ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘর থেকে কেউ বের হতে পারে না, ১ জুলাই থেকে ৭ দিন কঠোর নিষেধাজ্ঞা 

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:০৯:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুন ২০২১ ১৯৯ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের লাগাম চানতে  ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে  যাচ্ছে সরকার। এ সময় জরুরী প্রয়োজন ছাড়া  কেউ ঘরের বাইরে  যেতে পারবে না। প্রয়োজনে  নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ  আরও  এক সপ্তাহ বাড়তে পারে।

এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারবে না এবং অতীতের মত কোন মুভমেন্ট পাসও এবার থাকছে না। এই কঠোর বিধিনিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে পুলিশ, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন পুলিশ ছাড়াও সেনাবাহিনী টহলে থাকবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে তাদের কর্তৃত্ব দেয়া থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আজ বিকেলে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ৭ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত আমরা খুব কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি।’
তিনি এটাকে এক ধরণের কঠোর নিষেধাজ্ঞা হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘এবার মুভমেন্ট পাস থাকবে না।

কেউ বাইরে বের হতে পারবে না। যারা জরুরি কাজের সঙ্গে জড়িত তারা চলাচল করবে। ’  তিনি বলেন, ‘যেখানে যেখানে আইসোলেটেড করে দিয়েছি, মুভমেন্ট রেস্ট্রিকটেড করে দিচ্ছি, সেখানে সেখানে ইম্প্রুভ করেছে। সরকার যদি মনে করে আরও সাতদিন যেতে হবে, সেটাও বিবেচনায় আছে।’

কঠোর বিধিনিষেধের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলেও জানান তিনি। বাস্তবায়ন কৌশল কী হবে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত পরশুদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সবাই বসেছি। মঙ্গলবার না হলেও পরশু  ফের  বৈঠকে বসবেন তারা।

লকডাউন বা কঠোর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সচিব বলেন, চারটি জেলার সঙ্গে আমরা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখেছি। সেখানে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ডিআইজি, এসপি, সিভিল সার্জন, পরিচালক, জনপ্রতিনিধি, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান সবাই ছিলেন।

সংক্রমণ এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবারই বক্তব্য এবং সেখানে যে তথ্যচিত্র উপস্থাপিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, দেশের একটা বড় অংশ অরেঞ্জ, রেড বা ব্রাউন হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং, এখন আমোদের বিধিনিষেধ আরোপ করা ছাড়া উপায় নেই।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘কিছু বাস্তব কারণের জন্য আমরা ৩০ জুন পর্যন্ত (কঠোর বিধিনিষেধ) করতে পারছি না। সেজন্য ১ তারিখ থেকে স্ট্রিক্ট রেস্ট্রিকশনে যাচ্ছি আমরা।

সচিব বলেন, ‘সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ সবাই টহলে থাকবে। তাদেরকে যতটুকু সময় যা দরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অথরিটি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যাতে কোনোভাবেই মানুষ গণহারে লকডাউন ব্রেক করতে না পারে। সেটা তারা মনিটরিং করবে।’

লকডাউনে দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীকে পরিস্কারভাবে নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে- সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় যথাসম্ভব গতবছর যেভাবে করা হয়েছি, সেভাবে একটা কর্মসুচি গ্রহন করার জন্য বলা হয়েছে। বিশেষ করে শহর এলাকায় সমস্যা হয়, সেদিকে নজর দিয়ে যাতে তাদের যথাযথভাবে সাহায্য করা যায়।’

রিকসা কিংবা শিল্পকারখানা খোলা থাকবে কিনা- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আরেকটু আলোচনা করে কালকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আদেশ দেয়া হবে।

বিধিনিষেধ ৭ জুলাইয়ের পর বাড়বে কি-না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যেসব এলাকায় যেমন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্ট্রিকলি ব্লক করে দেয়াতে করোনা সংক্রমণ অনেক কমে গেছে। সাতক্ষীরাতে ইম্প্রুভ করেছে। যেখানে যেখানে আইসোলেটেড করা হয়েছে, মুভমেন্ট রেস্ট্রিকটেড করা হয়েছে, সেখানে সেখানে ইম্প্রুভ করেছে। সরকার যদি মনে করে আরও সাতদিন যেতে হবে, সেটাও বিবেচনায় আছে।’

সচিব লকডাউন এবং নিষেধাজ্ঞা’র মধ্যে পার্থক্য করতে গিয়ে বলেন, লকডাউনে সবকিছু সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হয়। আপনিতো সবকিছু সম্পূর্ণ বন্ধ করতে পারবেন না। তাই, মিনিমাম নিষেধাজ্ঞা। তবে, দেখা যাক আগামী কালের বৈঠকে একে কি নাম দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ঘর থেকে কেউ বের হতে পারে না, ১ জুলাই থেকে ৭ দিন কঠোর নিষেধাজ্ঞা 

আপডেট সময় : ১০:০৯:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুন ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের লাগাম চানতে  ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে  যাচ্ছে সরকার। এ সময় জরুরী প্রয়োজন ছাড়া  কেউ ঘরের বাইরে  যেতে পারবে না। প্রয়োজনে  নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ  আরও  এক সপ্তাহ বাড়তে পারে।

এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারবে না এবং অতীতের মত কোন মুভমেন্ট পাসও এবার থাকছে না। এই কঠোর বিধিনিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে পুলিশ, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন পুলিশ ছাড়াও সেনাবাহিনী টহলে থাকবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে তাদের কর্তৃত্ব দেয়া থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আজ বিকেলে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ৭ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত আমরা খুব কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি।’
তিনি এটাকে এক ধরণের কঠোর নিষেধাজ্ঞা হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘এবার মুভমেন্ট পাস থাকবে না।

কেউ বাইরে বের হতে পারবে না। যারা জরুরি কাজের সঙ্গে জড়িত তারা চলাচল করবে। ’  তিনি বলেন, ‘যেখানে যেখানে আইসোলেটেড করে দিয়েছি, মুভমেন্ট রেস্ট্রিকটেড করে দিচ্ছি, সেখানে সেখানে ইম্প্রুভ করেছে। সরকার যদি মনে করে আরও সাতদিন যেতে হবে, সেটাও বিবেচনায় আছে।’

কঠোর বিধিনিষেধের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলেও জানান তিনি। বাস্তবায়ন কৌশল কী হবে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত পরশুদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সবাই বসেছি। মঙ্গলবার না হলেও পরশু  ফের  বৈঠকে বসবেন তারা।

লকডাউন বা কঠোর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সচিব বলেন, চারটি জেলার সঙ্গে আমরা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখেছি। সেখানে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ডিআইজি, এসপি, সিভিল সার্জন, পরিচালক, জনপ্রতিনিধি, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান সবাই ছিলেন।

সংক্রমণ এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবারই বক্তব্য এবং সেখানে যে তথ্যচিত্র উপস্থাপিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, দেশের একটা বড় অংশ অরেঞ্জ, রেড বা ব্রাউন হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং, এখন আমোদের বিধিনিষেধ আরোপ করা ছাড়া উপায় নেই।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘কিছু বাস্তব কারণের জন্য আমরা ৩০ জুন পর্যন্ত (কঠোর বিধিনিষেধ) করতে পারছি না। সেজন্য ১ তারিখ থেকে স্ট্রিক্ট রেস্ট্রিকশনে যাচ্ছি আমরা।

সচিব বলেন, ‘সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ সবাই টহলে থাকবে। তাদেরকে যতটুকু সময় যা দরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অথরিটি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যাতে কোনোভাবেই মানুষ গণহারে লকডাউন ব্রেক করতে না পারে। সেটা তারা মনিটরিং করবে।’

লকডাউনে দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীকে পরিস্কারভাবে নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে- সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় যথাসম্ভব গতবছর যেভাবে করা হয়েছি, সেভাবে একটা কর্মসুচি গ্রহন করার জন্য বলা হয়েছে। বিশেষ করে শহর এলাকায় সমস্যা হয়, সেদিকে নজর দিয়ে যাতে তাদের যথাযথভাবে সাহায্য করা যায়।’

রিকসা কিংবা শিল্পকারখানা খোলা থাকবে কিনা- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আরেকটু আলোচনা করে কালকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আদেশ দেয়া হবে।

বিধিনিষেধ ৭ জুলাইয়ের পর বাড়বে কি-না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যেসব এলাকায় যেমন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্ট্রিকলি ব্লক করে দেয়াতে করোনা সংক্রমণ অনেক কমে গেছে। সাতক্ষীরাতে ইম্প্রুভ করেছে। যেখানে যেখানে আইসোলেটেড করা হয়েছে, মুভমেন্ট রেস্ট্রিকটেড করা হয়েছে, সেখানে সেখানে ইম্প্রুভ করেছে। সরকার যদি মনে করে আরও সাতদিন যেতে হবে, সেটাও বিবেচনায় আছে।’

সচিব লকডাউন এবং নিষেধাজ্ঞা’র মধ্যে পার্থক্য করতে গিয়ে বলেন, লকডাউনে সবকিছু সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হয়। আপনিতো সবকিছু সম্পূর্ণ বন্ধ করতে পারবেন না। তাই, মিনিমাম নিষেধাজ্ঞা। তবে, দেখা যাক আগামী কালের বৈঠকে একে কি নাম দেওয়া হয়।