ঢাকা ১২:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চিত্তরঞ্জন সেনের কবিতা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩ ১৪৫ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সোনার বাংলা

মাগো, আমি নানা রঙের সুখের স্বপ্ন দেখে
এসেছি এই অস্ত খন্ডে, তোমায় ফেলে রেখে
এখানে এসে দেখি মানুষের মুখ মুখোসে ঢাকা
এখানে কথায় ভেজাল মেশানো, খাঁটিটা আড়াল রাখা
এখানে নেই রাম-রহিমের মধুর মিলন ছন্দ
এখানে ছড়ায় বাতাসে বিষ, ধর্মের নামে দ্বন্দ্ব
এখানে দেখিনা ধূলি-কাঁদা মাখা তোমার সে মুখখানি
এখানে দেখি সবই পোষাকি সেজেগুজে পাটরাণী
এখানে নেই মা-মাটিতে খোলা মাঠ-ঘাট, আকাশ ছাদের নীচে
অন্ধ গলির নরকে এখানে মুক্তিরা কাঁদে মিছে
এখানে নেই মা আমার পূর্ব পুরুষের গন্ধ
ভাবের ঘরে অভাব এখানে নেই জীবননান্দ
উদয় খন্ড তুমি মা, আমার সোনার বাংলাদেশ
তোমার কোলে জন্মাই যেন, তোমাতেই হই শেষ।

চিত্তরঞ্জসেন, কলকাতা

(তিনি যখন মুঠো ফোনে কথা বলছিলেন, তখন রীতিমত কণ্ঠ কাঁপছিল। সম্ভব হাতও, গলা ধরে আসছিল তাঁর। জন্মভিটা ঘিরে দিগন্ত প্রসারিত সবুজ ফসলের মাঠ, পুকুর, গাছপালা, সেন বাড়ির বিশাল আঙ্গিনা এসবের স্বাদ যেন মুঠোফোনেই পাচ্ছিলেন ৮৩ বছরের অবসর জীবন কাটানো চিত্তরঞ্জন সেন। তাঁর কথা যতই শুনছি, ততই মন্ত্রমুগ্ধের মতো মন ছুটে যেতে চাইলে হিজল-তমালের গাঁয়–। তাঁর কথা শুনতে গিয়ে দু’চোখের পাতা ভিজে ওঠে। এতো আবেগ চেপে রেখে ৮৩তে পা রাখলেন সেন বাবু। মনের কপাট খুলে লিখে পাঠালেন ‘সোনার বাংলা’ কবিতা। পড়ন্ত বয়সেও হাতের লেখায় কোন খাত নেই। বলছিলেন, জানানোতো, মা শব্দের সঙ্গে জড়িয়ে আছে টি। অর্থাৎ মা-টি। প্রথমে ‘মা’ পরে ‘টি’ মাটি। এই মাটিই আমাদের পরম আত্মীয়। আমাদের সবাইকে তার কাছে ফিরে যেতে হবে। এই মাটিই আমাদের সবচেয়ে আপন। আধ্যাত্মিক আবহে ভাসতে থাকেন সেন বাবু। বললেন, জানানো, যখন চোখের পাতা বন্ধ করি, তখন সব কিছু সেলিলয়েটের ফিতের মতো ভাসতে থাকে। আমার গাঁ, পাঠশালা, ফসলের মাঠ, আম-কাঠাল, বন্ধু-বান্ধব মিলে দূরন্তপনা, গা কাঁপানো সব কর্মকান্ড। বড় টানে গো সেই নির্ভেজাল মায়াবি গা আমার। তাঁর কাছে আর্শিবাদ চাইলাম, বললাম সময় করে এসে আপনার পদধূলি নেব।)

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চিত্তরঞ্জন সেনের কবিতা

আপডেট সময় : ০৯:৩০:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩

সোনার বাংলা

মাগো, আমি নানা রঙের সুখের স্বপ্ন দেখে
এসেছি এই অস্ত খন্ডে, তোমায় ফেলে রেখে
এখানে এসে দেখি মানুষের মুখ মুখোসে ঢাকা
এখানে কথায় ভেজাল মেশানো, খাঁটিটা আড়াল রাখা
এখানে নেই রাম-রহিমের মধুর মিলন ছন্দ
এখানে ছড়ায় বাতাসে বিষ, ধর্মের নামে দ্বন্দ্ব
এখানে দেখিনা ধূলি-কাঁদা মাখা তোমার সে মুখখানি
এখানে দেখি সবই পোষাকি সেজেগুজে পাটরাণী
এখানে নেই মা-মাটিতে খোলা মাঠ-ঘাট, আকাশ ছাদের নীচে
অন্ধ গলির নরকে এখানে মুক্তিরা কাঁদে মিছে
এখানে নেই মা আমার পূর্ব পুরুষের গন্ধ
ভাবের ঘরে অভাব এখানে নেই জীবননান্দ
উদয় খন্ড তুমি মা, আমার সোনার বাংলাদেশ
তোমার কোলে জন্মাই যেন, তোমাতেই হই শেষ।

চিত্তরঞ্জসেন, কলকাতা

(তিনি যখন মুঠো ফোনে কথা বলছিলেন, তখন রীতিমত কণ্ঠ কাঁপছিল। সম্ভব হাতও, গলা ধরে আসছিল তাঁর। জন্মভিটা ঘিরে দিগন্ত প্রসারিত সবুজ ফসলের মাঠ, পুকুর, গাছপালা, সেন বাড়ির বিশাল আঙ্গিনা এসবের স্বাদ যেন মুঠোফোনেই পাচ্ছিলেন ৮৩ বছরের অবসর জীবন কাটানো চিত্তরঞ্জন সেন। তাঁর কথা যতই শুনছি, ততই মন্ত্রমুগ্ধের মতো মন ছুটে যেতে চাইলে হিজল-তমালের গাঁয়–। তাঁর কথা শুনতে গিয়ে দু’চোখের পাতা ভিজে ওঠে। এতো আবেগ চেপে রেখে ৮৩তে পা রাখলেন সেন বাবু। মনের কপাট খুলে লিখে পাঠালেন ‘সোনার বাংলা’ কবিতা। পড়ন্ত বয়সেও হাতের লেখায় কোন খাত নেই। বলছিলেন, জানানোতো, মা শব্দের সঙ্গে জড়িয়ে আছে টি। অর্থাৎ মা-টি। প্রথমে ‘মা’ পরে ‘টি’ মাটি। এই মাটিই আমাদের পরম আত্মীয়। আমাদের সবাইকে তার কাছে ফিরে যেতে হবে। এই মাটিই আমাদের সবচেয়ে আপন। আধ্যাত্মিক আবহে ভাসতে থাকেন সেন বাবু। বললেন, জানানো, যখন চোখের পাতা বন্ধ করি, তখন সব কিছু সেলিলয়েটের ফিতের মতো ভাসতে থাকে। আমার গাঁ, পাঠশালা, ফসলের মাঠ, আম-কাঠাল, বন্ধু-বান্ধব মিলে দূরন্তপনা, গা কাঁপানো সব কর্মকান্ড। বড় টানে গো সেই নির্ভেজাল মায়াবি গা আমার। তাঁর কাছে আর্শিবাদ চাইলাম, বললাম সময় করে এসে আপনার পদধূলি নেব।)