ছাত্রলীগের পদধারী অনেকেই আন্দোলনে ছিলেন সারজিস

- আপডেট সময় : ১০:২৯:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ১০৪ বার পড়া হয়েছে
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন। তাতে সারজিস বলেন, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও হলের পদধারী হলেই গণহারে গ্রেপ্তারের পক্ষে নন তিনি। বলেন, অনেককেই বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগ করতে হয়েছে। তাদের অনেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছিলেন।
সারজিস আলম বলেন, তার এই বক্তব্য শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অন্য বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নেই। কাজেই তার এই বক্তব্য যেন অন্য ক্ষেত্রে মেলানো না হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র সারজিস একসময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৯ সালের মার্চে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল সংসদের সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকার ২৩ অক্টোবর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গত ১৫ জুলাইয়ের হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ সম্পর্কে মন্তব্য এলো সারজিস আলমের তরফে।
সারজিস লেখেন, একটা বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করতে চাই। বিষয়টা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে। ১ জুলাইয়ের আগে এবং তারপর ১ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আন্দোলন চলমান ছিল, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। এই আন্দোলনটা প্রধানত ১৫ তারিখ (জুলাই) পর্যন্ত হলের ছেলেমেয়েরাই নিয়ে গিয়েছে।
যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তারা খুব ভালো করে জানেন যে এখানে হলে থাকতে হলে অবশ্যই ছাত্রলীগ করতে হতো। তাদের প্রোগ্রাম (কর্মসূচি), গেস্টরুম (অতিথিকক্ষে ডেকে নেওয়া) করতে হতো, গণরুমে থাকতে হতো। সে জন্য যারা হলে থাকত, তাদের অধিকাংশ একপ্রকার বাধ্য হয়েই এসব করত।
হলে ছাত্রলীগের যে কমিটি হতো, এখানে প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী কমিটিতে থাকত কিছু কারণে; যেমন, ভালো একটা কক্ষ বা সিট যেন পাওয়া যায়, যেন চাকরি হওয়া পর্যন্ত হলে থাকা যায় ও অন্যরা যেন তার ওপর অন্যায় না করে বা ট্যাগ না দেয়। বাকি ২০ শতাংশের মধ্যে অনেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করত, অনেকে ভিন্নমতের লোকদের ওপর অত্যাচার করত, অনেকে ক্যান্ডিডেট (হল শাখার শীর্ষ পদপ্রত্যাশী) হতো, অনেকে একটু ফাঁপর নিয়ে চলত।
সারজিস আরও লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক প্রথম ধাপের ১৬-১৭ দিনের আন্দোলনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী। তারা যেমন পোস্টেড (ছাত্রলীগের পদধারী) ছিল, তেমনি হলের তুলনামূলক ক্লিন ইমেজ (স্বচ্ছ ভাবমূর্তির) প্রভাব রাখা ফেস (মুখ) ছিল। তারা হল থেকে ব্যানার নিয়ে আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে নেমেছিল বলেই আদার্স নন-পোস্টেড সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে বের হয়ে আসতে পেরেছিল এবং এ কারণেই ক্যান্ডিডেটরা হল থেকে প্রোগ্রাম নিয়ে আন্দোলনে আসা আটকাতে পারেনি। আংশিক বক্তব্য দেওয়া হল