ঢাকা ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে

ভয়েস রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১২:৫৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুলাই ২০২১ ১০০ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিটিটিসি প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান

‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে স্মার্ট অ্যাপ্রোচ পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে সিটিটিসি ২৩ টি হাই রিস্ক অপারেশন চালিয়েছে। এসব অভিযানে ৬৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়’

বৃহস্পতিবার হলি আর্টিজান হামলার পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গি বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে সিটিটিসি নিরলসভাবে কাজ করার কথা জানিয়ে সিটিটিসি প্রধান বলেন, জঙ্গি সংগঠনগুলোর বড় ধরনের নাশকতা করার সক্ষমতা এখন একেবারেই নেই। তাদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

হলি আর্টিজান হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, ভয়াবহ হামলার তদন্তভার সিটিটিসিকে দেয়া হলে সিটিটিসি স্বল্পতম সময়ে এ হামলায় জড়িত সকল সন্ত্রাসী, পরিকল্পনাকারী, অর্থ যোগানদাতাসহ অভিযুক্ত সকলকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে।

তিনি আরও বলেন, সিটিটিসি আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করেছে। এসব কর্মশালায় কলেজ-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পুলিশ সদস্য, কারা কর্মকর্তা ও কারারক্ষী, জনপ্রতিনিধি, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ,

এনজিও, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, ধর্মীয় পান্ডিত্যসম্পন্ন ব্যক্তিবগর্, উগ্রবাদী ও সন্ত্রাসী (জামিনপ্রাপ্ত), তাদের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্য, সন্ত্রাসী ঘটনার ভূক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্য এবং বিভিন্ন অংশীজনেরা অংশগ্রহণ করেন।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অংশগ্রহণে এ পর্যন্ত এ ধরনের ১৭৪ টি আলোচনা ও কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে ৩৯ হাজার ৪শ’ জনকে উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করে তোলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সকলের মতামতের ভিত্তিতে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে একটি সমন্বিত কর্মকৌশল গ্রহণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সিটিটিসি ২০১৯ সালে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, নাগরিক সমাজ, শিক্ষা-গবেষণা ক্ষেত্রে কর্মরত

ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, আন্তর্জাতিক এনজিওসমূহের প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণে দেশে প্রথমবারের মত উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সাইবার স্পেসকে নিরাপদ রাখতে সিটিটিসির সাইবার মনিটরিংসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় পাঁচজনের একটি সন্ত্রাসী দল অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা দেশী-বিদেশী মোট ২০ জন নাগরিক ও দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাকে নৃশংসভাবে খুন করেছে।

তাদের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে মারা যান ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয়, ১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান এবং ২ জন বাংলাদেশী নাগরিক। সেদিনের সম্মিলিত প্রতিরোধ অভিযানে মোট ৩২ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়।

এ ঘটনায় একই বছরের ৪ জুলাই সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে ২১ জন আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে পাঁচজন অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহত হন এবং পরবর্তী সময়ে

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে আরও আটজন নিহত হন। এ মামলার রায়ে সাতজনকে মৃত্যুদন্ড ও একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে

আপডেট সময় : ১২:৫৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুলাই ২০২১

সিটিটিসি প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান

‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে স্মার্ট অ্যাপ্রোচ পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে সিটিটিসি ২৩ টি হাই রিস্ক অপারেশন চালিয়েছে। এসব অভিযানে ৬৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়’

বৃহস্পতিবার হলি আর্টিজান হামলার পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গি বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে সিটিটিসি নিরলসভাবে কাজ করার কথা জানিয়ে সিটিটিসি প্রধান বলেন, জঙ্গি সংগঠনগুলোর বড় ধরনের নাশকতা করার সক্ষমতা এখন একেবারেই নেই। তাদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

হলি আর্টিজান হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, ভয়াবহ হামলার তদন্তভার সিটিটিসিকে দেয়া হলে সিটিটিসি স্বল্পতম সময়ে এ হামলায় জড়িত সকল সন্ত্রাসী, পরিকল্পনাকারী, অর্থ যোগানদাতাসহ অভিযুক্ত সকলকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে।

তিনি আরও বলেন, সিটিটিসি আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করেছে। এসব কর্মশালায় কলেজ-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পুলিশ সদস্য, কারা কর্মকর্তা ও কারারক্ষী, জনপ্রতিনিধি, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ,

এনজিও, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, ধর্মীয় পান্ডিত্যসম্পন্ন ব্যক্তিবগর্, উগ্রবাদী ও সন্ত্রাসী (জামিনপ্রাপ্ত), তাদের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্য, সন্ত্রাসী ঘটনার ভূক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্য এবং বিভিন্ন অংশীজনেরা অংশগ্রহণ করেন।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অংশগ্রহণে এ পর্যন্ত এ ধরনের ১৭৪ টি আলোচনা ও কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে ৩৯ হাজার ৪শ’ জনকে উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করে তোলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সকলের মতামতের ভিত্তিতে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে একটি সমন্বিত কর্মকৌশল গ্রহণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সিটিটিসি ২০১৯ সালে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, নাগরিক সমাজ, শিক্ষা-গবেষণা ক্ষেত্রে কর্মরত

ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, আন্তর্জাতিক এনজিওসমূহের প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণে দেশে প্রথমবারের মত উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সাইবার স্পেসকে নিরাপদ রাখতে সিটিটিসির সাইবার মনিটরিংসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় পাঁচজনের একটি সন্ত্রাসী দল অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা দেশী-বিদেশী মোট ২০ জন নাগরিক ও দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাকে নৃশংসভাবে খুন করেছে।

তাদের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে মারা যান ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয়, ১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান এবং ২ জন বাংলাদেশী নাগরিক। সেদিনের সম্মিলিত প্রতিরোধ অভিযানে মোট ৩২ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়।

এ ঘটনায় একই বছরের ৪ জুলাই সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে ২১ জন আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে পাঁচজন অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহত হন এবং পরবর্তী সময়ে

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে আরও আটজন নিহত হন। এ মামলার রায়ে সাতজনকে মৃত্যুদন্ড ও একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।