ঢাকা ১০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনুদান পেতে আবেদনের সময় বাড়ল, অনুদানের প্রস্তাব সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা ব্রিটিশ কাউন্সিল স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ড, চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার, যুক্তরাজ্যে ভ্রমণের সুযোগ তাইওয়ানে পড়াশোনা: খণ্ডকালীন চাকরি ও স্কলারশিপের সুযোগ ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, সঙ্গে দৈনিক ২০০ টাকা ভাতা ছদ্মবেশে ভারতে পালাতে গিয়ে আটক শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবু বাংলাদেশে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার ডিম-মুরগির দাম বেঁধে দিল সরকার শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৩ জনের চাকরি পূজোয় ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে যা বললো ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

চলনবিলে রসুনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ ২০২১ ২৩২ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রসুন হাতে কৃষকের হাসি: ছবি সংগ্রহ

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক

শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিল অঞ্চলের তাড়াশ উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন রসুনের ঘ্রাণ। এ বছর বিনা চাষে বোনা রসুনের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

উপজেলার চর হামকুড়িয়া, চর কুশাবাড়ী, নাদো সৈয়দপুর, ধামাইচ, সবুজপাড়া, বিন্নাবাড়ী, দিঘী সগুনা, কুন্দইল, ধামাইচ এলাকায় শত শত হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। মাঠে মাঠে রসুন তোলায় কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। পুরুষের পাশাপাশি রসুন তোলার কাজে হাত লাগিছেন নারীরাও।

চর হামকুড়িয়া গ্রামের রসুনচাষি আতাব আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিনা চাষে প্রায় চার বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করেছি। তারপরও বিঘাপ্রতি প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে আমার। তবে এবার যে ফলন হয়েছে, ন্যায্য দাম পেলে প্রায় লাখ টাকা আয় হবে।

নাদো সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক ইমান আলী আশা, আমরা বিনা চাষে রসুন আবাদ করেছি। তারপরও সার-কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি দিয়ে বিঘাপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে ব্যয় করেছেন তারা। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে রসুন বুনেছেন। বাম্পার ফলন হয়েছে। ন্যায্য দাম পেলে লাভ হবে ভালো।

একই কথা জানান, নওগাঁ ইউনিয়নের মহিষলুটি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম। জানালেন, গত বছর তারা প্রতিমণ রসুন বিক্রি করেছেন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। এবারও সেই দাম থাকলে লোকসান গুণতে হবে না। কথা হয় দিঘীসগুনা গ্রামের কৃষক আলম, শহীদুল ও মাগুরা বিনোদ গ্রামের ওসমান আলী, নবি উদ্দিন, রিয়াজ মিস্ত্রি, শাহজামাল খান, দবির আলীসহ অনেকের সঙ্গে।

জানালেন অঞ্চলের চাষিরা প্রতি বছরই বিনা চাষে রসুন আবাদ করেন। ধানের আবাদে লাভ কম হওয়ায়, রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এলাকার চাষিরা। বিনা চাষে বোনা হলেও সার-কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরিসহ আনুষঙ্গিক খরচ এবার বেড়েছে। যদি বাজারমূল্য কম হয় তাহলে লোকসান গুণতে হবে তাদের।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, শীতের শুরুতে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের ভেজা মাটি রসুন চাষের জন্য উপযোগী। দিনে দিনে চলনবিল অঞ্চলে বিনা চাষে রসুনের আবাদ কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খরচ কম, ফলন ভালো ও লাভের পরিমাণও বেশি, তাই তারা রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তারা।

শুধুমাত্র তাড়াশেই প্রতি বছর সাড়ে ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়। বিনা চাষে রসুন আবাদ করলেও সার-বীজ-কীটনাশক দিয়ে বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। হেক্টর প্রতি প্রায় ৭.৫ টন রসুন উৎপাদন হয়।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, গত বছর তাড়াশে ৪৪০ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। এ বছর আমরা ৪৪০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম। লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে উপজেলায় ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। বাজার মূল্যেও বেশি। আশাকরছি, আরও দাম বাড়বে। এসব রসুন দেশের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করবে।

জেলা কৃষিক সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ জানান, শীতে আদ্র মাটিতে কোনো ধরনের চাষ না দিয়ে সার ছিটানোর পর রসুন বোনেন চাষিরা। এরপর খড় বা নাড়া দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এতে রসুনের ফলন ভালো হয়। চাষের বাড়তি খরচও তেমন লাগে না।

জেলায় এবার ১ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। যার অধিকাংশই চলনবিল অঞ্চলে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি রসুনের চাষ করা হয়েছে তাড়াশে। ইতোমধ্যে ৩৫১ হেক্টর জমির রসুন কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। যার উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি গড়ে ৭.২ টন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

চলনবিলে রসুনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট সময় : ১১:৪৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ ২০২১

রসুন হাতে কৃষকের হাসি: ছবি সংগ্রহ

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক

শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিল অঞ্চলের তাড়াশ উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন রসুনের ঘ্রাণ। এ বছর বিনা চাষে বোনা রসুনের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

উপজেলার চর হামকুড়িয়া, চর কুশাবাড়ী, নাদো সৈয়দপুর, ধামাইচ, সবুজপাড়া, বিন্নাবাড়ী, দিঘী সগুনা, কুন্দইল, ধামাইচ এলাকায় শত শত হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। মাঠে মাঠে রসুন তোলায় কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। পুরুষের পাশাপাশি রসুন তোলার কাজে হাত লাগিছেন নারীরাও।

চর হামকুড়িয়া গ্রামের রসুনচাষি আতাব আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিনা চাষে প্রায় চার বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করেছি। তারপরও বিঘাপ্রতি প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে আমার। তবে এবার যে ফলন হয়েছে, ন্যায্য দাম পেলে প্রায় লাখ টাকা আয় হবে।

নাদো সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক ইমান আলী আশা, আমরা বিনা চাষে রসুন আবাদ করেছি। তারপরও সার-কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি দিয়ে বিঘাপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে ব্যয় করেছেন তারা। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে রসুন বুনেছেন। বাম্পার ফলন হয়েছে। ন্যায্য দাম পেলে লাভ হবে ভালো।

একই কথা জানান, নওগাঁ ইউনিয়নের মহিষলুটি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম। জানালেন, গত বছর তারা প্রতিমণ রসুন বিক্রি করেছেন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। এবারও সেই দাম থাকলে লোকসান গুণতে হবে না। কথা হয় দিঘীসগুনা গ্রামের কৃষক আলম, শহীদুল ও মাগুরা বিনোদ গ্রামের ওসমান আলী, নবি উদ্দিন, রিয়াজ মিস্ত্রি, শাহজামাল খান, দবির আলীসহ অনেকের সঙ্গে।

জানালেন অঞ্চলের চাষিরা প্রতি বছরই বিনা চাষে রসুন আবাদ করেন। ধানের আবাদে লাভ কম হওয়ায়, রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এলাকার চাষিরা। বিনা চাষে বোনা হলেও সার-কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরিসহ আনুষঙ্গিক খরচ এবার বেড়েছে। যদি বাজারমূল্য কম হয় তাহলে লোকসান গুণতে হবে তাদের।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, শীতের শুরুতে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের ভেজা মাটি রসুন চাষের জন্য উপযোগী। দিনে দিনে চলনবিল অঞ্চলে বিনা চাষে রসুনের আবাদ কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খরচ কম, ফলন ভালো ও লাভের পরিমাণও বেশি, তাই তারা রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তারা।

শুধুমাত্র তাড়াশেই প্রতি বছর সাড়ে ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়। বিনা চাষে রসুন আবাদ করলেও সার-বীজ-কীটনাশক দিয়ে বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। হেক্টর প্রতি প্রায় ৭.৫ টন রসুন উৎপাদন হয়।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, গত বছর তাড়াশে ৪৪০ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। এ বছর আমরা ৪৪০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম। লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে উপজেলায় ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। বাজার মূল্যেও বেশি। আশাকরছি, আরও দাম বাড়বে। এসব রসুন দেশের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করবে।

জেলা কৃষিক সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ জানান, শীতে আদ্র মাটিতে কোনো ধরনের চাষ না দিয়ে সার ছিটানোর পর রসুন বোনেন চাষিরা। এরপর খড় বা নাড়া দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এতে রসুনের ফলন ভালো হয়। চাষের বাড়তি খরচও তেমন লাগে না।

জেলায় এবার ১ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। যার অধিকাংশই চলনবিল অঞ্চলে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি রসুনের চাষ করা হয়েছে তাড়াশে। ইতোমধ্যে ৩৫১ হেক্টর জমির রসুন কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। যার উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি গড়ে ৭.২ টন।