ঢাকা ০৫:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণহত্যায় ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে ঢাকায় পাক দূতাবাস ঘেরাও

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০১:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ৪৬৮ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভযেস ডিজিটাল ডেস্ক

একাত্তরে পাক দানাদার বাহিনী বাঙলাদেশে হত্যা, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ এবং নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। ৪৯ বছর আগে বর্বর পাকবাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা ও বিজয়ের দু’দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিষয়টি ভুলে যায়নি। সেই অপরাধের জন্য পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সোচ্চার বাংলাদেশের মানুষ। একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যার দায় কবুল করে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সমাবেশ হয়েছে।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত  সমাবেশে যোগ দিয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, পাকিস্তানকে অবিলম্বে গণহত্যার দায় স্বীকার করে বাংলাদেশের কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তান দূতাবাস এখনো ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। পাকিস্তান দূতাবাসের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান এই সাবেক বিচারপতি।

সমাবেশে  ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, পাকিস্তানকে একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের অপরাধে দ্রুত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবো। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা এদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে  দেবো।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যা দিয়ে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পূর্ব পর্যন্ত ত্রিশ লক্ষ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাকিস্তানী বাহিনী।  হানাদার বাহিনী দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রমের  লুটে নিয়েছিলো। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তানী দোসররা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। লাল-সবুজের পতাকা আবারও খামচে ধরতে চায় পুরনো শকুনেরা।

১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা করেছিলো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। প্রতিথযশা লেখক, কবি, সাহিত্যক, চিকিৎসক, শিক্ষক, বিজ্ঞানীদেরকে রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যেয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। পাকিস্তানি জান্তারা যখন বুঝতে পেরেছিল যে, তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজিত হতে যাচ্ছে ঠিক তখনই জাতিকে মেধা শূন্য করার জন্য এদেশীয় রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের সহযোগিতায় হত্যা করেছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের।

সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় সর্বকালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুরের মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে আঘাত দিয়েছে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক অপশক্তি পাকিস্তানের দোসর মামুনুল-ফয়জুল গংরা।

সমাবেশ শেষে পাকিস্তান দূতাবাস অভিমুখে যাওয়ার মিছিলটিকে শাহবাগে আটকে দেয় পুলিশ।  সেখান থেকে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, ভাস্কর শিল্পী রাশা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন, আইন বিষয়ক সম্পাদক এজেডইউ প্রিন্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদসহ  ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে পাকিস্তান দূতাবাসে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত স্মারকলিপি গ্রহণ করেন ডিপ্লোমেটিক পুলিশের  ডেপুটি কমিশনার (ডিসি)  আশরাফুল ইসলাম।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গণহত্যায় ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে ঢাকায় পাক দূতাবাস ঘেরাও

আপডেট সময় : ০৫:০১:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০

ভযেস ডিজিটাল ডেস্ক

একাত্তরে পাক দানাদার বাহিনী বাঙলাদেশে হত্যা, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ এবং নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। ৪৯ বছর আগে বর্বর পাকবাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা ও বিজয়ের দু’দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিষয়টি ভুলে যায়নি। সেই অপরাধের জন্য পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সোচ্চার বাংলাদেশের মানুষ। একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যার দায় কবুল করে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সমাবেশ হয়েছে।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত  সমাবেশে যোগ দিয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, পাকিস্তানকে অবিলম্বে গণহত্যার দায় স্বীকার করে বাংলাদেশের কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তান দূতাবাস এখনো ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। পাকিস্তান দূতাবাসের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান এই সাবেক বিচারপতি।

সমাবেশে  ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, পাকিস্তানকে একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের অপরাধে দ্রুত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবো। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা এদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে  দেবো।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যা দিয়ে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পূর্ব পর্যন্ত ত্রিশ লক্ষ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাকিস্তানী বাহিনী।  হানাদার বাহিনী দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রমের  লুটে নিয়েছিলো। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তানী দোসররা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। লাল-সবুজের পতাকা আবারও খামচে ধরতে চায় পুরনো শকুনেরা।

১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা করেছিলো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। প্রতিথযশা লেখক, কবি, সাহিত্যক, চিকিৎসক, শিক্ষক, বিজ্ঞানীদেরকে রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যেয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। পাকিস্তানি জান্তারা যখন বুঝতে পেরেছিল যে, তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজিত হতে যাচ্ছে ঠিক তখনই জাতিকে মেধা শূন্য করার জন্য এদেশীয় রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের সহযোগিতায় হত্যা করেছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের।

সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় সর্বকালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুরের মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে আঘাত দিয়েছে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক অপশক্তি পাকিস্তানের দোসর মামুনুল-ফয়জুল গংরা।

সমাবেশ শেষে পাকিস্তান দূতাবাস অভিমুখে যাওয়ার মিছিলটিকে শাহবাগে আটকে দেয় পুলিশ।  সেখান থেকে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, ভাস্কর শিল্পী রাশা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন, আইন বিষয়ক সম্পাদক এজেডইউ প্রিন্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদসহ  ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে পাকিস্তান দূতাবাসে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত স্মারকলিপি গ্রহণ করেন ডিপ্লোমেটিক পুলিশের  ডেপুটি কমিশনার (ডিসি)  আশরাফুল ইসলাম।