করোনা সংক্রমণের লাগাম টানতে শুক্রবার থেকে ১৪দিনের কঠোর লকডাউন চলছে। বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হওয়া মানুষ যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারলেই গুণতে
হচ্ছে জরিমানা। রাস্তায় মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপস্থিতি। রয়েছে তল্লাশি চৌকি। অভিযান পরিচালনায় রয়েছেন, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরাও।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, টানা দুই সপ্তাহের লকডাউন চলার পর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। তারপর শুরু হয় ঈদযাত্রা। বাস, ফেরি, লঞ্চসহ সমস্ত গণপরিবহণে উপচেপড়া মানুষ, গাদাগাদি করা ভীড় এবং সর্বত্রই স্বাস্থ্যবিধি উধাও। এর সঙ্গে যোগ হয় কোরবানির পশুর হাটের করোনাবান্ধব পরিবেশ। সবমিলিয়ে করোনা সংক্রমণের একটি অতি-অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। মাস্কপরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে মানুষের অসচেতনতা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আশংকা করা হচ্ছে ঈদের পরের ২-৩ সপ্তাহে দেশের করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে।
জুন মাস থেকেই বাংলাদেশে উর্ধমুখি সংক্রমণ শুরু হয়। যার ৮০ শতাংশই ডেল্টা ধরণের। বিশেষ করে সীমান্ত জেলাগুলোতে ব্যাপক রূপ নেয়। করোনার লাগাম টানতে ১ জুলাই থেকে ১৪ থেকে জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি করে সরকার।
এরই মধ্যে কোরবানির ঈদকে নামনে রেখে ১৫ জুলাই থেকে সাত দিনের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রকের তরফে জারি করা প্রজ্ঞাপনে তখনই বার্তা দেওয়া হয়েছিলো, ২৩ জুলাই থেকে ফের ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় হাটবে দেশ।
ঈদের মধ্যে যারা ঢাকা ছেড়ে গিয়েছেন, তাদের মধ্যে যারা ফিরে আসতে পারেননি, তাদের যথাস্থানে অবস্থানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ও এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্ট দেগিয়েছে। প্রতিটি চেকপোস্টে যানবাহনের গন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা
রক্ষা বাহিনী কিংবা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থাপন করতে পারলেই যাবার অনুমতি মিলছে। তা নাহলে মামলা বা জরিমানা মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
ঢাকার কাঁটাবন মোড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভির শামিম বলেন, ঈদের পর কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে রাজধানী থেকে বের হয়ে যাওয়ার প্রবণতা লোকজনের মধ্যে কম দেখা গেছে।
অপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল আলম বলেন, জরিমানা করা তাদের উদ্দেশ্যে নয়। তবে লকডাউনে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করলেই তাদের জরিমানা এবং মামলার আওতায় আনা হবে।
আগের তুলনায় এবারে বিধিনিষেধের সময়ে কাঁচবাজারগুলোতে প্রায় অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের মাস্ক ব্যবহার করতে গিয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকেই সচেতনতার অংশ হিসেবে নিজেদের মানুষদের মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহ যোগাচ্ছেন।
বড় রাস্তার পাশে কাঁচারবাজার সরিয়ে আনা হয়েছে। মালিবাগ কাঁচাবাজার এলাকায় দায়িত্বপালন করছেন, এমন একজন পুলিশ আধিকারীক জানান, ক্রেতাদের কথা বিবেচনা করে খোলামেলা জায়গায় দোকান সরিয়ে আনা হয়েছে। এখানে স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা করতে পারবেন ক্রেতারা।