বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় তা প্রতিরোধে আমাদের কাজ করে যেতে হবে।