চিত্ত সেনের কবিতা ‘মাটির সর্গ’
- আপডেট সময় : ০৯:০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৯৮ বার পড়া হয়েছে
সেবা ধর্মের আদর্শ ভিতে সোনার বাংলা গড়া
তাইতো ও রূপ অপরূপ রূপে বিশ্বের মনোহরা
যেখানেই থাকি কোলে বা কাছে অথবা দূর প্রবাসে,
শ্যামল শোভার লাবণ্যময়ী মুখ খানি মনে ভাসে ।
ফলে ফুলে গাছ খালে বিলে মাছ, মাঠে পাকা সোনা ধান,
একই ফলে জলে ফসলে সকলে প্রাণের অর্ঘ্যপান
মন্দিরে বাজে কাসর ঘণ্টা মসজিদে আজান
ভোরের বাতাসে ভাসে সে এক মধুর ঐকতান
হিন্দু মুসলিম দুটিতে যমজ ভাইয়ের মতো থাকে
বলতো মা এর চেয়ে আর বেহেশ্ত বলে কাকে
বারোমাসের ছয় ঋতুতে তুমি ছয়ে রূপ ধরো
গ্রীষ্মে তপ্ত তপন দহনে মাটি ফুটিফাটা করো
তখন তোমার রুদ্রমূর্তি তপ্ত সে নিশ্বাসে
জীবকুলেও চিড় ধরে যেন বাঁচার সে বিশ্বাসে
পিপাসা হরিতে যোগাও তখন রসফল যতকিছু
ফুটি তরমুজ, জাম জামরুল, আম কাঁঠাল আর লিচু
বর্ষায় তুমি জলছবি হও অবিরাম ধারাপাতে
ছল ছল করি কল কল বেগে বয়ে যাও নানা খাতে
শরতে তোমার নির্মল শোভা মাঠে সবুজের ঢেউ
মনে হয় এক সবুজ ওড়না শুকোতে দিয়েছে কেউ
জমিনে তার কেউ দিয়েছে নিপুন হাতে তুলে
নকশা সে এক চোখ ধাঁধানো কলমি শাপলা ফুলে
হেমন্তে দাও মা হিমের পরশ উঠোনে মাঠের সোনা
চাষির মনে আনন্দে চলে স্বপ্নের জাল বোনা
শীতের সকালে থাকো মা তুমি কুয়াশা ঘোমটা ঢাকা
খানিক বাদেই কুয়াশা ঝেড়ে সোনা রোদ গায়ে মাখা
বসন্তে তুমি নব কিশলয়ে করো নব রূপসজ্জা
মনে হয় এক নববধু ঢাকে অবগুন্ঠনে লজ্জা
আছো কি মা তুমি সেই পুরাতনী গাঁয়ের মায়ের বেশে
নাকি শহুরে প্রসাধনে সেজে আধুনিকা হলে শেষে
কোরান পুরান বেদ বাইবেল ধর্মগ্রন্থ যত
তোমার সেবা ধর্মের কাছে সকলেই পরাহত
তেরো বছরে কোল ছাড়া হয়ে তিরাশীর এখন আমি
আমার জীবন দীপ নিভু নিভু এখন অস্তগামী
জানিনা কখন শেষ শিখা নিভে যাব মা অস্তাচলে
মনের গোপন ইচ্ছেটুকু তাই যেতে চাই বলে
জানিনা জন্ম হবে কিনা আর হয় যদি তাহলে
আবার যেন আসি মা তোমার মাটির স্বর্গ কোলে ।